সমন্বয় সভায় সিইসি

জাতীয় নির্বাচনি প্রস্তুতি রোডম্যাপ বাস্তবায়নে পিছিয়ে পড়া যাবে না

প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরুর আর সাত মাস বাকি রয়েছে। এরই মধ্যে ভোটের পথে এগিয়ে যেতে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ ঘোষণার সাড়ে ছয় মাস পারও হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই যেন নির্বাচনি প্রস্তুতিতে পিছিয়ে না পড়ে ইসি সচিবালয় সে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)।

গতকাল সকালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পথে রোডম্যাপ বাস্তবায়নে ইসি সচিবালয়ের সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা। এসময় সিইসি এসব নির্দেশনা দেন।

মাসিক সমন্বয় সভা শেষে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, আজকে আমাদের মাসিক সমন্বয় ছিল। ইসির সচিবালয়ের সব কর্মকর্তাদের এবং আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে বসেছিলাম। সিইসি কাজের অগ্রগতির পাশাপাশি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। ভোটকে সামনে রেখে কোনোভাবেই যেন রোডম্যাপ বাস্তবায়নে পিছিয়ে না পড়ার নির্দেশও দেন সিইসি।

সচিব বলেন, নির্বাচনের আপ টু বটম, মালামাল ক্রয় থেকে শুরু করে ভোটকেন্দ্র স্থাপন পর্যন্ত সব বিষয়ে রোডম্যাপ অনুযায়ী সব কাজের নির্দেশনা দিয়েছেন সিইসি যেন ঘোষিত রোডম্যাপ থেকে আমরা পিছিয়ে না পড়ি। নির্বাচনের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায় থেকে আমরা জানতে চেয়েছি, ব্যালট বক্সগুলো কোথায় আছে, কিভাবে আছে, সেগুলোকে কিভাবে যাচাই করে তারা আমাদের রিপোর্ট দেবে এসব বিষয়।

আরপিও নিয়ে ইসি সচিব বলেন, ভোটের ফলাফল গেজেট প্রকাশের পর বাতিল করার ক্ষমতা নয়, বরং গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণ পেলে ফল প্রকাশের আগেই ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা রাখার সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) নির্বাচনি আইন সংস্কার নিয়ে ইসির একগুচ্ছ প্রস্তাবনার মধ্যে নিয়ে দুটি বিষয় সুস্পষ্ট করেন তিনি। মন্ত্রিসভা বৈঠকে গত মঙ্গলবার আরপিও সংশোধন সংক্রান্ত প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। তা আরও পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে ফের সভায় উঠবে।

ইসি সচিব আরো জানান, আরপিও সংশোধনের বিষয়ে অনেকেই ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, মিডিয়াতে দুটো বিষয়ে ভিন্ন রকম প্রতিবেদন এসেছে। একটি বিষয় হচ্ছে- যদি কোথাও গুরুতর অনিয়মের কারণে নির্বাচন স্থগিত করতে হয়, নির্বাচন কমিশন করতে পারেন, এটা আগে থেকে বলা আছে।

তিনি বলেন, এখন (সংশোধনী প্রস্তাবে) বলা হয়েছে, কোনো একটি ফলাফল তৈরির সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা বিরবরণীটা কমিশনে পাঠাবে; তখন যদি গুরুতর কোনো অনিয়ম হয়, তখন নির্বাচন কমিশন যথাযথ তদন্ত করবে। তদন্তে ফলাফল সঠিক হলে তা প্রকাশ করবে। অন্যথায় গুরুতর অপরাধে ফলাফল সঠিকভাবে প্রতিফলিত না হলে তখন তারা বাতিল করতে পারবেন। এখানে গেজেট প্রজ্ঞাপনের পরে বাতিল করা হবে- কথাটা কিন্তু তা না।

সচিব জানান, সংসদ নির্বাচনে এখন প্রতি জেলায় একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়, যিনি জেলা প্রশাসক বা অন্য কেউ হতে পারেন। এ রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলার আওতাধীন সব আসন তদারকি করেন। কিন্তু কোনো উপ-নির্বাচন হলে একটি আসনের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হয়। সেজন্য আইনে জেলা শব্দের পাশাপাশি সংসদীয় আসন যোগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা বিষয়ে সচিব জানান, এটাকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। প্রকৃত বিষয় হচ্ছে জেলা (ডিসট্রিক্ট) শব্দটির সঙ্গে অথবা আসন (কনস্টিটিউয়েন্সি) শব্দটি যোগ করা হয়েছে। অনেকের ক্ষেত্রেই আইনের ধারাটা না পড়েই ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে।

নীতিগত অনুমোদন বিষয়ে মো. জাহাংগীর আলম বলেন, স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, আরপিও সংশোধন নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়েছে। সেখানে ইসির প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। নীতিগত অনুমোদন বলতে যে প্রস্তাবনাগুলো আছে, সেগুলো আইন মন্ত্রণালয় আরো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখবে। তারপর পরবর্তী সভায় উত্থাপন করবে। কোনো অংশ বাতিল বা কোনোটা রাখা হবে সেটা কিন্তু নীতিগত অনুমোদনের সময় সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় না।