ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশ-ইইউ বৈঠক

পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার

পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার

ব্রাসেলস সফরের দ্বিতীয় দিনে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে নিয়ে তিনি ইউরোপিয়ান কমিশনের ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর ট্রেড এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর এমপ্লয়মন্টে, স্যোশাল অ্যাফেয়ার্স ও ইনক্লুশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাণিজ্য ও শ্রম সংক্রান্ত আলোচনাকালে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ইইউকে এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন সম্পর্কে অবহিত করে। এ সময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতা অব্যাহত ও জোরদার করার আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করে।

ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর এমপ্লয়মেন্ট জুস্ট কোর্তে উভয় পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক ইতিবাচক/গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাংলাদেশকে ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে। বৈঠককালে বাংলাদেশের শ্রম খাতে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অবস্থা উল্লেখ করে তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি রক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় কারখানার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, সবুজ কারখানাতে টেকসই উৎপাদন কৌশল, কারখানা পরিদর্শন, প্রযুক্তির ব্যবহার, আধুনিক মেশিনারির ব্যবহার ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতির বিষয়গুলো সম্পর্কে জুস্ট কোর্তেকে অবহিত করে।

ডিরেক্টরেট জেনারেল ট্রেডের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে, খসড়া জিএসপি লেজিসলেশন উপর ইইউ-এর চলমান নেগোশিয়েশন এবং ‘এভরিথিং বাট আর্মস’ বাণিজ্য সুবিধা থেকে জিএসপি+ এ বাংলাদেশের উত্তরণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ফর ট্রেড মারিয়া মার্টিন প্র্যাটের নেতৃত্বে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশকে বিভিন্ন সংস্কার অব্যাহত রাখতে উৎসাহিত করে এবং আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্য বিধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চলমান বাহ্যিক অস্থিরতা, খাদ্য ও জ্বালানি সংকট এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারে অস্থিরতার কারণে, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পর আরও ছয় বছরের জন্য ইন্টারন্যাশনার সাপোর্ট মেজারস (আইএসএম) অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান। স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পর একই সময়ের জন্য ইন্টারন্যাশনার সাপোর্ট মেজারস (আইএসএম) অব্যাহত রাখার জন্য এলডিসি গ্রুপের সাবমিশনের ক্ষেত্রে ডব্লিউটিওর নেগোশিয়েশনে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের জোরালো সমর্থনের জন্যও অনুরোধ করেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আলোচনাধীন নতুন জিএসপিতে বাংলাদেশের বাণিজ্য স্বার্থ, বিশেষ করে পোশাক খাতের সুরক্ষা প্রদানেরও অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। তাঁরা কোম্পানী এবং ব্র্যান্ডগুলোর পক্ষ থেকে ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণের উপর গুরুত্বারোপ করে প্রাসঙ্গিক কোম্পানীগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে কর্পোরেট সাসটেইনেবিলিটি ডিউ ডিলিজেন্সের আওতায় একটি মেকানিজম তৈরিরও অনুরোধ করেন। বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ইউরোপিয়ান কমিশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং ইইউ ট্রেড কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিস-এর হেড অব ক্যাবিনেট মাইকেল হেগার এর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সঙ্গে ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বেলজিয়াম ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ্, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) সভাপতি নিহাদ কবির, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের মহাসচিব ফারুক আহমেদ এবং ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত