প্রকল্প থেকে বাদ পড়ছে পরিত্যক্ত বাড়ি

মামলার বেড়াজালে গণপূর্তের তিন আবাসন প্রকল্প

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ফারুক আলম

সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসন সংকট নিরসনে পরিত্যক্ত ৭১ বাড়িতে সুউচ্চ ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। বর্তমানে সব পরিত্যক্ত বাড়িতে এই সংস্থা বহুতল ভবন নির্মাণ করতে পারছে না। ফলে বাধ্য হয়েই চট্টগ্রামের দুই প্রকল্প থেকে পরিত্যক্ত চার বাড়ি বাদ দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে ঢাকার পরিত্যক্ত ২০ বাড়ি, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চট্টগ্রামে ১৫ বাড়ি এবং ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৩৬ বাড়িতে বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় গণপূর্ত অধিদপ্তর। এসব পরিত্যক্ত বাড়িতে ২ হাজার ২২২টি ফ্ল্যাট ও ৬৪টি ডরমিটরি নির্মাণের কথা ছিল। এখন চট্টগ্রামে চলমান দুই প্রকল্প থেকে চারটি বাড়ি বাদ দেয়ায় ১৮২ ফ্ল্যাট নির্মাণ কমবে। এছাড়া ঢাকার ২০ বাড়ি প্রকল্পের ৮টি বাড়ি এবং চট্টগ্রামের ১৫ বাড়ি প্রকল্পের একটি বাড়িতে বহুতল ভবন নির্মাণ শেষে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, তিন প্রকল্পে ৭১ বাড়ির মধ্যে ১৮ বাড়িতে সরকারি প্রতিষ্ঠান, সরকারের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা ও শহিদ পরিবার বসবাস করছেন। পরিত্যক্ত বাড়িগুলো খালি না হওয়ায় পর্যন্ত চলমান প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করতে পারছে না গণপূর্ত।

পরিত্যক্ত বাড়ি উদ্ধারের বিষয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ‘দেশে আবাসন সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। পরিত্যক্ত বাড়িতে বহুতল ভবন নির্মাণ করে আবাসন সংকট নিরসন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম চলমান তিন প্রকল্পে পরিত্যক্ত ৭১টি বাড়ির মধ্যে বেশকিছু ভবন নির্মাণ করে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রকল্পের কাজে গতি বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কয়েকটি পরিত্যক্ত বাড়ি নিয়ে মামলা আছে, আশা করছি- এসব মামলা সরকারের পক্ষে রায় আসবে। আর কয়েকটি পরিত্যক্ত বাড়িতে যেহেতু আগেভাগেই সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে, সেজন্য এসব প্রতিষ্ঠানের নামে পরিত্যক্ত বাড়িগুলো বরাদ্দ দেয়ার সম্ভবনা রয়েছে।’

সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন আরো বলেন, ‘পরিত্যক্ত বাড়িতে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলমান। এখনো বেশকিছু বাড়ি খালি হয়নি, সেগুলো খালি হলে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। আবাসন সংকট নিরসনে আমরা আন্তরিক।’

প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা জানান, গণপূর্ত প্রকল্প হাতে নেয়ার পর পরিত্যক্ত বাড়িগুলো বুঝিয়ে পাওয়া নিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। জটিলতার পরেও ঢাকার ২০ বাড়ি প্রকল্পের ৩৯৮টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৬০টি ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়েছে। আর চট্টগ্রাম ১৫ বাড়ি প্রকল্পের ৪৮টি ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিত্যক্ত বাড়িগুলো বুঝিয়ে না পাওয়ায় বছরের পর বছর প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে। এসব বাড়ি বুঝিয়ে না পাওয়া পর্যন্ত প্রকল্প সমাপ্ত করা ঠিক হবে না। কারণ প্রকল্প সমাপ্ত করলেই পরিত্যক্ত বাড়িগুলো বেহাত হওয়ার সম্ভবনা থাকবে।

গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেল (ঢাকা) ও ২০ বাড়ি প্রকল্প পরিচালক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ‘পরিত্যক্ত বাড়ি উদ্ধারে কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকার মুখোমুখি পড়তে হচ্ছে। ক্ষমতার প্রভাবে অনেকে পরিত্যক্ত বাড়ি ছাড়তে চাচ্ছেন না। আবার অনেকে বাড়ির মালিক দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে মামলাগুলো চালানো হচ্ছে। এসব মামলা নিরসন করতে গিয়ে প্রকল্পের কাজের দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হচ্ছে। এরপরও চলমান প্রকল্পগুলোর কাজের অগ্রগতি ভালো। তিনি আরও বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে পরিত্যক্ত বাড়ি বুঝিয়ে পাওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নামে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিত্যক্ত বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। তাদের কাছে বাড়ি চাওয়া হলে, মামলার আশ্রয় নেন। শহিদ পরিবারের সদস্যদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দিয়ে মামলাগুলো নিষ্পত্তি করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গণপূর্ত আবাসন প্রকল্প নেয়ার আগেই পরিত্যক্ত বাড়ি সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রভাবশালীদের কব্জায় চলে যায়। ফলে এসব বাড়ি উদ্ধারে মামলায় লড়ছেন গণপূর্তের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বেশকিছু মামলা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এসেছে। আবার কিছু মামলায় দীর্ঘসূচিতা তৈরি হয়েছে। সেজন্য নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব কারণে পরিত্যক্ত ২০ বাড়ি প্রকল্পের মেয়াদ তিনবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় মোহাম্মদরপুর হুমায়ুন রোডের ৫/১১ ব্লক-বি নম্বর পরিত্যক্ত বাড়ি ধরা হয়েছে। কিন্তু বাড়িটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বসবাস করেন। তিনি শহিদ পরিবার দাবি করে মামলা করেছেন। মামলা চলমান। একই অবস্থা মোহাম্মদপুর গজনবী রোডের ৫/৪ নম্বর পরিত্যক্ত বাড়িটি। এখানে যিনি বসবাস করেন, তিনিও শহীদ পরিবার দাবি করে গণপূর্তের বিরুদ্ধে রিট করেছেন। ২০ বাড়ি প্রকল্পে ৩৯৮টি ফ্ল্যাট বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় ৩৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ছয় বছরে ৮টি ভবন হস্তান্তর সম্ভব হয়েছে। বাকি ৮টি ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান। আর চারটি পরিত্যক্ত বাড়ি বুঝে পায়নি কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। খোঁদ রাজধানীর পরিত্যক্ত বাড়িরগুলোর যখন এই অবস্থা, তখন চট্টগ্রামের পরিত্যক্ত ১৫ বাড়ি প্রকল্পের অবস্থা আরও খারাপ। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৭৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি, কাতালগঞ্জ, ওআর নিজাম রোড, জাকির হোসেন রোড এবং সার্সন রোডে ফ্ল্যাট ও ডরমেটরি নির্মাণে প্রকল্প হাতে নেয় গণপূর্ত অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ। এসব পরিত্যক্ত বাড়িতে ৫৭৬টি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ৬৪টি ডরমেটরি নির্মাণ করার কথা ছিল। যদিও ২০২১ সালের জুনে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। পরবর্তীতে ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরিত্যক্ত ১৫ বাড়ির মধ্যে ১১টিতে কাজ চলমান। সেগুলো হচ্ছে পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ১৫, ৫২, ৬৬, ৮৪, ৯৫, ১১৪, ১১৫, ১২৭ নম্বর, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি ২২/বি-১ নম্বর বাড়ি, নিজামউদ্দিন রোড ওআর ৯৩৮ নম্বর বাড়ি এবং কাতালগঞ্জের ৩৮ নম্বর বাড়ির কাজ শুরু করেছে। আর পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা পরিত্যক্ত ৪৯ নম্বর বাড়ি বর্তমানে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের আঞ্চলিক অফিস হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাড়িটি প্রকল্প হতে বাদ দিয়ে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের নিকট স্থায়ীভাবে বরাদ্দের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হতে অনুমোদিত হয়েছে। বাকী পরিত্যক্ত তিন বাড়ির সার্স রোডের ৩ নম্বর বাড়িটি জোনাল সেটেলম্যান্ট অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গত কয়েক বছরেও পরিত্যক্ত বাড়িটি চট্টগ্রাম গণপূর্ত বুঝে পায়নি। একই অবস্থা পাঁচলাইশের ৩২ নম্বর ও জাকির হোসেন রোডের পরিত্যক্ত ১০৩৩ নম্বর বাড়িটি। করোনা মহামারি ও বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও প্রকল্পের কাজ চলমান এমন মন্তব্য করে গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও পরিত্যক্ত ১৫ বাড়ি প্রকল্প পরিচালক মো. মইনুল ইসলাম আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও দীর্ঘদিন প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় সেটি উদ্ধার করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে পরিত্যক্ত ১৫ বাড়ির মধ্যে ১০টি বাড়িতে কাজ চলছে। ১টি বাড়িতে রিট মামলা থাকায় দীর্ঘদিন কাজ করা যায়নি। সেটির মামলায় সরকার পক্ষে রায় আসায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অবৈধ বসবাসকারীকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেখানে খুব শীঘ্রই নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বাকি ৪ বাড়ি বিভিন্ন কারণে বুঝে পাইনি। সেজন্য ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

করোনা মহামারি ও বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও প্রকল্পের কাজ চলমান এমন মন্তব্য করে গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও পরিত্যক্ত ১৫ বাড়ি প্রকল্প পরিচালক মো. মইনুল ইসলাম আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ‘পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও দীর্ঘদিন প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় সেটি উদ্ধার করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ১৫ বাড়ির মধ্যে ১০ বাড়ির কাজ চলমান, ১টি বাড়িতে রিট মামলা থাকায় দীর্ঘদিন কাজ করা যায়নি। সেটির মামলায় সরকার পক্ষে রায় আসায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অবৈধ বসবাসকারীকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেখানে খুব শীঘ্রই নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বাকি ৪ বাড়ি বিভিন্ন কারণে বুঝে পাইনি। সেজন্য ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘১৫ বাড়ি চলমান প্রকল্প ২০১৪ সালের শিডিউল অনুযায়ী টেন্ডার করা। ঠিকাদারদের সাইট বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব হওয়ায় নির্মাণ কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়। নির্মাণসামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির মধ্যেও ঠিকাদাররা চুক্তি মোতাবেক নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ১০টি বাড়ির মধ্যে একটি বাড়ি নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ায় হস্তান্তর করা হয়েছে। চলতি বছর জুনে ৩টি বাড়ি, সেপ্টেম্বরে ৩টি বাড়ি এবং ডিসেম্বরে ২টি বাড়িতে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হবে। বাকি একটি বাড়ির কাজ সম্প্রতি শুরু হয়েছে, সেটি আগামী বছর ডিসেম্বর নাগাদ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।’

‘চট্টগ্রামের ৩৬টি পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ প্রকল্পের অবস্থাও একই। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এই প্রকল্পের আওতায় নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি ৩ নম্বর রোডের ৬৩/এ-২ পরিত্যক্ত বাড়িটি উদ্ধার করে কাজ শুরু করেছিল গণপূর্ত অধিদপ্তর। কাজ শুরু করে ভবনের সার্ভিস পাইল ড্রাইভিংয়ের কাজসহ ১৫ শতাংশ শেষ করেছিল। কিন্তু বর্তমানে মহামান্য হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা জারির কারণে কাজটি বন্ধ আছে। কোর্ট অব সেটেলমেন্টের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রিট দাখিল করেছে গণপূর্ত। তবে নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ২ নম্বর রোডের ১৮/এ-২ এর পরিত্যক্ত বাড়িটি দখল বুঝিয়ে পাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ২ নম্বর রোডের ৬৬/এ-২ বাড়িটি সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা বোর্ড (এপিএমবি) ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের নামে স্থায়ী বরাদ্দের জন্য সুপারিশ করেছে। এছাড়াও খুলশীর ৫/বি-১ ও ৪৮/সি দুটি পরিত্যক্ত বাড়ি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এর নামে বরাদ্দ দেয়া হতে পারে। আরো কয়েকটি পরিত্যক্ত বাড়ি আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় কাজ শুরু করতে পারেনি গণপূর্ত অধিদপ্তর। মামলার পরও চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি আশারূপ হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

পরিত্যক্ত ৩৬টি বাড়িতে সরকারি কর্মকর্তাদের ১ হাজার ২৪৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণের কথা থাকলেও ৩টি বাড়ি প্রকল্প থেকে বাদ দেয়ার সম্ভবনা আছে। এ প্রকল্পের ১২৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণ কমবে। ১ হাজার ১৩১ কোটি ৮৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। পরবর্তীতে মেয়াদ বাড়িয়ে চলতি বছরের (২০২৩ সাল) জুন পর্যন্ত করা হয়। এতেও ভৌত অগ্রগতি সাড়ে ২২ শতাংশ হয়েেিছ। আরেক দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রস্তাব করা হয়েছে। চট্টগ্রাম গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। চিঠি চালাচালিতেই আটকে আছে বাড়ি উদ্ধারের কাজ। দফায় দফায় উদ্যোগ নিয়েও বাড়িগুলো খালি করা সম্ভব হয়নি।