ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাটকা নিধন বন্ধ হলে মানুষ সুস্বাদু ইলিশ পাবে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
জাটকা নিধন বন্ধ হলে মানুষ সুস্বাদু ইলিশ পাবে

জাটকা নিধন বন্ধ হলে দেশের মানুষ সুস্বাদু বড় ইলিশ খাওয়ার সুযোগ পাবে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। গতকাল শনিবার পিরোজপুরের হুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২৩-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, একটা মা ইলিশ ছয় লক্ষাধিক ডিম দেয়। কিছু দুর্বৃত্ত বালু উত্তোলন করতে গিয়ে ইলিশের প্রজননস্থলের পরিবেশ নষ্ট করে। নদীদূষণ করে ইলিশের ডিম ও পোনা নষ্ট করে। ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে যত্রতত্র মাছ আহরণ করে মা ইলিশ ও জাটকা নিধন করে। একটা মা ইলিশ ধরা মানে ছয় লাখ ডিম নষ্ট করা। জাটকা ধরা মানে ছোট ইলিশের বড় হওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেয়া।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে মাছের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। এখন বিশ্বের মোট ইলিশের শতকরা ৮০ ভাগ শুধু বাংলাদেশে উৎপাদন হয়।

মন্ত্রী আরো যোগ করেন, সরকারের লক্ষ্য দেশের প্রতিটি ঘরে সুস্বাদু ও সুদৃশ্য ইলিশ পৌঁছে দেয়া এবং উদ্বৃত্ত উৎপাদন হলে দেশের বাইরে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা।

শ ম রেজাউল করিম আরো যোগ করেন, দেশে মাছের উৎপাদন বাড়ার ফলে খাবারের জোগান বৃদ্ধি পাচ্ছে, পুষ্টি চাহিদা পূরণ হচ্ছে। মাছ চাষের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে, বেকারত্ব দূর হচ্ছে, গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে। মাছ উৎপাদন, পরিবহন, বিপণন ও রপ্তানির মাধ্যমে বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান হচ্ছে। অপরদিকে মাছ রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে যা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

মৎস্যজীবীদের উদ্দেশে মন্ত্রী আরো বলেন, জাটকা নিধন বন্ধ থাকাকালে মৎস্যজীবীদের ভিজিএফ দেয়া হচ্ছে, বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইলিশ বড় হতে দিতে হবে। বড় ইলিশ মৎস্যজীবীরাই আহরণ করবেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, নৌপুলিশের ডিআইজি মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন এস এম এনামুল হাসান, পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মো. জাহেদুর রহমান ও পুলিশ সুপার মো. সাঈদুর রহমান।

স্বাগত বক্তব্য দেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক। মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, পিরোজপুরের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে শেষে জাটকা রক্ষায় জনসচেতনতামূলক প্রচারণার অংশ হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর প্রতিনিধিসহ কয়েকহাজার জেলে ও মৎস্যজীবীদের সঙ্গে পিরোজপুরের হুলারহাট লঞ্চ ঘাট থেকে কচা নদীতে বর্ণাঢ্য নৌর‍্যালিতে অংশ নেন মন্ত্রী।

‘করলে জাটকা সংরক্ষণ, বাড়বে ইলিশের উৎপাদন’ প্রতিপাদ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ, ২০২৩। চলবে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত। জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে মৎস্য অধিদপ্তর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত