ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

টিসিবির কার্ড রূপান্তর হচ্ছে ‘স্মার্ট কার্ডে’

বললেন বাণিজ্যমন্ত্রী
টিসিবির কার্ড রূপান্তর হচ্ছে ‘স্মার্ট কার্ডে’

নিম্ন আয়ের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের লক্ষ্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির দেয়া ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডকে ‘স্মার্ট কার্ডে’ রূপান্তরের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল সোমবার রাজধানীর উত্তরায় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি আয়োজিত দেশব্যাপী ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে রমজান মাস উপলক্ষ্যে দ্বিতীয় পর্বের টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে উত্তরা এলাকায় টিসিবি পণ্যের অস্থায়ী সংরক্ষণাগারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, নারায়ণগঞ্জ এবং বরিশালে টিসিটির কার্ড ‘স্মার্ট কার্ডে’ রূপান্তরের পাইলটিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। হাতে লেখা সব কার্ড কিউআর কোড সংবলিত ‘স্মার্ট কার্ডে’ রূপান্তর করা হবে, যার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এসব কার্ড স্মার্ট কার্ডে পরিবর্তিত করলে অসঙ্গতিগুলো দূর করা সহজ হবে।’ টিপু মুনশি বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, করোনা মহাসংকটের পরপরই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে সারা বিশ্বে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরিব মানুষদের মাঝে কম মূল্যে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নতসহ অনেক দেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের বেশি ক্রেতাদের দেয়া হচ্ছে না।’ বিশ্ববাজার বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিসিবির মাধ্যমে দেশের ১ কোটি পরিবারের মাঝে স্বল্প মূল্যে পণ্য সরবরাহ করছে। প্রতি মাসে একবার দিলেও পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে দ্বিতীয় বার দেওয়া হচ্ছে এবং আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে বিতরণ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে, তাদের দুঃখ কষ্ট অনুভব করেন। সেজন্যই তিনি ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী অর্থাৎ প্রতি পরিবারে গড়ে পাঁচজন সদস্য হলেও প্রায় ৫ কোটি মানুষ- এই সুবিধার আওতায় নিয়ে এসেছেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ মানুষকে সাশ্রয়ী দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্ত প্রধানমন্ত্রী তা ১ কোটি করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তা বাস্তবায়ন করছি।’ কার্ডধারীর সংখ্যা ১ কোটির বেশি করার চিন্তা সরকারের আছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন যে ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হয়েছে, এছাড়া কিছুসংখ্যক নিম্ন আয়ের মানুষের তালিকা, অর্থাৎ যারা বাদ পড়েছেন, আমাদের কাছে আসছে, তবে সংখ্যা খুব বেশি নয়। তারপরও আমরা বিশেষ বিবেচনায় বাদ পড়া মানুষকে পণ্য দিয়ে থাকি।’ পণ্য মজুতের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, আমাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে পণ্য মজুত আছে। বিগত কয়েক বছরের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে- এ বছর আমরা সরবরাহ ও বিতরণে শক্ত অবস্থানে আছি। কোনো একটি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলে সবাই প্রশ্ন তোলেন, অথচ মূল্য যখন কমে তখন কেউ আর কিছু বলেন না। সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসা করাও উচিত। এতে করে দায়িত্ব পালনে উৎসাহ পাওয়া যায়। পণ্যের মজুত পর্যাপ্ত এরপরেও বাজারে দাম কমছে না কেন, জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বাজারে সব পণ্যের মূল্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করে না। এ বিষয়ে একটা মিস কনসেপসন আছে যে, মূল্য বৃদ্ধি মানেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যুক্ত। ব্রয়লার মুরগি, মাংস এবং মাছসহ কিছু পণ্য অন্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। তারপরও আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি, যাতে দ্রব্যমূল্য মানুষের হাতের নাগালে রাখা সম্ভব হয়।’ টিসিবির সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারা দেশে টিসিবি পণ্যে সংরক্ষণের জন্য সংরক্ষণাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে উত্তরা এলাকায় আজকে এই সংরক্ষণাগারের উদ্বোধন করা হলো। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলে পণ্য মজুত করে কার্ডধারীদের হাতে পৌঁছে দেয়া সহজ হবে।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এছাড়া, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আফসার উদ্দিন খান প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত