এখনো মেলেনি আগুনের উৎস

* তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি * বিনা সুদে ঋণ চান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা * ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এএইচএম ফারুক

রাজধানীর গুলিস্তান ও পুরান ঢাকার মাঝামাঝি অবস্থান বঙ্গবাজারের। প্রতিবছর রোজায় ঈদমুখী ক্রেতা-পাইকারে জমজমাট থাকে বাজারটি। নানা রকম পোশাকের এই মার্কেটে এখন পোড়া কাপড়ের গন্ধ। অথচ- প্রতিদিনের মতো গত সোমবার রাতেও দোকান বন্ধ করে বাসায় গিয়েছিলেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পরদিন ভোর ৬টার দিকে হঠাৎ করেই ওই বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই আগুনে নিঃস্ব হয়ে যান কয়েক হাজার ব্যবসায়ী। যাদের বেশিরভাগই এখন খোলা আকাশের নিচেই অবস্থান করছেন। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ- পরিকল্পিতভাবে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

আদর্শ হকার্স মার্কেট, মহানগরী ও বঙ্গ গুলিস্তান- এই তিন অংশ মিলেই বঙ্গবাজার মার্কেট। প্রায় ২২ হাজার বর্গফুটের এই মার্কেটে ৫ হাজারের বেশি ছোট-বড় দোকান ছিল। তবে মঙ্গলবারের আগুনে এখানকার সব দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ফলে পুরো বঙ্গবাজার এলাকায় আগে যেখানে নতুন কাপড়ের ঘ্রাণ পাওয়া যেত, সেখানে এখন বাতাসে ভাসছে পোড়া গন্ধ।

গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আগুনে সবকিছুই পুড়ে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এ সময় পুড়ে ছাই হওয়া স্তূপের পাশেই বসে কান্না করতে দেখা যায় অনেককেই। আবার কাউকে কিছু পাওয়ার আশায় ছাইয়ের মধ্যেই হাতড়াতে দেখা যায়। তাদের একজন রায়হান আহমেদ। তিনি জানান, দীর্ঘদিন থেকেই বঙ্গবাজারে বাবার সঙ্গে ব্যবসা করে আসছিলেন। প্রতিদিনের মতো গত সোমবার রাতে দোকান বন্ধ করে তারা বাসায় ফেরেন। এরপর মঙ্গলবার সকালে আগুনের খবর পান। পরে দ্রুত বঙ্গবাজারে ছুটে আসলেও ভয়াবহ আগুনের হাত থেকে কিছুই রক্ষা করতে পারেননি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী রায়হান আহমেদ বলেন- আমাদের চোখের সামনেই আমাদের স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এটা কোনোভাবেই সহ্য করা যায় না। আমার দোকানে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল ছিল। মুহূর্তের মধ্যে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

মোজাম্মেল নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিজের দোকানটি পুড়তে দেখেছি। দোকান থেকে একটা সুতা পরিমাণ জিনিসও বের করতে পারি নাই। খুব অল্প সময়ের মধ্যে মার্কেটটি পুড়ে ছাই হয়।’ ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ড পরিকল্পিত হতে পারে বলেও সন্দেহ পোষণ করেন তিনি।

কেঁদে কেঁদে লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘অনেকদিন থেকে এই মার্কেটে ব্যবসা করছি। কিন্তু আগুনে পুড়ে সব ছাই হয়ে গেছে। আগে দোকানে আসলে নতুন কাপড়ের গন্ধ পাওয়া যেত। আজ পোড়া দোকানে এসে দাঁড়িয়ে আছি। এখন শুধু পোড়া গন্ধ ছাড়া আর কিছুই নেই। এখন আমি কি করব? কোথায় যাব?’

রায়হান-মোজাম্মেল-মিজানুরের মতো বঙ্গবাজারের কয়েক হাজার ব্যবসায়ীর অবস্থা এখন একই। কীভাবে বড় এই ধাক্কা সামলে উঠবেন- এমন অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ব্যবসায়ীদের মাথায়।

এদিকে, গতকাল বিকাল ৪টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্তও বঙ্গবাজারে লাগা আগুন নেভেনি। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নেভানোর জন্য কাজ করছিল। পুরোপুরি আগুন না নিভলে কাজ চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, বঙ্গবাজার মার্কেটের উত্তরে থাকা এনেক্সকো ভবন থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। ভবনটির ৫ ও ৬ তলায় আগুন আছে। আগুন নেভানোর জন্য পানি দিলেও পরে আবারও ধোঁয়া বের হচ্ছে।

এদিকে আগুনের উৎস খুঁজে পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, আগুনের প্রকৃত উৎস আমরা এখনো খুঁজে বের করতে পারিনি। মালামাল বের করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে এখনো কোথাও কোথাও আগুন জ্বলছে, ধোঁয়া হচ্ছে। পুরোপুরি নেভাতে না পারলেও আগুন সম্পর্ণরূপে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১২টায় বঙ্গবাজার এনেক্সকো ভবনের সামনে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে এখনো ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। আমাদের পানির স্বল্পতা রয়েছে। কাছাকাছি পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ার কারণেও আগুন নেভাতে দেরি হচ্ছে। তবে আমরা আশা করি, আজকের (গতকাল) মধ্যে আগুন পুরোপুরি নেভাতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ফায়ার ফাইটার রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি জায়গায় তারা অবস্থান করছে। ভবন থেকে মালামাল বের করতে তারা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে। সব মালামাল বের করতে পারলেই আমরা আগুন সম্পর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারব।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘একটি ভবনে ১০ হাজার লিটার পানি রিজার্ভ করার কথা সেখানে ৫ হাজার পাওয়া যাচ্ছে। তারা লাইসেন্স নিয়েছে ১০ হাজার লিটারের অথচ রিজার্ভ করছে ৫ হাজার। এজন্য আমাদের আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভবনগুলো অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এনেক্সকো টাওয়ারের বিভিন্ন পিলারে ফাটল ধরেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং রাজউকের অনুমতি ছাড়া ভবনগুলো পুনরায় ব্যবহার করা যাবে না।’

এদিকে, ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস। তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে। এছাড়া তদন্ত কমিটির বাকি চার সদস্যরা হলেন- ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা, সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহিন আলম, ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর অধীর চন্দ্র ও কমিটির সদস্য সচিব এবং ঢাকা জোন-১ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রশিদ। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এদিকে গতকাল বিকালে বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন- রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সিটি করপোরেশন আধুনিক ও নিরাপদ মার্কেট হতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সিটি করপোরেশন। বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের বিষয়ে সিটি করপোরেশন যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আরেকটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আগুনে কারো গাফিলতি ছিল কি না অথবা পরবর্তীতে আমাদের কী করণীয় সেই দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে। ভবিষ্যতে যাতে এমন বড় অগ্নিকাণ্ড না হয় সেক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের নির্দেশনা মেনে চলবেন বলেও যোগ করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, আসন্ন ঈদকে টার্গেট করে তারা বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়দের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মালামাল তুলেছিলেন। কিন্তু ভয়াবহ আগুনে সবকিছু ধংস হয়ে যায়।

ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করবেন কি না অথবা আপনারা অন্য কোনো চিন্তা ভাবনা করছেন কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটার সিদ্ধান্ত হবে। এটা সিটি করপোরেশন টেন্ডারও করেছিল। একজন কন্ট্রাক্টও করেছিল। তারপর ব্যবসায়ীদের অনুরোধে হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ দেন।

পানির সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসকে আমরা ঢেলে সাজাচ্ছি। পানির সরবরাহ না থাকলে ফায়ার সার্ভিস অসহায় হয়ে পড়ে। পানির ব্যবস্থা থাকার জন্য সিটি করপোরেশন ও রাজউক ব্যবস্থা নেবেন।

অপরদিকে বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যাপ্ত অনুদান দেবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

গতকাল সকালে নগরীর খিলগাঁও এলাকায় গোড়ান খেলার মাঠের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এ কথা জানান। শেখ তাপস বলেন, কোনো দুর্যোগ হলে প্রথম কাজ হলো উদ্ধার তৎপরতা। সেটি মঙ্গলবার সম্পন্ন হয়েছে। এখন আমরা মানবিক দিকগুলো বিবেচনা করে পরিপূর্ণভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের এবং বিনিয়োগকারীদের পাশে থাকব।

আমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে। আমরা তালিকা করে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করার পর সব ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পর্যাপ্তভাবে অনুদান দেবেন। যাতে তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। তারা যেন আবার এই ব্যবসায় নামতে পারেন। তাদের পুঁজি হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। সেই দিকটাই এখন আমাদের সবার অগ্রাধিকার।

বঙ্গবাজারে বহুতল ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও মামলার কারণে তা করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। মামলার কারণে সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এখন বিপর্যয়ের মধ্যে আছে। কিছুদিন সময় দিতে হবে।

এ অগ্নিকাণ্ড কোনো ধরনের পরিকল্পিত নাশকতা কি না সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, এখন পর্যন্ত এটি একটি দুর্ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। তারপরও এটি কোথা থেকে শুরু হয়েছে, কীভাবে শুরু হয়েছে- তা তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।

বিনা সুদে ঋণ চান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা

ব্যাংক ঋণ পরিশোধে সরকারের কাছে বিনা সুদে ঋণ সহায়তা চেয়েছেন বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি একই স্থানে পুনরায় ব্যবসা পরিচালনার ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজার মার্কেটের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এ আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা। পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ব্যবসায়ী দিদার মিয়া বলেন, আমার বাড়ির জমি দেখিয়ে ঈদের আগে ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। অন্যান্য মালের সঙ্গে আগুনে আমার তিনটি দোকানের মালামাল পুড়েছে, আমি এখন নিঃস্ব, পথের ফকির। ব্যাংকের কিস্তি যে দেব তার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই সরকারের কাছে ব্যাংক ঋণ পরিশোধের জন্য বিনা সুদে ঋণ সহায়তা চাচ্ছি। সেই সঙ্গে একই স্থানে প্রয়োজনে তাঁবু টাঙিয়ে পুনরায় দোকান বসানোর অনুমতি দেয়া হোক। যাতে করে যেসব ব্যবসায়ীর গুদামে কাপড় আছে তা দিয়ে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন।

১৯৯৭ সাল থেকে বঙ্গবাজারে ব্যবসা করে আসা জুয়েল হোসেন বলেন, জীবনের সবকিছু দোকানে বিনিয়োগ করেছি। সব পুড়ে ছাই, এখন চলব কীভাবে জানি না। জমি বন্দক রেখে ২৮ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। সেই টাকা দিতে না পারলে জেলে যেতে হবে। তাই সরকারের কাছে অনুরোধ বিনা সুদে ঋণ দেয়ার জন্য। ব্যবসায়ী নূর আলম বলেন, বঙ্গবাজার ও ইসলামপুর মার্কেট মিলে আমার চারটি দোকান রয়েছে। এখানে দুটি দোকান রয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে ৪৫ লাখ টাকার মালামাল কিনেছি। এর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ১১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। ঘরে চাল নেই, এখন ঋণের এক টাকা দেয়ার মতো অবস্থা নেই। সরকারের সহায়তা ছাড়া এখন আমাকে জেলে যেতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, বঙ্গবাজারের আগুনে ব্যবসায়ীদের দেড় হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। সরকারের কাছে আমরা সহায়তা চেয়েছি। সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। আশা করছি, ক্ষতিপূরণ পাব।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের আরো কয়েকটি মার্কেটে। সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে প্রায় ৫ হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।