ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশে জাতিংসঘের কার্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ

বাংলাদেশে জাতিংসঘের কার্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ

বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যালয়সমূহ তাদের ২০২২ সালের মূল প্রকল্প ও কর্মকাণ্ডগুলো নিয়ে একটি বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বছরব্যাপী, বাংলাদেশে জাতিসংঘ কান্ট্রিটিম এদেশের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অগ্রগতির সুরক্ষা ও প্রচারে জনগণ ও বাংলাদেশ সরকারকে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। ইউনাইটেড নেশন্স সাসটেইনেবল কো-অপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক (ইউএনএসডিসিএফ) ২০২২-২০২৬ বাস্তবায়নের প্রথম বছরে এদেশে পরিচালিত জাতিসংঘের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে লাখ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অর্জনে সহায়তার অগ্রগতির পাশাপাশি জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপর্যয় এবং রোহিঙ্গা মানবিক সংকটে সাড়া প্রদানের জন্য এদেশের প্রস্তুতি ও সাড়াপ্রদানে জাতিসংঘ কান্ট্রিটিম এবং মানবিক সাড়াপ্রদানকারী অংশীদাররা জোরদার সমর্থন করেছে। প্রতিবেদনটি উপস্থাপনের সময় বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, গোয়েন লুইস নিম্নলিখিত বিবৃতি দিয়েছেন : ২০২২ সালের চ্যালেঞ্জিং বৈশ্বিক পরিবেশ সত্ত্বেও, জাতিসংঘ এই দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, নীতিমালা জোরদার করার পাশাপাশি বেশ কতগুলো ধারাবাহিক উদ্যোগ ও সেবা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে অগ্রসরমান সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি, পানি, পয়োনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্য বিধি, শিক্ষা, শিশু সুরক্ষা, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতায় বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোর জন্য সহায়তা, নিরাপদ, বৈধ ও নিয়মিত অভিবাসন, সামাজিক সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রগুলো জোরদার করার প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য জাতিসংঘ এই দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, নীতিমালা জোরদার করার পাশাপাশি বেশ কতগুলো ধারাবাহিক উদ্যোগ ও সেবা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে অগ্রসরমান সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। ২০২২ সালের মে মাসে এদেশের সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চল গুরুতর আকস্মিক বন্যার কবলে পড়ে, যার ফলশ্রুতিতে ৭.২ মিলিয়ন মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয় এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে। উক্ত অঞ্চলে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় আনুমানিক ৭২২ মিলিয়ন ইউএস ডলারের অধিক। তাৎক্ষণিক জরুরি সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি আকস্মিক বন্যায় সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার লক্ষ্যে জাতিসংঘ কেন্দ্রীয় জরুরি সহায়তা তহবিল (সিইআরএফ) সর্বাধিক দুর্যোগ কবলিত জেলাগুলোয় ঝুঁকিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার বরাদ্দ করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে সার্বিকভাবে ২০.৪৫ মিলিয়ন ইউএস ডলারের তহবিল গঠন করে। পঞ্চম বছর, বাংলাদেশ মিয়ানমার হতে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদান অব্যাহত রেখেছে এবং ২০১৭ সালের আগস্ট মাস হতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য উদারভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য বাংলাদেশ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। ২০২২ সালে, রোহিঙ্গা সংক্রান্ত মানবিক সংকট মোকাবিলার লক্ষ্যে উক্ত বছরের শেষ নাগাদ যৌথ সহায়তা পরিকল্পনার (জেআরপি) আওতায় ৮৮১ মিলিয়ন ইউএস ডলারের একটি অগ্রাধিকারভিত্তিক আবেদনের ৫৯% প্রার্থিত তহবিল (৫২০.৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার) সংগৃহীত হয় এবং উক্ত তহবিলের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ মানবিক ও মৌলিক সেবাগুলো সফলভাবে প্রদান করা হয়। প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে জাতিসংঘের কাজের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদান করে যা, তিনটি অধ্যায় নিয়ে গঠিত। প্রথম অধ্যায়ে দেশের মূল অগ্রগতি এবং আঞ্চলিক প্রেক্ষাপট নিয়ে প্রতিবেদন করা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়টি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা ফ্রেমওয়ার্ক ২০২২-২০২৬ এর আলোকে এবং সরকার, সুশীল সমাজ এবং উন্নয়ন অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে অর্জিত জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর কাজের ফলাফলগুলো পরীক্ষা করা হয়েছে। এটি সরকারের সহযোগিতায় জলবায়ু-সম্পর্কিত দুর্যোগে জাতিসংঘের মানবিক সমর্থনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা মানবিক সংকটকেও তুলে ধরে। তৃতীয় অধ্যায়ে ২০২৩ সালের জন্য জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমের অগ্রাধিকারগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে। বার্ষিক প্রতিবেদনটি ৪ এপ্রিল ২০২৩ সালে বাংলাদেশে জাতিসংঘের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত