ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অনলাইনে শতভাগ, কমলাপুর ফাঁকা

ঈদযাত্রায় শুরু হলো বাস ও ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি

ঈদযাত্রায় শুরু হলো বাস ও ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি

ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গতকাল সকাল থেকে। তবে এবার ট্রেনের শতভাগ টিকিট বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে। আর যাত্রা শুরুর ১০ দিন আগে থেকে কেনা যাচ্ছে ট্রেনের টিকিট।

গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখা যায়, অধিকাংশ রুটের ট্রেনের টিকিট বিক্রি শেষ। বিশেষ করে যেসব রুটে টিকিটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, বিক্রি শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই সব টিকিট শেষ। এদিকে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলবে আগামী ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত আর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে পরের দিন ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত। ঈদে ফেরত যাত্রার টিকিট বিক্রি করা হবে ১৫ এপ্রিল থেকে। আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে বিশেষ সেবা চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)। ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত বিশেষ সেবার বাস চলবে। আগামীকাল থেকে সংশ্লিষ্ট ডিপোতে বিআরটিসি বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। রাজধানীর মতিঝিল, জোয়ারসাহারা, কল্যাণপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ বাস ডিপো (চাষাঢ়া) থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে।

অপরদিকে ঈদ উপলক্ষ্যে আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন ১৮ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ২০ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে আন্তঃদেশীয় বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন যথারীতি চলাচল করবে। তবে ঈদুল ফিতরের আন্ত নগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট (১৭ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত) শতভাগ অনলাইন বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ক্রয় করা যাবে। টিকিট ক্রয়ের জন্য রেলওয়ে টিকেটিং ওয়েব পোর্টাল, ‘রেল সেবা’ অ্যাপ বা যে কোনো মোবাইল থেকে এসএমএস করার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্ট/জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে নিবন্ধন করা যাবে।

প্রথমবারের মতো এবার ঈদে শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, ঈদের সময় কমলাপুরের যে পরিবেশ তৈরি হয়, এটা রেলের জন্য খুবই বিব্রতকর হয়। মানুষ দুইদিন কমলাপুরে থেকেও টিকিট পায় না। সব মানুষ টিকিট পাবে না। ঈদের সময় আমাদের সব অর্জন নষ্ট হয়ে যায়। তাই অনলাইনে শতভাগ টিকিট দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কমলাপুরে গিয়ে টিকিটের জন্য যাত্রীদের যেন ঘুরতে না হয় এবং তারা যেন বাসায় বসে টিকিট কাটতে পারে সেজন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এবার যদি কোনো ভুল-ত্রুটি হয় তবে সেটি আগামী ঈদে সংশোধন করা হবে।

এদিকে এবারের ঈদে টিকিটের জন্য নেই কোনো হাঁকডাক কমলাপুর রেলস্টেশনে। নেই মানুষের ভিড় কিংবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেনার তাড়া। টিকিট পেতে হাহাকার অথবা দালালের খপ্পরও যেন উধাও। কমলাপুর স্টেশনজুড়ে বিরাজ করছে নীরবতা। এ যেন এক ভিন্ন কমলাপুর রেলস্টেশন। এ রেল স্টেশনেই টিকিট বিক্রির দুই দিন আগে থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকত লাখো মানুষ। গত ঈদেও একটি টিকিট কিনতে দুই-তিন দিন একটানা অপেক্ষা করেছে অনেকেই। কেউ দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও টিকেট না পেয়ে ফিরেছে খালি হাতে। বেড়েছে আক্ষেপ-অপেক্ষা আর প্রিয়জনদের সঙ্গে মিলিত হবার উৎকণ্ঠাও। চিরচেনা সেই কমলাপুর আজ বদলেছে। অগ্রিম টিকিট বিক্রির কাউন্টার এবার একদম ফাঁকা। স্টেশনে কেবল নিয়মিত যাত্রীদের আনাগোনা।

রেল মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বছর ঈদযাত্রা ও ঈদের ফিরতি যাত্রার শতভাগ টিকিট অনলাইন মাধ্যমে বিক্রি হওয়ায় স্টেশনটি জনশূন্য হয়ে পড়েছে।

কমলাপুর স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, আজ বিক্রি করা হবে ১৮ এপ্রিলের টিকিট, আগামীকাল বিক্রি করা হবে ১৯ এপ্রিলের টিকিট, ১০ এপ্রিল বিক্রি করা হবে ২০ এপ্রিলের টিকিট ও ১১ এপ্রিল বিক্রি করা হবে ২১ এপ্রিলের টিকিট। প্রতিদিন বিক্রি করা হবে ২৫ হাজার ৭৭৮টি টিকিট।

রেলের টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা সহজ ডটকম প্রতি মিনিটে বিক্রি করতে সক্ষম ৮ হাজার টিকিট। একসঙ্গে ১০ লাখ লোক তাদের সাইটে প্রবেশ করতে পারবে বলেও জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে, ঈদের ফেরত যাত্রার টিকিট বিক্রি করা হবে ১৫ এপ্রিল থেকে। ১৫ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৫ এপ্রিলের, ১৬ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৬ এপ্রিলের, ১৭ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৭ এপ্রিলের, ১৮ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৮ এপ্রিলের, ১৯ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৯ এপ্রিলের ও ২০ এপ্রিল বিক্রি হবে ৩০ এপ্রিলের টিকিট।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত