ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সরকারকে সতর্ক হতে বললেন কাজী ফিরোজ রশীদ

সরকারকে সতর্ক হতে বললেন কাজী ফিরোজ রশীদ

সামনে বিপদ আসছে এমন মন্তব্য করে সরকারকে সতর্ক হতে বলেছেন বিরোধীদল জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৪৭ বিধিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবের উপর তৃতীয় দিনে আলোচনায় অংশ নিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ এ কথা জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, একটি বড় দল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে, তারা দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র করছে এ নির্বাচন নিয়ে। দৌড়ঝাঁপ কিন্তু শুরু হয়েছে, বিপদের শঙ্কা রয়েছে, তাই সাবধান হোন।

রাজনীতি আর দেশপ্রেমিক, ত্যাগীদের জন্য না মন্তব্য করে কাজী ফিরোজ বলেন, জীবনকে রাতারাতি বদলে দেয়ার একমাত্র পন্থা হচ্ছে রাজনীতি। এখন এটা পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে রাজনীতি নেশা ছিল। মানুষ জীবন বাজি রেখে রাজনীতি করত। এখন সেই নেশা নেই। এটা সবচেয়ে বড় পেশা। আগে দেখা যেত, পাত্র যদি রাজনীতি করে, তাহলে (পাত্রীপক্ষ) বিয়ে দিত না। কারণ, সে (পাত্র) কোনো চাকরি পাবে না, তাহলে সে খাওয়াবে কী? খাওয়াতে হলে পত্রিকা অফিসে চাকরি করতে হবে, না হলে বটতলার উকিল হতে হবে, না হয় মুদি দোকানদার হতে হবে অথবা এজিবির কেরানিগিরি। কার কাছে মেয়ে দেবে? কিন্তু এখন যদি শোনে পাত্র সরকারি দল করে, তাহলে বলে, আলহামদুলিল্লাহ। এর চেয়ে ভালো পাত্র আর হবে না। কারণ, সে কিছু করতে পারবে। বর্তমান সরকারের আমলে বিএনপির ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ব্যবসা পেয়েছেন বলে দাবি করেন জাপার এই সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ব্যবসা নেয়। আর পিছে থাকে বিএনপি।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের অনেক অর্জন এই সংসদে কিন্তু আপনাদের দুর্বলতাও তো আছে। আজ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি কমিশন গঠন করতে পারেননি। কারা জড়িত ছিলো জাতি তা জানতে চায়। কাজী ফিরোজ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে মারা ছিল একটা বিরাট ষড়যন্ত্র। কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা ডালিম, নুর, হুদা, ফারুক-রশিদ গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করল এটা শুধু নয়। এর পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল সেই ষড়যন্ত্র আপনারা কেন বের করলেন না। চরম বামপন্থি, দক্ষিণপন্থি তাদের নাম এখন উচ্চারণ করা যাবে না, কারণ তাদের নাম এখন নৌকায় উঠে চলে গেছে। নৌকায় উঠে বসে আছে তারা, ৯ মাস আছে নির্বাচনের, এর পরই পার করে দেবে আপনাদের, ৫ বছরের জন্য নিশ্চিন্ত। অনেকেই মুজিব কোর্ট পরে ১৪ দলীয় জোট করে নৌকায় উঠে বসে গেছে। আওয়ামী লীগের এই তো অবস্থা।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মতো এতো ক্ষমতাধর প্রধানমন্ত্রী আর কোনো দিন কোনো দেশে হয়েছে বলে অন্তত আমার জানা নেই। বঙ্গবন্ধু কিন্তু এক দিনে হননি। তিনি ঢাকা শহরে বসে নেতৃত্ব দেননি। সব বাংলাদেশ ঘুরে ঘুরে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু আজকে আমরা ঘরের বাইরে যাই না, একটা কাচের ঘরে বসে থাকি। আওয়ামী লীগের লোকরা সব চেয়ে বড় কোরবানির গরু কিনে গলায় মালা দিয়ে নিয়ে আসে, যে টাকার বস্তা দিতে পারে, তাকেই নমিনেশন দিলেই পাস করবে আলহামদুলিল্লাহ, তাকে নমিনেশন দেন আপনারা। ত্যাগি কর্মীদের আপনারা দিচ্ছেন না, এটা হলো আরেকটা বড় দুর্বলতা আপনাদের। মাঝে মাঝে বলা হয় এবার প্রত্যেকটা সিটে আর লাঙল দেব না সব নৌকা। এই ২৬টা সিট চান কেন, আপনাদের ৩০০ সাড়ে ৩০০ সিটিই তো দিয়ে দিয়েছি। আপনারা আমাদের এতো ভয় পান কেন, ভয়ের কোনো কারণ নেই, দরকার হয় সব সিট আমরা ছেড়ে দেব তবু আপনারা শন্তভাবে দেশ চালান।

সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই দেখলাম আমাদের পাশে থেকে বলল যে, আমাদের সংবিধানে একটা বড় সংশোধনী আনতে হবে, কি সংশোধনী বিসমিল্লাহ রাখা যাবে না। রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম রাখা যাবে না-সাংঘর্ষিক। আরে একটা সেটেল্ড ম্যাটার, মাত্র ৯ মাসে আর নির্বাচনের এই মুহূর্তে আরেকটা নতুন ইস্যু সৃষ্টি করে আপনাদের উদ্দেশ্যটা কি। আপনারা তো সহিসালামতে নৌকায় উঠে বসে আছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত