খাদ্যে ভেজালে ৫ বছর জেল মজুতে যাবজ্জীবন

আর্থিক লাভের আশায় সরকারের নির্ধারিত পরিমাণের বাইরে খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেবে সরকার। খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩-এর নতুন একটি আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিসভা কক্ষে এ বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই আইনে বাজারে অনিরাপদ বা ভেজাল খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করলে দুই বছর থেকে অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে। এই আইন কেউ লঙ্ঘন করলে তার শাস্তি হবে ভ্রাম্যমাণ এবং নিরাপদ খাদ্য আদালতে। অধিক মুনাফার আশায় খাদ্য মজুদ করলে শাস্তি হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

তিনি বলেন, খাদ্যদ্রব্যে অস্বাভাবিক কোনো কিছু মেশানো, কৃত্রিম সংকটের জন্য মজুত করা, বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কম দেয়া হলে সব অপরাধের জন্য একই রকম শাস্তি দেয়া হবে। এর আগে গত বছর ১৯ এপ্রিল এ আইনটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করলে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইনের খসড়াটি আগের দুটি আইনের সমন্বয় করে তৈরি করা হয়েছে। আইনে ২০টি ধারা রয়েছে।

মাহবুব হোসেন বলেন, কেউ যদি খাদ্যে ভেজাল করেন তাহলে এ আইনে দুই বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের কথা বলা হয়েছে। আইনের খসড়ার কয়েকটি ধারা উল্লেখ করে সচিব বলেন, কেউ আইন লঙ্ঘন করে খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে, খাদ্যদ্রব্য মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হবে। যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারলে সেক্ষেত্রে কারাদণ্ড কমে দুই বছর হবে।

এছাড়াও আইনে দানাদার খাদ্য উৎপাদন ও বিপণনে অনিয়ম করলে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির বিধানের কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, দানাদার খাদ্যদ্রব্য যেগুলো আছে, যেমন- ধান, চাল, গম, ভুট্টা এগুলোসহ কোনো উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে ভিন্ন নাম দিয়ে বিক্রি করলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড হবে। কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের বিতরণ সংক্রান্ত ভুল তথ্য দিলে দুই বছর কারাদণ্ড। এছাড়াও গতকাল বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড আইন-২০২৩ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর ফলে ডেইরি প্রোডাক্টের মানোন্নয়নে এই আইন কাজ করবে।