ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতের প্রস্তুতি

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতের প্রস্তুতি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজপথে শোডাউন করতে চায় স্বাধীনতাবিরোধী এ রাজনৈতিক দলটি। তবে দলটি প্রস্তুতি নিলেও নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় তাদের সতন্ত্র প্রার্থী অথবা অন্য দলের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে।

ইসি সূত্র জানায়, আইন অনুযায়ী জামায়াতের নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। তাদের কোনো অস্তিত নেই ইসিতে। এখন তারা অন্য দলের সঙ্গে মিশে সে দলের নামে এবং প্রতীক ব্যবহার করে প্রার্থী হতে হবে। অথবা সতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে।

এদিকে নিজেদের দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় একাদশ জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন করতে চায় ওই দলটি। এজন্য বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করতে গোপনে দর কষাকষি শুরু করেছে।

যুদ্ধাপরাধের বিচারে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ফাঁসি হওয়া ও নির্বাচন কমিশন থেকে দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পর মাঠের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন নীরব ছিল জামায়াত। কিন্তু সম্প্রতি বিএনপির নেতৃত্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি শুরুর পর জামায়াতও রাজপথে নেমে শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করে। তবে তারা পুলিশের অনুমতি না পেয়ে হঠাৎ রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় দলীয় কর্মসূচি পালনের নামে রাস্তায় নেমে ঝটিকা মিছিল করে গ্রেপ্তার এড়াতে দ্রুত পালিয়ে যায়। এভাবে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে মাঝে মাঝে দলটির নেতাকর্মীরা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়।

বিভিন্ন সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজপথে শোডাউন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। যে কোনো একটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে হঠাৎ রাজপথে নেমে বিশাল শোডাউন করে দলের শক্তি প্রদর্শন করতে চায় জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এজন্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গোপনে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে প্রস্তুতি জোরদার করছে তারা।

সূত্র জানায়, জামায়াত নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আদালতে একটি মামলা থাকলেও শেষ পর্যন্ত যাতে তাদের নিষিদ্ধ করা না হয় সে চেষ্টার অংশ হিসেবে সরকারি দলের সঙ্গেও তলে তলে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছে জামায়াত। আর এ বিষয়টিকে প্রকাশ্যে এনে বিএনপি নেতারা বলতে চাচ্ছে তাদের সঙ্গে এখন জামায়াতের সম্পর্ক নেই। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বিভিন্ন মাধ্যমে নিয়মিতই যোগাযোগ হচ্ছে। বিএনপির সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে এখন থেকেই আসন নিয়ে দর কষাকষি শুরু করেছে জামায়াত।

সম্প্রতি জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, জামায়াতকে রাজনীতি থেকে বঞ্চিত করার এখতিয়ার কারো নেই। তিনি বলেন, জামায়াত একটি নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। দেশের সংবিধান প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকেই তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার অধিকার দিয়েছে। এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করার এখতিয়ার কারো নেই।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েব আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, বর্তমান সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। সুতরাং গণতন্ত্র এবং মানুষের অধিকার রক্ষায় জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সরকার প্রয়োজন। এজন্য সব বিরোধীদলের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে একটি দলনিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা জরুরি; যার মাধ্যমে একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠিত হবে।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, বর্তমান জামায়াতে ইসলামীর নামে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের কোনো সুযোগ নেই। জামায়াতের নিবন্ধন কোর্টের আদেশে বাতিল করা হয়েছে। কেউ নিবন্ধিত হতে চাইলে তাকে নতুন করে নিবন্ধিত হতে হবে।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। এর পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত