ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

টানা পার্টির দৌরাত্ম্যে নিঃস্ব হচ্ছেন মানুষ

জামিনে বেরিয়ে ফের সক্রিয়
টানা পার্টির দৌরাত্ম্যে নিঃস্ব হচ্ছেন মানুষ

ঈদের আগে বিভিন্ন নামের ‘পার্টির’ দৌরাত্ম্যে সর্বশান্ত হচ্ছে মানুষ। রাজধানীর অলিতে গলিতে নিরিবিলি পরিবেশে কাউকে পেলে নানা অজুহাতে তার পথরোধ করে নানা নামের পার্টির সদস্যরা। অন্যের নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার জন্য একেক সময় একেক রকম অপকৌশল অবলম্বন করে ভিন্ন ভিন্ন নামে গড়ে উঠা চক্রের সদস্যরা। তাদের কর্মের সাথে ‘পার্টির’ নামকরণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এতে করে এই চক্রকে সহজে শনাক্ত করা সম্ভব হলেও তাদের দৌরাত্ম্য কমানোর তেমন কোনো সফলতা নেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীতে টানাপার্টি, মলমপার্টি, সালাম পার্টির সাথে আবির্ভাব হয়েছে পায়ে পাড়া দেয়া পার্টিও। এসব চক্রে সদস্যদের লাগাম টানতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। ঈদকে সামনে রেখে চক্রের সদস্যরা বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কখনো কখনো পথচারী ও যাত্রীদের বশ করে নিয়ে গিয়ে আটকিয়ে মুক্তপণ আদায়েরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাকা পয়সা আদায়ে চালানো হয় নির্যাতন। পুলিশ-র‍্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চক্রের সদস্যদের ধরতে মাঠে থাকলেও অভিযোগ থাকে না বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সালাম পার্টি ও পায়ে পাড়া দেয়া পার্টির সদস্যদের দেখলে মনে হবে কোনো করপোরেট অফিসে বড় পদে চাকরি করেন, অথবা কোনো বড় ব্যবসায়ী। বাচনভঙ্গি ও চালচলনে রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। এদের কেউ কেউ হঠাৎ সামনে হাজির হয়ে সালাম দেবে। এতে আপনি হয়তো থমকে দাঁড়াবেন, কৌতূহলী হবেন। আর এই সুযোগ নিয়েই তারা হাতিয়ে নেবে টাকাপয়সা ও মোবাইল ফোন। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত ‘সালাম পার্টি’র সদস্যরা। আবার একটি অংশ চলতি পথে পায়ে পাড়া দিয়ে চলাচলে বিগ্ন ঘটিয়ে সঙ্গে থাকা ব্যাগ, মোবাইল বা মালামাল ও টাকা পয়সা নিয়ে চম্পট দেয়। আবার কখনো কখনো পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে চক্রের সদস্যরা একত্রিত হয়ে হট্টোগোল পাকায়। এ সময় কেউ মারধর করে, কেউ প্রতিরোধ করার অভিনয় করে ভুক্তভোগীকে নিঃস্ব করে চলে যায়।

রাজধানীর পল্টন মডেল থানা এলাকার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে থেকে সম্প্রতি ‘সালাম পার্টি’ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পল্টন থানা-পুলিশ। জানা গেছে, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা সালাম দিয়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। এমন ভাব দেখায় যেন পূর্বপরিচিত। পরে কয়েকজন মিলে ঘিরে ধরে টাকা, মুঠোফোন ও মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত কেটে পড়েন।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানায়, এ চক্রের সদস্যরা উন্নত মানের শার্ট, প্যান্ট, জুতা, এমনকি শীতকালে কোট-টাই পরে ঘুরে বেড়ান। বিশেষ কায়দায় তারা চাকু, চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্র নিজেদের প্যান্ট বা কোটের পকেটে লুকিয়ে রাখেন; যা বাইরে থেকে দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই। ভদ্রলোকের বেশ ধরে তারা ২ থেকে ৩ ঘণ্টার জন্য রিকশা ভাড়া করে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে। বিশেষ করে ব্যাংক অথবা এটিএম বুথের পাশে অবস্থান নিয়ে থাকে। লক্ষ্য রাখে কে টাকা নিয়ে বের হচ্ছে। পরে ওই লোকের পিছু নেয় সালাম পার্টির সদস্যরা। মোবাইলে তাদের অপর সদস্যদেরও অবস্থান জানিয়ে দেয়। পিছু নেয়ার একপর্যায়ে সুবিধামতো জায়গায় রিকশা নিয়ে ঘোরাঘুরিকারীদের একজন সেই ব্যক্তির সামনে এসে সালাম দিয়ে বলে, ‘ভাই কেমন আছেন? আপনি অমুক না?’ এরই মধ্যে চক্রটির ছদ্মবেশী আরো কয়েকজন রিকশাটিকে ঘিরে ফেলে। নিজেরা নিজেদের গায়ে ধাক্কা দিয়ে তা না হলে অন্য কোনোভাবে আগে থেকে লক্ষ্য রাখা ব্যক্তির আশপাশে একটা জটলা তৈরি করে। এই সুযোগে অন্য সহযোগীরা পকেটে হাত ঢুকিয়ে যা পায় নিয়ে সটকে পড়ে। চক্রটি রাজধানীর শান্তিনগর, পল্টন ও কাকরাইল এলাকায় সক্রিয় বলেও জানায় পুলিশ।

সম্প্রতি কাওরানবাজার সার্ক ফোয়ারা মোড়ে সন্ধ্যার পর অফিস থেকে ঘরমুখো মানুষের ও যানবাহনের ভিড়। চার রাস্তার সবমুখেই প্রচণ্ড যানজট। ফার্মগেটের দিক থেকে কাওরানবাজারমুখী সব যানবাহন থেমে রয়েছে। সদরঘাটমুখী বিহঙ্গ পরিবহণের থেমে থাকা একটি বাসের জানালার পাশের সিটে বসে আনমনে মোবাইল চাপছেন এক যুবক। বাসের জানালা বন্ধ। হঠাৎ বাইর থেকে জানালা টান দিয়ে খুলে ছোঁ মেরে মোবাইল নিয়ে চম্পট দেয় অল্প বয়সি এক তরুণ। এ ঘটনার দুই দিন আগে একইভাবে মহাখালী এলাকায় টানাপার্টির কবলে পড়েন এক সংবাদকর্মী। শুধু এ দুটি ঘটনাই নয়। প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীতে অন্তত শতাধিক ব্যক্তি টানাপার্টির হেনস্তার শিকার হয়ে মূল্যবান জিনিস হারাচ্ছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ও ভ্যানিটি ব্যাগ খোয়া যাচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা বলেন, চলন্ত বাসে অথবা প্রাইভেটকারে এমন ঘটনা ঘটছে বলে সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। এসব ঘটনার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মামলা করতে অনীহা ভুক্তভোগীদের। অভিযোগ থাকে না বলে পুলিশও আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। তবে কোনো ভুক্তভোগী থানায় গেলে পুলিশের কাছ থেকে আইনের ব্যাখ্যা শোনার পর মামলা করার আগ্রহ তিনি হারিয়ে ফেলেন। তখন ভুক্তভোগী অগত্যা হারিয়ে গেছে মর্মে জিডি করেন। এ ধরনের একাধিক অভিযোগের পর মাঠে নেমেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তারা অন্তত দুই শতাধিক টানাপার্টির সদস্যকে শনাক্ত করেছে। এসব সদস্য গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, মানুষ যেমন পেশা বদল করে, ঠিক অপরাধীরাও তাদের পেশা বদল করে। ছিঁচকে চোর থেকে এখন অনেকে টানাপার্টি ও মলম পার্টিতে নাম লেখিয়েছে। এরা সাধারণত যানজটের সময়কে বেছে নিয়ে অপরাধ কর্ম করে থাকে। বিশেষ করে যানজটে পড়া ব্যক্তিরা এ সময় বাস অথবা প্রাইভেটকারে বসে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এই সুযোগে হঠাৎ করে জানালা দিয়ে ছোঁ মেরে মোবাইল নিয়ে যায়। আবার অনেক সময় সিএনজি চালিত অটোরিকশার ছাদের প্লাস্টিক কেটেও গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এসব অপরাধীদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুতই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, বাস টার্মিনাল বা বাসস্ট্যান্ডকেন্দ্রিক এসব চক্রের তৎপরতা বেশি। চক্রে অন্তত দুই শতাধিক সদস্য রয়েছেন। এদের মধ্যে নাটের গুরু ১০ থেকে ১৫ জন। যারা চক্রের সদস্যদের লালনপালন করেন এবং কমিশন পান। বিপদে পড়লে তারাই এদের জেল থেকে মুক্ত করার দায়িত্ব নেন। নাটের গুরুদের নামের তালিকা পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই তা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

জানা গেছে, রাজধানীতে দুই ধরনের টানা পার্টির সদস্য রয়েছে। এদের মধ্যে একটি গ্রুপ ভোর রাতে তৎপর থাকে। তারা প্রাইভেট কার অথবা মটরসাইকেলযোগে এসে রিকশা আরোহী যাত্রীদের ব্যাগ টান দিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে। আবার অন্য একটি গ্রুপ রয়েছে যারা কর্মস্থলে যাওয়া এবং বাসায় ফেরার সময়কে টার্গেট করেন। যানজটের সময়ে তারা জানালা দিয়ে ছোঁ মেরে মোবাইল ও ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে যায়। এই গ্রুপটির সদস্যরাও আবার অবসর সময়ে টার্মিনালে তৎপর থাকে। ঢাকায় আগন্তুকদের টার্গেট করে বাসে ওঠার আগ মুহূর্তে ছোঁ মেরে মূল্যবান মালামাল নিয়ে চোখের নিমিষে চম্পট দেয়। তাদের রক্ষা করার জন্য আলাদা একটি গ্রুপ সক্রিয় থাকে। কোনো কারণে বিপদের আঁচ পেলে তারাই সামনে হাজির হয়ে যায়। এরপর লোক দেখানো ধাওয়া দেয় টানা পার্টির সদস্যদের। মূলত ওই ধাওয়া দেয়ার অর্থ সাধারণ জনগণকে পেছনে ফেলে তারা নিজেরাই সামনে চলে আসে। আর এই ফাঁকে নিরাপদ স্থানে চলে যায় টানা পার্টির সদস্য। অনেক সময় চোখের নিমিষে টেনে নেয়া মোবাইল ফোন অথবা মূল্যবান জিনিস অন্য সদস্যের হাতে হাতবদল করে ফেলে।

এভাবেই প্রতিনিয়ত রাজধানীর বিমানবন্দর, উত্তরা, কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর, বাংলামোটর, পল্টন, গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় এমন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। মোবাইল ফোন ছাড়াও অনেক মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ছিনতাইকারী ও টানা পার্টির সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানের পর ছিনতাইকারী ও টানা পার্টি চক্রের সদস্যদের উৎপাত কিছুটা কমলেও তা একেবারে নির্মূল হচ্ছে না। কয়েক দিন পর আবারও শুরু হয়ে যায় ছিনতাই চক্রের সদস্যদের দৌরাত্ম্য।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, ছিনতাইকারীদের একাধিকবার গ্রেপ্তার করা হলেও ফের তারা জামিনে বেরিয়ে এসে আবার ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়। এ ক্ষেত্রে চিহ্নিত এলাকাগুলোতে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আইনের আওতায় নেয়া হচ্ছে।

র‍্যাব-৩ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ছিনতাইকারী চক্রের মূল হোতাসহ ৩২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। অভিযানে তাদের কাছ থেকে সুইচ গিয়ার, চাকু, ক্ষুর, অ্যান্টিকাটার, কাঁচি, ব্লেড, ছিনতাই করা মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়। এছাড়া গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ৩৫৫টি মোবাইলসহ ছিনতাই চক্রের ২৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। বিগত ছয় মাসে রাজধানীতে ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ৭৯টি অভিযান পরিচালনা করে ২৬৮ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৩।

র‍্যাব সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে র‍্যাব ছিনতাইয়ের অভিযান চালিয়েছে ১ হাজার ১৫০টি। এর মধ্যে ২ হাজার ৪৩৮ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আর ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসেই ৪৮টি অভিযানে ৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ চিত্রে দেখা গেছে, ২০২২ সালে দস্যুতার ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৪৫টি, চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে ১ হাজার ৬০৩টি। তেজগাঁও থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও থানা পুলিশ দস্যুতা, দস্যুতার চেষ্টা ও ডাকাতি প্রস্তুতি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৪৩টি মামলা করে। এসব মামলায় ৭৩ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাধারণত ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা ঘোরাফেরা করতে থাকে। এছাড়া সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন অলিগলিতে ওত পেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়। আবার চলন্ত বাস, সিএনজি অটোরিকশা থেকে হাত গলিয়ে ছোঁ মেরে মোবাইল, মানিব্যাগসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। রাজধানীর কোতোয়ালি, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর ও ওয়ারী এলাকার বিভিন্ন নির্জন জায়গায় সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেড়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, কোনো কোনো ছিনতাইকারী একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে। তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের আবার ছিনতাইয়ের কাজে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ভুক্তভুগী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, থানায় ছিনতাইয়ের মামলা করতে গেলে চুরির ধারা দিয়ে দেয়া হয়। তদবির বা চাপের মুখে মামলা নেয়া হলেও এ ক্ষেত্রে আইনের ফাঁক রাখা হয়, মামলা রেকর্ড করা হয় দণ্ডবিধির ৩৯৩ ধারায়। এ ধারায় আইনের ফাঁক থাকায় ছিনতাইকারী সহজেই পার পেয়ে যায়। অথচ ছিনতাই সংঘটিত হলে সুনির্দিষ্টভাবে দণ্ডবিধির ৩৯২ ও ৯৪ ধারায় মামলার বিধান রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা লিপি বলেন, যতক্ষণ সাজা না হবে ততক্ষণ একটা মানুষের জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। দ্রুত বিচার আইনের অধীনে ছিনতাইয়ের মামলা নিষ্পত্তির কথা রয়েছে ৪৫ দিনে। কিন্তু ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা নিষ্পত্তি হয় না পাঁচ বছরেও। ছিনতাইয়ের মামলায় অভিযোগপত্র দাখিলে দেরি, বাদী ও সাক্ষীর আদালতে গড় হাজিরা, কিছু ক্ষেত্রে সাক্ষী হাজির করার জন্য সঠিকভাবে সমন জারি না হওয়া-বিচারে দেরি হওয়ার অন্যতম কারণ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত