ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নির্বাচনি বছর

আস্থাই দূর করতে পারে রাজনৈতিক সংকট

তৎপরতা বাড়ছে কূটনীতিকদের
আস্থাই দূর করতে পারে রাজনৈতিক সংকট

আগামী জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আস্থা ফিরে এলে রাজনৈতিক সংকট কেটে যাবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন ঈদ বার্তায় তাদের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনার কথা জানিয়েছন। ইসি আশা প্রকাশ করে তাদের প্রতি সব দলই আস্থা আনবে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণ মূলক হবে।

সূত্র জানায়, বর্তমান নির্বাচনি ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি দেশের অনেক রাজনৈতিক দলের আস্থা নেই। এমন পরিস্থিতি নিজেদের জন্য বড় সংকট ও চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসি যে খসড়া কর্মপরিকল্পনা ঠিক করছে, তাতে এই চ্যালেঞ্জের কথা নিজেরাই উল্লেখ করেছে। অবশ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপায়ও খুঁজছে ইসি। তবে শেষ পর্যন্ত ইসি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা কতটা অর্জন করতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

রাজনৈতিক দলের আস্থার বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমাদের প্রতি দলগুলো আস্থা আনলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা সম্ভব হবে। আমরা আস্থা আনার চেষ্টা করছি। আশা করি শেষ পর্যন্তÍ সব দল আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে।

জানা যায়, এখন পর্যন্ত বিরোধী দলগুলোকে আস্থায় আনতে পারেনি ইসি। বিএনপিসহ ৯টি দল ইসির সংলাপ বর্জন করেছে। পরে আবার আলোচনায় ডাকলেও দলগুলো ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে টানা দুটি প্রশ্নবিদ্ধ জাতীয় নির্বাচনের পর নির্বাচনি ব্যবস্থা ও ইসির প্রতি বিভিন্ন দল ও ভোটারদের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। নতুন ইসি দায়িত্ব নেয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলে আসছেন, আস্থা অর্জনই এই কমিশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশনারদের মুখেও বিষয়টি একাধিকবার এসেছে।

সাম্প্রতি সময়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ইসির প্রতি আস্থা-অনাস্থা দুটিই আছে। যারা আমাদের সংলাপে এসেছিলেন, তাদের আস্থা আছে, যারা আসেননি তাদের নেই।

সিইসি বলেন, আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি, ঐক্যটা আমাদের নয়, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে বলেছি আপনারা ঐক্যের চেষ্টা করুন এবং ঐক্য হলে আমরা আনন্দিত হব। আর আমরা যে দায়িত্ব নিয়েছি, আইন-কানুন এবং সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করার, সেই দায়িত্বটা পালন করে যাব।

এর আগে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছিলেন, ইসির ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি। অংশীজনসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে হবে।

তৎপরতা বাড়ছে কূটনীতিকদের : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৎপরতা বাড়ছে বিদেশি কূটনীতিকদের। তারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং সরকারের বিভিন্ন পর্যায়েও মতবিনিময় করছেন। এসব বৈঠকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শক্তিশালী দেশগুলো বিভিন্ন বার্তা দিচ্ছে। কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে-অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, ভোটকে কেন্দ্র করে সহিংসতা প্রতিরোধ, বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণ, নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক পাঠানো এবং ভোটের ফলাফল মেনে নেয়াসহ নির্বাচনসংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যু।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের বিদেশিদের সঙ্গে বৈঠক নতুন কিছু নয়। বিগত সংসদীয় নির্বাচনগুলোর আগেও একই ধরনের বৈঠক হয়েছে। অনেক সময় বিদেশিদের বাংলাদেশে এসে দূতিয়ালি করতেও দেখা গেছে। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে ২২ মার্চ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে তার গুলশানের বাসভবনে বৈঠক করে। বৈঠকে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ এবং কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি নেতারাও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে বৈঠক করেছেন। ১৬ এপ্রিল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির একটি প্রতিনিধি দল গুলশানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদও উপস্থিত ছিলেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ১০ এপ্রিল ওয়াশিংটনে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার তাগিদ দিয়েছেন ব্লিংকেন। মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রতি গোটা বিশ্ব তাকিয়ে আছে। বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানানো হয় যে, নির্বাচন হবে সংবিধানের আওতায়।

অন্যদিকে রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অগ্রহ দেখিয়েছে। ইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত