ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত আছে

বললেন তথ্যমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত আছে

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্রের চর্চা আছে বলেই উন্নয়নের ধারাও অব্যাহত আছে। গণতন্ত্রবিরোধীরা বারবার গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হয়নি। গণতন্ত্রের সঠিক চর্চা আছে বলেই একজন রাষ্ট্রপতি তার নির্ধারিত সময় দায়িত্ব পালন করে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিতে পেরেছেন। এটা নিশ্চয়ই আমাদের একটি অর্জন।

গতকাল মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনার সময় এ কথা বলেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজ দেশের ইতিহাসে ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করছেন মো. সাহাবুদ্দিন। একইসঙ্গে ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে সফলভাবে অবসরে যাচ্ছেন মো. আব্দুল হামিদ। দেশের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র রাষ্ট্রপতি যিনি টানা ১০ বছর সফলভাবে দেশ পরিচালনা করে অবসরে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে ঈদ, পূজা এবং বিভিন্ন উৎসবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম অতিরিক্ত বাড়িয়ে দেয়। এটা অনৈতিক এবং জনস্বার্থবিরোধী। এ কথাগুলো বলার ফলে যদি অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের মনস্তাত্বিক চাপ থেকে সঠিক পথে ফিরে আসে, তবে সেটা হবে ইতিবাচক। তবে সবকিছু মিলিয়ে এবারের খুব ভালো কেটেছে।

এদিকে গত রোববার বিকালে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের দেওয়ানজী পুকুর লেনের বাসভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সাংবাদিকরা ঈদের দিন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণের শামিল

তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্য মিডিয়ার ওপর আক্রমণ। আমি মনে করি এই আক্রমণ সমীচীন নয়। ফখরুল সাহেব প্রচণ্ড হতাশা থেকে এ কথাগুলো বলেছেন। আজকে বাংলাদেশে যেভাবে স্বস্তির ঈদযাত্রা হয়েছে, মানুষ যেভাবে স্বস্তিতে ঈদ উদযাপন করেছে, বিশ্বমন্দা পরিস্থিতির মধ্যে এটি সত্যিই উদাহরণ। একটু যা অস্বস্তি ছিল গরমের কারণে, তাতে বিএনপি নেতাদের মাথা খারাপ হয়েছে কি না আমি জানি না।’

সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে গণমাধ্যমের গাণিতিক বৃদ্ধি ঘটেছে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের সময় বাংলাদেশে সাড়ে চারশ’ দৈনিক পত্রিকা ছিল, এখন ১২৬০ টির বেশি। ১৯৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের যাত্রাটাও শেখ হাসিনার হাত ধরেই হয়েছে। ২০০৯ সালে টেলিভিশন চ্যানেল ছিল ১০টি, এখন ৪৭টির লাইসেন্স দেয়া হয়েছে, এরমধ্যে ৩৬টি সম্প্রচারে রয়েছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত বাকি অনেকেই খুব সহসা সম্প্রচারে আসবে। এতগুলো টেলিভিশন চ্যানেল হওয়াতে সাংবাদিকতা থেকে পাস করা আমাদের ছেলে-মেয়েদের চাকরির একটা বড় ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।’

একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই মিডিয়ার ব্যাপ্তি ঘটলেও আমরা দেখতে পাই গণমাধ্যমে আজকে দেশের যে উন্নয়ন অগ্রগতি সেটি ঠিকভাবে পরিস্ফুটিত হয় না। খারাপ সংবাদ অনেক ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত হয়। কেউ কেউ মনে করেন ‘গুড নিউজ ইজ নো নিউজ, ব্যাড নিউজ ইজ নিউজ’ এটি সমীচীন নয় বলে আমি মনে করি।’ তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আজকে সারা পৃথিবী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছে। করোনা মহামারি মোকাবিলা করার ক্ষেত্রেও নিক্কি ইনস্টিটিউট এবং ব্লুমবার্গের যৌথ জরিপ বলছে যে, বাংলাদেশের অবস্থান পৃথিবীতে পঞ্চম এবং উপমহাদেশে প্রথম। করোনা মহামারির মধ্যে ২০২১ সালে আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকে ছাড়িয়েছে। সেটি নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানে প্রশংসা হয়েছে। এ নিয়ে দুই দেশের গণমাধ্যমে তাদের রাজনীতিবিদ ও ক্ষমতাসীনদের নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রশংসার ফুলঝুরি বয়ে যায়নি, এটিই বাস্তবতা।’

তথ্যমন্ত্রী হিসেবে এবং এর পূর্বে দীর্ঘ সাত বছর দলের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের সংসারটা সাংবাদিকদের সঙ্গেই উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘সারা বিশ্বে বিএনপির ‘পেইড এজেন্ট’ আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তারা সারা পৃথিবী থেকে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা যে বিভিন্ন জনের কাছে এ কাজের জন্য টাকা পাঠান সেই অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে, কাকে কত টাকা দেয়ার কথা ছিল, টাকা না দেয়াতে তারা গোস্বা করেছে। এগুলোতেও যখন কাজ হচ্ছে না, তাই মিডিয়ার ওপর চড়াও হয়েছে বিএনপি। অথচ মিডিয়া চাইলেও সরকারের বিরুদ্ধে অনেক ক্ষেত্রে খারাপ সংবাদ পাচ্ছে না বলেই পরিবেশিত হচ্ছে না।’ বিএনপির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি দেখতে পাচ্ছে বিদেশিদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিয়ে, হাত-পা মালিশ করে কোনো লাভ হয় নেই। বিএনপি যাদের ওপর ভরসা করেছিল তারাও দেখতে পাচ্ছে বিএনপির ওপর কোনো ভরসা নেই। তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত হয়ে কোলাব্যাঙের মতো আওয়াজ তুলছে মাত্র। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেবদের বড় একটা গলা আছে, অন্য কোনো কিছু নেই। ব্যাঙ ছোট প্রাণী, কিন্তু আওয়াজটা খুব বড়। যখন বর্ষাকালে চারিদিক ডুবে যায় তখন ব্যাঙ প্রচণ্ড আওয়াজ করে। আসলে বিএনপির অবস্থাও তেমনই হয়েছে।’ শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিশতি, কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সহসভাপতি সফর আলী ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ে যোগ দেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত