ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসরণ

ধান কাটায় কৃষকের পাশে আ. লীগের সহযোগীরা

ধান কাটায় কৃষকের পাশে আ. লীগের সহযোগীরা

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। আধুনিকতার স্পর্শে দিন দিন গ্রামীণ জনপদের মানুষ শহরমুখো হচ্ছে। আদি পেশা ছেড়ে শহরমুখী হয়ে নানান কর্মে জীবিকা নির্বাহ করছে। গ্রামীণ মানুষজন ও শ্রমিকরা শহরমুখী হওয়ায় ধান কাটায় শ্রমিক সংকটে পড়েছেন কৃষক। দেশে ধানের বাম্পার ফলন হলেও ধানকাটার শ্রমিক পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। চলতি মৌসুমের আগাম ইরি-বোরো ধানকাটার উৎসব শুরু হয়েছে। অসহায় কৃষক চড়া মূলে শ্রমিকের মজুরি দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এমন অবস্থায় দেশের অসহায় কৃষকদের ধান কাটার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতির নিদের্শনার পরপরই জেলায় জেলায় অসহায় কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে ধান মাড়াই করে কৃষকের গোলায়ও ভরে দিচ্ছে তারা।

গত ২৪ এপ্রিল বোরো মৌসুমে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ, তরুণ প্রজন্ম এবং ছাত্র ও যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। এর পরই ধান কাটার উৎসবে যোগ দিচ্ছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা জানান, বাংলার ছাত্রসমাজের নির্ভরতার একমাত্র ঠিকানা, স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী শহীদের রক্তস্নাত সংগঠন বংলাদেশ ছাত্রলীগ দেশের তরুণ প্রজন্ম, ছাত্র ও যুবসমাজের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে, চলতি বোরো মৌমুমে ক্ষেত থেকে ধান কেটে কৃষকের ঘরে নিরাপদে পৌঁছে দিতে তারা যেন নিরবচ্ছিন্ন, নিরলস ভূমিকা পালন করেন। অতীতের ন্যায় এ বছরও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধান কেটে কৃষকের কাছের বন্ধুতে পরিণত হবে- এটিই সংকল্প।

ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় এ দেশের গণমানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। বর্তমান সময়ে যারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে তারা কৃষকের সন্তান, শ্রমিকের সন্তান। আমরা দুর্যোগে দুর্বিপাকে শুধু নয়, কৃষকের উন্নয়নে কৃষি বিপ্লব বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বাস্তবায়ন করার জন্য এবং স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার বাস্তবায়নের জন্য কৃষকদের সাথে নিয়ে কাজ করার জন্য বদ্ধপরিকর। এ কারণেই বোরো মৌসুমে আমরা কৃষকের ধান কেটে দেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছি। এটির মাধ্যমে তরুণরা আজ এমন স্বেচ্ছাসেবীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। কৃষকদের প্রতি তারা দায়বদ্ধতা অনুভব করছে। কৃষি অর্থনীতিকে জোরালো করা এবং কৃষিকে আধুনিকায়ন করার ক্ষেত্রেও তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, এশিয়া মহাদেশের মধ্যে মানবিক ছাত্র সংগঠন হচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। শুধু ছাত্রদের অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়েই সোচ্চার নয়, যে কোনো দর্যোগ-দুর্বিপাকেও থাকে মানুষের পাশে। এখন কৃষকের ধান কাটার মৌসুম চলছে। অনেক কৃষক শ্রমিক পাচ্ছে না। সে কারণে আমরা কৃষকের পাশে দাঁড়াতে সারা দেশের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছিলাম। ব্যাপক সাড়া পড়েছে। যারা কাজ করছেন তাদের ধন্যবাদ। অন্যদেরও আহ্বান জানাব কৃষকের পাশে দাঁড়াতে।

এদিকে অসহায় কৃষকের ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলে দেয়ার জন্য দেশব্যাপী যুবলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী জানান, বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। কৃষিই বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান চলনশক্তি। প্রতিবারের মতো এবারও বোরো মৌসুমে সারা দেশে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলন হলেও তীব্র গরম, শ্রমিক ও আর্থিক সংকট, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কায় ধানকাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক কৃষক। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নিদের্শে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নেতৃত্বে সারাদেশে যুবলীগের নেতাকর্মীরা কৃষকের পাশে থেকে ধান কেটে দিচ্ছে।

নিজ নিজ এলাকার কৃষকের ক্ষেতের পাকা ধান কেটে ঝাড়াই-মাড়াই শেষে গোলায় তুলে দিতে কৃষক লীগের প্রতিটি ইউনিটকে নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি। নিদের্শনায় নেতারা বলেন, এ বছর ৫০ বছরের তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙায় সীমাহীন দাবদাহে অতিষ্ট কৃষক ধান কেটে গোলায় তুলতে পারছেন না। এই অবস্থায় কৃষকরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশ মোতাবেক নিজ নিজ এলাকায় অসহায় কৃষকের ক্ষেতের পাকা ধান স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কেটে ঝাড়াই-মাড়াই শেষে কৃষকের গোলায় তুলে দেয়ার অনুরোধ করা হলো।

কৃষকের ধান কাটতে মাঠে নামছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরাও। আগামীকাল মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিলে কৃষকের জমির পাকা ধান কেটে দেবে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু জানান, এ বছর প্রচুর ধান উৎপাদন হয়েছে। সারা দেশে অসহায় কৃষকের ধান কেটে দিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাকে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিলে অসহায় কৃষকের ধান কেটে দেবেন।

করোনাকালেও অক্সিজেন, ওষুধ, খাবার ও কৃষকের ধান কেটে দিয়ে কার্যত ত্রাতার ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোকে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত