ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাড়ে ৩ হাজার কোটা ফেরত যাবে

প্রভাব পড়বে না আগামী হজে

সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
প্রভাব পড়বে না আগামী হজে

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে হজ পালনে সাড়ে ৩ হাজার হজযাত্রীর কোটা সৌদি আরবে ফেরত যাবে বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। কোটা ফেরত দেয়া হলেও তা আগামী হজে প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল সচিবালয়ে ‘ই-হজ মোবাইল অ্যাপ’ এবং ‘হজ ও ওমরাহ সহয়িকা প্রকাশনা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান। খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছর ৯ দফা বাড়িয়েও হজের কোটা পূরণ করা যায়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও অবশিষ্ট ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি হজের নিবন্ধন শুরু হয়। এরপর আট দফা বাড়ানো হয় নিবন্ধনের সময় এর মধ্যে কোটা পূরণ হয়নি। শেষে নবম দফায় ২৫ এপ্রিল নিবন্ধনের বিশেষ সুযোগ দেয়া হয়। এরপর কোটা পূরণ হয়নি। মোট ১ লাখ ২০ হাজার ৪৯১ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। কোটা পূরণে এখনো ৬ হাজার ৭০৭ জন বাকি আছে। তবে হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের বাদ দিয়ে সাড়ে ৩ হাজারের কোটা খালি থাকবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

কোটা পূরণ না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হজের নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানোর হবে না। কোটা যতটুকু ফাঁকা আছে ততটুকু সৌদি আরবে ফেরত যাবে। এটা আর পূরণ হবে না।’

হজের খরচ কমানোর কোনো চিন্তাভাবনা নেই জানিয়ে ফরিদুল হক খান বলেন, ‘আগামী বছর একটু দূরে বাসাভাড়া নিয়ে খরচ কমানো যায় কি না, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা করা হবে।’

আগামী ২১ মে প্রথম হজ ফ্লাইট শুরু হবে বলেও জানান ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘এবার হজে বেসরকারি কোটা ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার নিবন্ধিত হয়েছেন। কিছু খালি মনে হলেও আসলে সেখানে খালি নেই। এখন আমাদের গাইড আছেন, মোনাজ্জেম আছেন। সেগুলো ধরলে বেসরকারি ক্ষেত্রে হজের কোটা পূরণ হয়ে গেছে। সরকারি ক্ষেত্রেও গাইডসহ আরো কিছু যুক্ত হবে। মনে হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজারের মতো কোটা খালি থাকবে। এ সাড়ে ৩ হাজার সৌদি আরবকে ফেরত দেয়া হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে পৃথিবীর অনেক দেশ এবার হজযাত্রীর কোটা ফেরত দেবে। পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়া কোটা ফেরত দেবে। আরো অনেক দেশ ফেরত দেবে। কোটা ফেরত দেয়াটা কোনো গুরুতর বিষয় বলে আমি মনে করি না। এজন্য আগামী বছর কোটা পেতে আমাদের কোনো সমস্যা হবে বলে মনে করি না।’

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল হজ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উন্নত হজ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। হজের প্রাক-নিবন্ধন, নিবন্ধন, হজযাত্রীদের টিকা ও চিকিৎসাসেবা প্রদান, আবাসন ব্যবস্থার তথ্যাদি, লাগেজ ব্যবস্থাপনা, হারানো হজযাত্রী খুঁজে পাওয়াসহ যাবতীয় সেবা কার্যক্রমে আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। হজ এজেন্সিগুলো প্রযুক্তিগত সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করেছে।’

হজযাত্রীদের সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করাই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মুখ্য উদ্দেশ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেই লক্ষ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে হজযাত্রী এবং ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত অংশীজনদের জন্য হজ পালনসহ ধর্মীয় অন্যান্য বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে ই-হজ মোবাইল অ্যাপ এবং হজ ও ওমরাহ সহায়িকা প্রকাশ করা হয়েছে। এটি স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি চমৎকার উদ্যোগ।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ই-হজ মোবাইল অ্যাপটি আজকে পরীক্ষামূলকভাবে উদ্বোধন করা হলো। প্রাথমিকভাবে প্রাক-নিবন্ধন ও প্রাক নিবন্ধন রিফান্ড আবেদন এ সিস্টেমের মাধ্যমে করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন তথ্য এখানে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। ফলে হজযাত্রীরা এই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসে ভাউচার তৈরি করতে পারবেন।’

‘আগামীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা নিয়ে অনলাইনে প্রাক নিবন্ধন ও নিবন্ধনের আর্থিক লেনদেন নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছে। বর্তমানে ই-হজ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন সেবাও পর্যায়ক্রমে মোবাইল অ্যাপটিতে সংযুক্ত করা হবে।’ বলেন তিনি।

মোবাইল অ্যাপটিতে ধাপে ধাপে নতুন সেবা যুক্ত করা হবে জানিয়ে ফরিদুল হক খান বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে চুক্তির আওতায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিজনেস অটোমেশন লিমিটেড এই অ্যাপটি তৈরি করেছে।’

এসময় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসানসহ মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত