সমৃদ্ধির জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রয়োজন : আইএমএফ প্রধান

কিছুটা স্বস্তির জন্য আইএমএফের ঋণ নিয়েছি : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ০১ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেছেন, সব বাধাবিপত্তি মোকাবিলা করে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন। বাংলাদেশ বিশ্বে একটি রোল মডেল। শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ণ উন্নয়ন অর্জন করেছে। তিনি গত শনিবার ওয়াশিংটনের রিজ-কার্লটন হোটেলে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে একথা বলেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসস। এদিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান, আইএমএফ প্রধান বৈঠকে একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। মূলত আজকে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শেখ হাসিনা বর্তমানে এক সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানান, আইএমএফ প্রধান বলেছেন- শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব কোভিড-১৯ এর পরও বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল রেখেছে।

আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক জর্জিয়েভা আরো বলেন, সব বাধাবিপত্তি মোকাবিলা করে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর মতো নেতৃত্ব জরুরি। বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারিকালেও সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখায় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে বলেন, ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সুসংযোগ স্থাপন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে আইএমএফ প্রধানকে অবহিত করেন। তিনি আরো বলেন, দেশের উন্নয়ন একদিনে হয়নি। এটা দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার ফসল।

ব্রিফিংকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থনীতি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও অর্থনীতিবিষয়ক বিভাগের সচিব শরীফা খান উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে বাসস আরো জানায়, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তির জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে। এদিকে, বৈশ্বিক ঋণ দাতা সংস্থাটি ভবিষ্যতেও এই ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে। গত শনিবার বিকালে দ্য রিজ-কার্লটন হোটেলের সভাকক্ষে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, আমরা কিছুটা স্বস্তির জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ নিয়েছি। আইএমএফ সম্প্রতি বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, পটপরিবর্তনের পর কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি যেভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন চেয়েছেন, সেভাবে তার পরিকল্পনা করেন এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের পদক্ষেপ সম্পর্কে আইএমএফ প্রধানকে অবহিত করেন।

প্রধানমন্ত্রীও বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় আইএমএফের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলে আশা করেন।

এদিকে ব্রিফিংকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ বলেন, গত ১৪ বছরে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আইএমএফ সবসময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে এবং দেশটি কখনই এর থেকে বিচ্যুত হয়নি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মসূচি নিয়ে আইএমএফের সাথে কাজ করছে, যা বাংলাদেশ মাত্র দুই সপ্তাহের আলোচনার মাধ্যমে পেয়েছে, যদিও অনেক দেশ বছরে পর বছর ধরে আলোচনা চালিয়েও পায় না।

আইএমএফ প্রধানকে উদ্ধৃত করে রউফ বলেন, আইএমএফ ভবিষ্যতে এই ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

ব্রিফিংকালে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।