ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শুভেচ্ছা বিনিময়কালে রাষ্ট্রপতি

দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার নির্দেশ

দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার নির্দেশ

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দায়িত্ব পালনের প্রতিটি স্তরে নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বঙ্গভবনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি গতকাল দুপুরে দরবার হলে বঙ্গভবনের সকল সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এই নির্দেশনা দেন।

তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব পালনের প্রতিটি স্তরে নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। বঙ্গভবনের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার পাশাপাশি কীভাবে আরো বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে ভাবতে হবে।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আশা করেন, বঙ্গভবনের প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নিজ দায়িত্ব নিষ্ঠা, সততা ও আন্তরিকতার সাথে পালন করবেন এবং বঙ্গভবনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সচেষ্ট থাকবেন।

তিনি বলেন, ‘তাই আপনাদের (বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারী) প্রতিটি কর্মকাণ্ড এমন হতে হবে যাতে জনগণ আপনাদের উপর আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারে।’

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সততা ও ন্যায়ভিত্তিক, জ্ঞাননির্ভর ও আলোকিত জনপ্রশাসনের কোনো বিকল্প নেই।

‘আপনারা সরকারের আইন, বিধিবিধান ও জনস্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হবেন। মনে রাখবেন, সব আইন প্রণীত হয় জনগণের কল্যাণের জন্য,’ রাষ্ট্রপতি যোগ করেন।

বঙ্গভবনকে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর সাথে মিশে রয়েছে বঙ্গভবনে কর্মরত প্রতিটি কর্মচারীর মেধা, শ্রম ও আন্তরিকতা।

বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হলেও একজন নাগরিক হিসেবে সরকারি কাজের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সার্বক্ষণিক প্রয়াস চালাবেন বলে রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশা করেন।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়নের পথে। ‘বাংলাদেশ এরই মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হয়েছে, তিনি উল্লেখ করেন।

দেশের চলমান উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে প্রত্যেককে নিয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার ও তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, জনগণ যাতে তাদের প্রত্যাশিত সেবা সহজে ও নির্বিঘ্নে পেতে পারে সেদিকে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে খেয়াল রাখতে হবে।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘মনে রাখতে হবে আপনারা জনগণের সেবক, প্রভু নন’। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গভবনের ইতিহাস শুধুই যে অহংকার আর গর্বের তাই নয়, খুনি চক্র এই বঙ্গভবনে বসেই বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করেছে।’

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, কিছু দেশদ্রোহী তাদেরও সহায়তা করেছে। ইতিহাস তাদের ক্ষমা করেনি। তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘাতকচক্র ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তারা বাংলার মাটি ও মানুষের কাছ থেকে তার নীতি ও আদর্শ মুছে ফেলবে কিন্তু তারা তা পারেনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু আজ শুধু বাংলাদেশি নয় সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের প্রেরণার উৎস।

রাষ্ট্রপতি বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের কাল রাতে শাহাদাত বরণকারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় চার নেতা ও জাতির ক্লান্তিলগ্নে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

মো. সাহাবুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সকল সংসদ সদস্য যাদের ভোটে তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

বুদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি : রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ উপলক্ষ্যে আজ বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য এক সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন।

গৌতম বুদ্ধের জন্মদিন বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সাথে রাষ্ট্রপ্রধান এবং তার পত্নী ড. রেবেকা সুলতানা আজ বিকাল চারটায় শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে পবিত্র উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ সারা দেশে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়কমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এ সময় উপস্থিত থাকবেন।

আট শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথিসহ প্রায় ১৬০০ এর অধিক লোক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বঙ্গভবনের একটি সূত্র একথা জানিয়েছে। অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি মিশনের প্রধানরাও উপস্থিত থাকবেন। ধর্মীয় সংগীত ও গানের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারাও রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানাবেন। রাষ্ট্রপতি এ উপলক্ষ্যে একটি সংক্ষিপ্ত ভাষণও দেবেন।

ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ২৫৫৯ বছর আগে এই দিনে ভগবান বুদ্ধের আবির্ভাব হয়েছিল। যুবরাজ সিদ্ধার্থ গৌতম ৫৬৩ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে নেপালের লুম্বিনীতে পূর্ণিমার দিনে জন্মগ্রহণ করেন। বুদ্ধ হিসাবে বোধগয়ায় ছয় বছর কঠোর ধ্যানের পর সর্বোচ্চ জ্ঞান লাভ করেন তিনি। এবং একই দিনে ভারতের কুশিনগরে মৃত্যুবরণ করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত