ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নির্ভার আওয়ামী লীগ

জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নির্ভার আওয়ামী লীগ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সুর বদলাতে শুরু করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। কমে এসেছে কূটনীতিকদের তৎপরতাও। গত বছরের শেষ দিক থেকে চলতি বছরের শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেশ সরব ছিল যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত। সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপির নেতারাও বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ঘনঘন বৈঠক করছেন। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিদেশিদের চাপ কমতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে এখন যুক্তরাজ্য সফর করছেন। প্রধানমন্ত্রীর জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরপরই নির্বাচন নিয়ে সুর নরম করতে শুরু করেছেন বিদেশিরা। সরকারপ্রধানের এই সফরের মধ্য দিয়ে সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে বাংলাদেশের অবস্থান সুস্পষ্ট করতে সক্ষম হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে নির্বাচন নিয়ে যে কূটনৈতিক চাপ ছিল এখন তা অনেকটাই কমেছে।

গত বছরের ১৬ নভেম্বর ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছিলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতেই পুলিশ ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছিল বলে আমি শুনেছি। অন্য কোনো দেশে এমন দৃষ্টান্ত নেই। আমি আশা করব, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তেমন সুযোগ থাকবে না বা এমন ঘটনা ঘটবে না। সাত মাসের মাথায় বোলপাল্টে ফেললেন ঢাকাস্থ জাপানের নতুন রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। গত ৩ মে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে জাপান কোনো মন্তব্য করতে চায় না। দুই দেশ একটি ‘অত্যন্ত বিস্তৃত ও লক্ষ্যভিত্তিক’ অংশীদারিত্বের দিকে মনোনিবেশ করছে। আমাদের সম্পর্ক বিস্তৃত অংশীদারিত্ব থেকে কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয়েছে। কৌশলগত অংশীদারিত্ব মানে শুধু রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যু নয়।’

গণতন্ত্র, নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতিসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে সরব ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা। তারা প্রায় সময়ই বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে কথা বলতেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও নানা সময় বক্তব্য দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তবে দ্বাদশ সংসদ ভোট নিয়ে এবার নিজেদের অবস্থান বদলাতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশের নির্বাচন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল। গত পহেলা মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন দেশটির অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের বিষয়। নির্বাচন কীভাবে হবে তা নির্ধারণ করবে জনগণ। তবে নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন দেখতে চায় তারা। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে না।’ জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের এমন বক্তব্যের পর নির্বাচন নিয়ে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদেশ সফর অত্যন্ত সফল। দেশের উচ্চতা বাড়াতে তিনি বিদেশ সফরে যান। দেশের মানুষের শান্তির জন্য শেখ হাসিনা বিদেশ সফর করছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের মধ্য দিয়েই বিএনপির অপতৎপরতা ব্যর্থ হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, বিএনপি সব সময় দেশের অকল্যাণ-অমঙ্গল চায়। তারা জনগণের জন্য রাজনীতি করে না। আন্দোলনের নামে তারা মিছিল-মিটিং করছে, জনসাধারণ তাতে সাড়া দিচ্ছে না। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নির্বাচন বানচালের জন্য বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের দিয়ে তৎপরতা শুরু করেছিল, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিদেশ সফরের মধ্য দিয়ে সেই কূটনৈতিক তৎপরতাও ব্যর্থ হয়েছে বিএনপির।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত