উখিয়া থেকে ক্রিস্টাল মেথ মাদকের বড় চালান আটক

পুলিশের বহিষ্কৃত সদস্যসহ আটক চার

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকা ও কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের উখিয়া থেকে ২৪ দশমিক ২ কেজি ক্রিস্টাল মেথ বা আইসসহ চারজনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাবের দাবি আইসের এই চালানটি দেশে উদ্ধার হওয়া সবচেয়ে বড় চালান। আটকদের একজন কক্সবাজার কেন্দ্রিক আইস চোরাচালানের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি। আরেকজন বাংলাদেশ পুলিশের বহিষ্কৃত সদস্য। গতকাল রোববার দুপুরে কক্সবাজারস্থ র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান। জানা গেছে, এর আগে বাংলাদেশে ঢোকার সময় কক্সবাজার থেকে ২১ কেজি ৯০ গ্রাম আইস বা ক্রিস্টাল মেথ মাদকসহ তিনজনকে আটক করেছিল সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি।

পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত শনিবার দিনগত মধ্যরাতে উখিয়ার পালংগালির সফিউল্ল্যাহ কাটা-সংলগ্ন এলাকার ইরান মাঝির আস্তানায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে আটকরা হলেন, উখিয়ার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে ইমরান প্রকাশ ইরান মাঝি (৩৩), তার ভাই মো. রুবেল প্রকাশ ডাকাত রুবেল (২৬), মৃত আলী আহমেদের ছেলে মো. আলাউদ্দিন (৩৫), টেকনাফের মৃত আবদুল করিমের ছেলে জয়নাল আবেদীন প্রকাশ কালা বদা (৩৭)।

অভিযানে উদ্ধার হওয়া ২৪.২ কেজি আইসের অনুমানিক মূল্য ১২০ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

খন্দকার আল মঈন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। আটকরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, মিয়ানমারের মাদক চোরাচালান চক্রের যোগসাজসে দেশে অবৈধ মাদক আইস চোরাকারবারীর সাথে জড়িত তারা। তাদের চক্রের প্রধান ইরান মাঝি। ইরান মাঝির নেতৃত্বে চক্রটির বেশ কয়েকজন সদস্য পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে দুর্গম সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে কক্সবাজার ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রিস্টাল মেথ বা আইসসহ পাচারে জড়িত।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরো বলেন, এই চক্রটি মূলত কক্সবাজার কেন্দ্রিক একটি মাদক চোরাকারবারী চক্র এবং রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের নির্ধারিত এজেন্ট রয়েছে। প্রথমে ইরান মাঝির নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা পার্শ্ববর্তী দেশের মাদক চক্রের কাছ থেকে মাদকের চালান নিয়ে আনে, যা পরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রেরণ করে থাকে।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ইরান মাঝি নলবুনিয়া ও পালংখালী এলাকার একজন মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে উখিয়াসহ বিভিন্ন থানায় মানদ, অস্ত্র, অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা সংক্রান্ত সাতটির অধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন মামলায় চারবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তারের পর সাজাও ভোগ করেছেন। পরে জামিনে বের হয়ে পালাতক হয়ে একই কাজে জড়িত হন। ডাকাত রুবেল ইরান মাঝির সহোদর এবং ইরানের অন্যতম সহযোগী। তার বিরুদ্ধেও চারটির অধিক মামলা রয়েছে। আটক আলাউদ্দিন বাংলাদেশ পুলিশের একজন বহিষ্কৃত সদস্য। সে ২০১৭ সালে মাদক বহনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হওয়ায় বহিষ্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধে চারটির অধিক মামলা রয়েছে। জয়নাল আবেদীন কালা বদা পাঁচ বার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে। তার বিরুদ্ধে ছয়টির অধিক মামলা রয়েছে।

আইস উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়ের করে আটকদের উখিয়া থানায় সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।