আস্থা অর্জনে পাঁচ সিটিতে যাচ্ছেন সিইসি

আজ গাজীপুর দিয়ে শুরু

প্রকাশ : ১০ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাঁচ সিটিতে আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর অংশ হিসেবে পাঁচ সিটির মাধ্যে প্রথম ধাপে আজ বুধবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় যাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এর পরে পর্যায়ক্রমে এ মাসে বাকি চারটি সিটিতে যাবেন সিইসি। নির্বাচন কমিশন সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। সূত্র জানায়, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবার ভোটের এলাকায় যাচ্ছেন সিইসি। সঙ্গে নিচ্ছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীরকে। নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আজমত উল্লা খানকে ইসিতে তলব, মন্ত্রীদের আচরণবিধি ভঙ্গ করে নির্বাচনি প্রচারে অংশগ্রহণ, বৈধ্যতা না পাওয়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে নানা আলোচনা, আচরণবিধি প্রতিপালনে দলটির সাধারণ সম্পাদককে নির্বাচন কমিশনের চিঠি, মন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রিপরিষদকে ইসির অনুরোধ, আজমত উল্লা খানের দুঃখ প্রকাশ ইত্যাদি ঘটনায় ভোটের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন গাজীপুর সিটি নির্বাচন।

আজ বুধবার সব প্রার্থী ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সভা করবেন নির্বাচন কমিশন প্রধান। সিইসির একান্ত সচিব মো. রিয়াজ উদ্দিন জানিয়েছেন, আজ বুধবার বেলা ১১টায় স্থানীয় প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে প্রার্থীদের সঙ্গে এবং বিকাল সাড়ে ৩টায় একই স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আর এ সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫ মে। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে।

এদিকে গতকাল গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গাজীপুরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে সিটি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম এসব প্রতীক বরাদ্দ দেন।

প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের মো. আজমত উল্লা খান পেয়েছেন দলীয় প্রতীক নৌকা। জাতীয় পার্টির এমএম নিয়াজ উদ্দিন পেয়েছেন লাঙ্গল।

অন্যদের মধ্যে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলামকে মাছ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমানকে হাতপাখা, জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদকে গোলাপ ফুল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে জায়েদা খাতুন টেবিল ঘড়ি, মো. হারুন-অর-রশিদ ঘোড়া ও সরকার শাহনুর ইসলাম হাতি প্রতীক পেয়েছেন।

এর মধ্যে জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন এবং শাহনুর ইসলাম দুজনেই টেবিল ঘড়ি চেয়েছিলেন। তবে শাহনুর টেবিল ঘড়ির পাশাপাশি বাস প্রতীকও চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এর কোনোটিই পাননি। প্রতীক বরাদ্দের পর অনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন প্রার্থীরা।

জানা যায়, দাদ্বশ সংসদ নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটিতে ভোট সুষ্ঠু করতে চায় ইসি। এরই অংশ হিসেবে এবারের নির্বাচনে তৎপরতা বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে গাজীপুর সিটি নিয়ে বেশি তৎপরতা ইসির।

অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন কিছুটা টালমাটাল থাকলেও সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করতে চায় ইসি। সে লক্ষ্যে প্রস্তুতিও এগিয়ে নিচ্ছে কমিশন। তবে তার আগে একযোগে পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যাচ্ছে ইসি। অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি ভোটে না যাওয়ার ঘোষণা দিলেও স্থানীয় এই ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। বিশেষ করে, সংসদ ভোটের আগে এই নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো ধরনের বিতর্কের মুখে পড়তে না হয়, সে দিকে সতর্ক ইসি।

গাজীপুর ছাড়া বাকি চার সিটিতে এখনো ভোটের বেশ বাকি। তবে তফসিল ঘোষণার পর থেকেই প্রতিনিয়ত ভোট নিয়ে কোনো না কোনো নির্দেশনা, বিজ্ঞপ্তি, বক্তব্য দিচ্ছে কমিশন। কখনো সরকারদলীয় প্রার্থীকে শোকজ, কোনো চিঠিতে আবার স্থানীয় প্রশাসনকে আচরণবিধি মানাতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখা, আবার কোনোটিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের সাহসের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা যাচ্ছে ইসি।