ঢাকা ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন

ভোটের মাঠে প্রচারণায় এগিয়ে আজমত উল্লাহ

ভোট সুষ্ঠু করতে কঠোর অবস্থানে ইসি
ভোটের মাঠে প্রচারণায় এগিয়ে আজমত উল্লাহ

গাজীপুর সিটি করপোরেশন ভোটের প্রচারণা জমে উঠেছে। মেয়র এবং স্থানীয় কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজেদের প্রতীক নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা ভোটারের কাছে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে এ সিটিতে বিএনপি অংশগ্রহণ না করা ও জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় আসনটিতে ভোটের রাজনীতিতে অনেকটায় এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান।

সরেজমিন দেখা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাহ খানের পক্ষে আস্থানী আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ কাজ করছে। পক্ষান্তরে দলীয় পদ ও প্রার্থিতা হারানোয় জাহাঙ্গীর আলম অনেকটায় কোণঠাসা। তার মাকে নিয়ে প্রচারণা চালালেও তেমন সুবিধা করতে পারছেন না। তার অনুসারী স্থানীয় আওয়ামী লীগ অনেক নেতা নীরব রয়েছেন। কিংবা আজমত উল্লাহ খানের পক্ষে কাজ করার কথা ভাবছেন। আর কিছু নেতা জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে থেকে তার মায়ের প্রচারণা চালাচ্ছেন।

এদিকে ভোট সুষ্ঠু করতে কঠোর অবস্থানে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটের মাঠে আইনবিরোধী কোনো কার্যকলাপ দেখলে ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটি কপোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চায় ইসি। এ কারণেই এসব নির্বাচন নিয়ে ইসির তৎপরতা বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে গাজীপুর সিটি নিয়ে।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, নিয়ম-কানুন সবাইকে মানতে হবে। যদি না মানেন রিটার্নিং অফিসার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। শুরুর দিকে অনেকে জেনেই হোক, না জেনেই হোক হয়তো কিছুটা আচরণবিধি ভেঙেছেন। এরই মধ্যে সতর্ক করা হয়েছে। এখন আমরা যে ধরনের ম্যাসেজ দিচ্ছি সবাই বুঝতে পারবে তাদের আচরণবিধি মানতে হবে। তিনি জানান, আচরণবিধি না মানলে রিটার্নিং অফিসার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ব্যবস্থা নেবেন। আচরণবিধিতে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এরপর প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও আছে কমিশনের। মনোনয়নপত্র জমা যেহেতু দিয়েছে, এখন তাদের কমিশনেও ডাকা হয়েছে। কমিশন আচরণবিধি প্রতিপালনেও কড়াকড়ি অবস্থান নেবে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান বলেন, দলের পক্ষ থেকে শতভাগ সহযোগিতা পাচ্ছি। আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্বাচনি কাজে নেমে গেছেন। এখন পর্যন্ত ঘরোয়া পরিবেশে আমাদের নির্বাচনি কর্মকাণ্ড করতে হচ্ছে। মহানগর থেকে শুরু করে থানা, ওয়ার্ড, ওয়ার্ড থেকে ৪৮০টি কেন্দ্র পর্যন্ত ঘরোয়া কর্মিসভা করেছি। মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এগুলোতে কোনো ব্যত্যয় হচ্ছে না।

তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রচারে আমি কোনো প্রতিবন্ধকতা দেখছি না। আসলে সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এখন নানা মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই অপপ্রচারকে রুখে দিয়ে মানুষকে সম্পৃক্ত করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। মাঠে গুজব ও অপপ্রচার চলছে।

বিএনপি নির্বাচনে আছে দাবি করে আজমত উল্লাহ খান বলেন, একদিকে বলা হচ্ছে, বিএনপি নির্বাচনে আসবে না। কিন্তু শুধু মেয়র পদে নয়, কাউন্সিলর পদগুলোতেও বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আপনারা হয়তো লক্ষ করছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানা অপপ্রচার চলছে। বিদেশে থেকে অনেকে মিথ্যাচার করছে, গুজব রটাচ্ছে। তবে আমরা আশাবাদী, কারণ গাজীপুরে মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে। ইভিএমে ভোট দেবে। কয়েক লাখ যুবক নতুন ভোটার হয়েছেন। তারা উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করছেন।

এদিকে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে কালো টাকা ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে। একেকজন ভোটারকে ৫ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সামনে এই অভিযোগ করেছেন এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী একাধিক ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী। এই অভিযোগের জবাবে টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা প্রতিহত করার পরামর্শ দিয়েছেন সিইসি। আবার এটাও বলেছেন, কালো টাকা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবেন না।

৩২৯ দশমিক ৫৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজীপুর সিটির জনসংখ্যা প্রায় ৬৫ লাখ। ভোটার মাত্র ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। শিল্প এলাকা হওয়ায় অনেক ভাসমান মানুষ এই জনপদে বাস করেন। স্থানীয়দের দাবি, মোট ভোটারের ৪৬ শতাংশ গাজীপুর মহানগরের স্থায়ী বাসিন্দা নন। যে কারণে ভাসমান ভোটারের ভোট কেনাটাই প্রার্থীদের প্রধান টার্গেট।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত