পাকিস্তানে বিক্ষোভ দমনে সেনা তলব

ইমরানকে মুক্তির নির্দেশ সুপ্রিমকোর্টের

প্রকাশ : ১২ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

পাকিস্তানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া তীব্র বিক্ষোভ দমনে সেনাবাহিনী তলব করা হয়েছে। গত বুধবার রাজধানীসহ পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়ায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর থেকে দেশজুড়ে বিক্ষোভে এ পর্যন্ত আটজন নিহত হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৪ হাজারেরও বেশি লোক।

জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক টেলিভিশন ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ হুঁশিয়ার করে বলেছেন, সহিংস বিক্ষোভ সহ্য করা হবে না। তিনি বলেন, যারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবে তাদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে।

পাকিস্তানের অবনতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা সংযম প্রদর্শন এবং আইনের শাসন বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সবাইকে সংযত থেকে সহিংসতা এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে উভয় পক্ষের প্রতি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে বলেছে, পাকিস্তাানে যেসব চ্যালেঞ্জ তা মোকাবিলা এবং দেশটি কোনো পথে যাবে তা একমাত্র দেশটির জনগণই নির্ধারণ করতে পারে। সেটা করতে হবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এবং আইনের শাসন বজায় রেখে।

ইমরানের গ্রেপ্তার অবৈধ : সুপ্রিমকোর্ট

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। গতকাল এই রায় দেন তিন বিচারপতির এক বেঞ্চ। তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে বলা হয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।

তিন বিচারপতির বেঞ্চে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিলাল, বিচারপতি মুহাম্মদ আলি মাজহার ও বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহ। বেঞ্চের পক্ষ থেকে তাকে অবিলম্বের মুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে, তাকে আজ ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজির করতে বলা হয়েছে। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটি মেনে নেয়ার জন্য তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় গ্রেপ্তারের ঘটনাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় দিল সর্বোচ্চ আদালত।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেহমুদ কোরেশি গ্রেপ্তার : মেহমুদ কোরেশি পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে পরিচিত। ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে এবং বিক্ষোভ দমাতে পাকিস্তানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে অন্য অনেক শীর্ষ নেতার পাশাপাশি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশিকেও গ্রেপ্তার করা হয়। টুইটারে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সাদা পোশাকের লোকেরা সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশিকে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রস্থানের আগে দলীয় কর্মীদের দিকে হাত নাড়তেও দেখা যায় তাকে।

ইসলামাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত পিটিআই নেতা শাহ মাহমুদ কোরেশি, আসাদ উমর, ফাওয়াদ চৌধুরী, জামশেদ ইকবাল চিমা, ফালাকনাজ চিত্রালি, মুসাররাত জামশেদ চিমা এবং মালেকা বোখারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এক টুইটে পুলিশ বলেছে, শান্তিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে হুমকির জন্য সুচিন্তিত পরিকল্পনার অধীনে অগ্নিসংযোগ এবং সহিংস বিক্ষোভের অভিযোগে ইমরানের দলের এসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, সমস্ত গ্রেপ্তার আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আরো নেতাকে গ্রেপ্তার হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া ‘জনগণের মধ্যে গুজব ও উসকানি না ছড়াতেও’ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ। কারেশিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ‘অজ্ঞাত স্থানে’ নিয়ে গেছে।