ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আল-কাদির ট্রাস্ট মামলা

দুই সপ্তাহের জামিন পেলেন ইমরান খান

দুই সপ্তাহের জামিন পেলেন ইমরান খান

আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় দুই সপ্তাহের জামিন পেলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গতকাল হাইকোর্টে দুই বিচারপতির বেঞ্চে তার জামিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পিটিআই প্রধানের দুই সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

এর আগে, গতকাল সকালে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) ২ নম্বর কোর্টরুমে প্রায় ১ ঘণ্টা বিলম্বের পর শুনানি শুরু হয়। তবে আদালত কক্ষে ইমরানের পক্ষে স্লোগান শুরু হতেই নামাজের বিরতি দিয়ে বেরিয়ে যান বিচারপতিরা।

একদিন আগে পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্ট আদালত চত্বর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার বেআইনি ঘোষণা করেন। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুসারেই গতকাল হাইকোর্টে বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেব ও বিচারপতি সামান রাফাত ইমতিয়াজের বেঞ্চে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইমরানের জামিন আবেদনের শুনানির আয়োজন করা হয়।

এদিন আদালত কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পিটিআই প্রধান জানান, গ্রেপ্তারের পরে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরোর (এনএবি) কর্মকর্তারা ল্যান্ডফোনের মাধ্যমে স্ত্রীর সঙ্গে তাকে কথার বলার অনুমতি দিয়েছিলেন।

তখন সাংবাদিক পাল্টা প্রশ্ন করেন, তাহলে সুযোগ পেয়ে ইন্টারনেট ব্যক্তিত্ব ও পিটিআই নেত্রী মুসাররাত চিমার কাছে কেন ফোন করেছিলেন ইমরান খান? জবাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ফোনে পাচ্ছিলেন না।

গ্রপ্তার হবেন ভেবেছিলেন কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে ইমরান খান বলেন, আমি শতভাগ নিশ্চিত ছিলাম, আমাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

এ পর্যায়ে আদালত কক্ষে পিটিআই প্রধানের পক্ষে স্লোগান শুরু হয়। আদালতের কর্মীরা স্লোগান বন্ধের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তখন বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেব বলেন, এটি গ্রহণযোগ্য নয়। পরে জুমার নামাজের বিরতির জন্য শুনানি মুলতুবি করা হয়। স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটায় (বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টা) ফের শুরু হয় শুনানি।

এর আগে, বিরাট গাড়িবহরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে পৌঁছান পিটিআই প্রধান ইমরান খান। সেখানে আগে থেকেই মোতায়েন ছিল বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও রেঞ্জার্স। ইমরান খানের আইনজীবী ফয়সাল হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমরা আশাবাদী, হাইকোর্ট জামিন দেবে।

ইমরান খানের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি। বৃহস্পতিবার রাতে ইসলামাবাদ পুলিশ লাইনসের রেস্ট হাউসে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে যান তিনি। এর আগে পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্ট ইমরানের গ্রেপ্তারকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেয়। গতকাল এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি বৃহস্পতিবার রাতে পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে পুলিশ লাইনসের পুলিশ রেস্ট হাউসে দেখতে যান।

এদিকে, ইমরান খান জোর দিয়ে বলেছেন, একজন চাকরিরত সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ কেবল অভিযোগই নয়, বাস্তবতা। তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুপ্রিমকোর্টে বিদেশি এক মিডিয়া প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। ওই সাংবাদিক ইমরানকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, একজন চাকরিরত সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন বলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না। অন্যদিকে মিডল ইস্টার্ন নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরান খান বলেছেন, বিরোধীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা সম্ভব হবে না, কারণ তারা সংবিধানে বিশ্বাস করে না।

প্রধান বিচারপতির পরামর্শের বিষয়ে এক সংবাদকর্মী তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ইমরান মনে করিয়ে দেন, সংবিধান নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে কিন্তু তারা (সরকার) তা এড়িয়ে যাচ্ছে। এখন সংবিধান মেনে চলা প্রয়োজন এবং এর পরে কীভাবে এগোনো যায়, তা দেখা যাবে।

একজন আইনজীবী তাকে বলেন, পিটিআই মহাসচিব আসাদ উমর, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি এবং সাবেক মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে ইমরান ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং জিজ্ঞাসা করেন, কেন তাকে আগে জানানো হয়নি, যাতে তিনি আদালতে এই সমস্ত বিষয় তুলে ধরতে পারতেন। একজন সংবাদকর্মী ইমরানকে লাহোরের ঊর্ধ্বতন সেনা কমান্ডারের বাসভবনে হামলার নিন্দা করবেন কি না, জিজ্ঞেসা করেন। ইমরান তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, যেহেতু তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না, তাহলে কীভাবে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত