ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ডা. আতিকের অনিয়ম

তদন্তে ইউজিসির কমিটি

তদন্তে ইউজিসির কমিটি

বিএসএমএমইউ’র অস্থায়ী মেডিক্যাল অফিসার থেকে পূর্ণাঙ্গ অধ্যাপক হওয়া প্রতিষ্ঠানটির ট্রেজারার ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে চাকরি স্থায়ীকরণ, পদোন্নতি জালিয়াতিসহ অর্থ আত্মসাতের উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ মঞ্জুরি কশিমন (ইউজিসি)। গতকাল মঙ্গলবার উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ইউজিসির যুগ্ম সচিব জাফর আহম্মদ জাহাঙ্গীর স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।

অফিস আদেশে বাংলাদেশ মঞ্জুরি কশিমনের (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) সদস্যকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।

৩০ এপ্রিল দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের প্রথম পাতায় ‘বিএসএমএমইউ’র ট্রেজারার ডা. আতিকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, অস্থায়ী মেডিক্যাল অফিসার থেকে পূর্ণাঙ্গ অধ্যাপক’ শিরোনামে বিএসএমএমইউ ট্রেজারার ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে চাকরি স্থায়ীকরণ, পদোন্নতি জালিয়াতিসহ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হয়।

অভিযোগে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অতিরিক্ত বয়সের কারণে প্রায় ২৪ বছর আগে ৩১ বছর ১ মাস ১৯ দিন বয়সে ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার এবং বক্ষব্যাধি বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু মেডিক্যাল অফিসার থেকে পরবর্তীতে অনিয়মের মাধ্যমে নিজের চাকরি স্থায়ী করণসহ জালিয়াতির মাধ্যমে একাধিক পদোন্নতির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি রয়েছে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও।

এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হয়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বাংলাদেশ ও আমেরিকার দ্বৈত নাগরিক। তার সন্তানরা সবাই আমেরিকায় থাকেন। ডা. আতিক মেডিক্যাল অফিসার থেকে নিজ বেতনে সহকারী অধ্যাপক এবং পরবর্তীতে সহযোগী এবং সর্বশেষ অধ্যাপক হওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক অনিয়ম করেছেন। এমনকি নিজের চাকরি স্থায়ীকরণে নিয়েছেন জালিয়াতির আশ্রয়। পাশাপাশি ডাক্তার হয়েও তিনি জোর খাটিয়ে পূর্ত কমিটির সভাপতি ও দুই মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ (ট্রেজারার) হিসাবে দায়িত্ব পালনে অর্থ লোপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এদিকে ইউজিসি থেকে গতকাল প্রকাশিত উক্ত অফিস আদেশে তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে ইউজিসির সদস্য (অর্থ ও হিসাব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) প্রফেসর ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক মো. গোলাম দস্তগীরকে।

ওই আদেশে আরো বলা হয়- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে পদোন্নতি গ্রহণ, তার মেডিক্যাল অফিসার পদের চাকরি নিয়ম বহির্ভূতভাবে স্থায়ীকরণ, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও সিন্ডিকেটের অনুমোদন ব্যতিরেকে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি গ্রহণ, ব্যক্তিগত নথি গায়ের, বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্তকাজ ও ডি-ব্লকে ক্যাপসুল লিফট স্থাপন কাজ থেকে অর্থ লোপাট এবং হাসপাতালের রোগী নিজ ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ সম্বলিত একটি পত্র ইউজিসি বরাবর দাখিল করা হয়েছে।

উক্ত অভিযোগসমূহ তদন্তপূর্বক সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন পেশ করার জন্য নিম্নরূপ কমিটি গঠন করা হলো।

অফিস আদেশে তিনটি কার্যপরিধি নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। সেগুলোতে বলা হয়েছে- (ক) কমিটি বর্ণিত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো নথি, সিন্ডিকেট ও অন্যান্য পর্ষদে বিভিন্ন সময়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত কার্যবিবরণীসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্রাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবেন। (খ) তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট যে কোনো ব্যক্তির বক্তব্য গ্রহণ করতে পারবেন এবং (গ) কমিটি এতদ্বিষয়ে বিধি-বিধান পর্যালোচনাপূর্বক যথাশীঘ্র একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কমিশন কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত