স্মার্ট দেশে স্মার্ট বিমানবন্দর হচ্ছে শাহজালাল

প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  উমর ফারুক আল হাদী

বর্তমান সরকারের আরো একটি নতুন চমক শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। বিশ্বের উন্নত ও অত্যাধুনিক বিমানবন্দরের আদলে নির্মাণ করা হচ্ছে থার্ড টার্মিনাল। এটি চালু হলে বদলে যাবে বিমানবন্দরের দৃশ্যপট। প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ভিশন বাস্তবায়নের একটি মাইলফলক হবে থার্ড টার্মিনাল। বিমানবন্দর থেকে মেট্রোরেল, পাতাল সড়ক ও উড়াল সড়কে যাত্রীরা সরাসরি তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, যাত্রীসেবার মান ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশে হবে স্মার্ট বিমানবন্দর- বলছেন, সিভিল অ্যাভিয়েশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ প্রায় ৮৫ ভাগ শেষ হওয়ার পথে। আগামী অক্টোবর মাসের শেষের দিকে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন থার্ড টার্মিনালের। দৃষ্টিনন্দন ভবন এখন দৃশ্যমান টার্মিনালের। ভবনের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা এবং বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে একটি জাপানি কোম্পানিকে। টার্মিনালের সার্বিক কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। জানতে চাইলে বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এখন স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ডিজিটাল দেশ থেকে এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজ চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় অ্যাভিয়েশন খাতকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। অ্যাভিয়েশন খাতকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখন বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর বিমানবন্দরগুলোর মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। শাহজালালে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন খাত এখন অনেক উন্নত হচ্ছে। থার্ড টার্মিনাল চালু হলে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং, কার্গো হ্যান্ডলিং এবং যাত্রীসেবার মান অনেক বেড়ে যাবে। বিমানবন্দরটি হবে বিশ্বের অত্যাধুনিক উন্নত বিমানবন্দরগুলোর একটি। প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, থার্ড টার্মিনাল চালু হলে এ খাত থেকে দেশের অর্থনীতিতে নতুন করে আয় বাড়বে। এটি হবে উন্নয়নের একটি মাইলফলক। রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি পর্যটন খাতেও আয় বাড়বে। থার্ড টার্মিনাল হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আরো একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ, যা বাস্তবায়নের পথে রয়েছে।

সিভিল অ্যাভিয়েশন জানায়, বিশ্বের উন্নত ও অত্যাধুনিক বিমানগুলোর আদলে যাত্রীসেবাসহ সব ধরনের সেবার মান বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও কার্গো হ্যান্ডলিং সার্ভিস দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করা হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে সব সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। সিভিল অ্যাভিয়েশন আরো জানায়, সবকিছু ঠিক থাকলে থার্ড টার্মিনাল ২০২৩ সালের অক্টোবরে চালু করার লক্ষ্য নিয়ে নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পুরোদমে চালুর আগেই আগস্ট মাস থেকে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং চালু করার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময় ও তারিখ নির্ধারণ করার পর অক্টোবর মাসের শেষের দিকে থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধনের কথা রয়েছে।

সিভিল অ্যাভিয়েশন ও প্রকল্প পরিচালক অফিস জানায়, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের যাত্রীসেবার সব কার্যক্রম দেয়া হচ্ছে বিদেশি কোম্পানিকে। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন করতে সিভিল অ্যাভিয়েশন গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও কার্গো হ্যান্ডলিংসহ যাত্রীসেবার মান বাড়ানোর লক্ষ্যেই জাপানি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। আগামী অক্টোবরে থার্ড টার্মিনাল চালু করা হবে, এর আগে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

প্রসঙ্গত প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরের বর্তমান টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে ৩ নম্বর টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। বর্তমানে ব্যয় আরো ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক একেএম মাকসুদুল ইসলাম বলেন, করোনার সময়ও প্রকল্পের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়নি। দ্রুতগতিতে নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, বড় প্রকল্প হওয়ায় টেন্ডার ঘোষণা, টেন্ডার আহ্বান, সংগ্রহ, দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করতে কিছুটা সময় লেগেছে। তারপরেও ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে থার্ড টার্মিনাল চালু করার সম্ভাবনা রয়েছে।

২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর এ মেগা প্রকল্পটি একনেক বৈঠকে অনুমোদিত হয়। এর আগে ২০১৫ সালে বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ ও সম্প্রসারণের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন ও খসড়া মাস্টারপ্লান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপস্থাপন করা হয়। ২০১৭ সালের ১১ জুন এ প্রকল্পের জন্য চারটি প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেয় সিভিল অ্যাভিয়েশন।

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা: বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা বলেছেন, যে কোনো বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে যাত্রীসেবার মান। বিমানবন্দরে উড্ডয়ন ও অবতরণকারী এয়ারলাইন্সগুলোর যাত্রীদের মালামাল লোড-আনলোড করা, চেক-ইন কাউন্টার সামলানো, বিমানগুলোতে মালামাল উঠানো-নামানো এবং মালামাল, লাগেজ বেল্টে দেয়া, যাত্রীসেবা, প্রকৌশলসেবা ও জিএসই (গ্রাউন্ড সার্ভিস ইকুইপমেন্ট) সেবাই হলো গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা। যাত্রীদের বোর্ডিং কার্ড ইস্যু করার দায়িত্বও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের। কিন্তু জনবল ও যন্ত্রপাতির সঙ্কটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা অত্যন্ত দুর্বল। বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার মান নিয়ে বিমানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ফলে থার্ড টার্মিনালের দায়িত্ব বিমানকে দেয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছে সিভিল অ্যাভিয়েশন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এজেন্ট নিয়োগের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছিল। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী অক্টোবরে থার্ড টার্মিনাল চালু হবে। এজন্য আগামী আগস্ট মাসের মধ্যেই গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কার্যক্রম সম্পূর্ণ করতে হবে। যাত্রীসেবার মানও বাড়ানো হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং যদি ভালো হয় তাহলে যাত্রীসেবার মানও বাড়বে। আমরা যাত্রীসেবার মান বাড়াতেই জাপানি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয়ার এ উদ্যোগ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী এরইমধ্যে ঘোষণা করেছেন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার। আমরা এ লক্ষ্যেই কাজ করছি। বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অত্যাধুনিক করা হয়েছে। জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প হলো, শাহজালাল থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প। আন্তর্জাতিকমানের অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধার এ টার্মিনাল চালু হলে দেশের ইতিহাসে আকাশপথে যোগাযোগের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে। যা বর্তমান সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের একটি মাইলফলক। সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, থার্ড টার্মিনাল হবে বিশ্বের অত্যাধুনিক এবং আন্তর্জাতিক মানের একটি বিমানবন্দর। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক এ প্রকল্পের কাজ আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধনের আগেই গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য খুব দ্রুত টেন্ডারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক যোগ্যতাসম্পন্ন জাপানি কোম্পানিকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

চেয়ারম্যান আলোকিত বাংলাদেশকে আরো বলেন, থার্ড টার্মিনাল হবে স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট অ্যাভিয়েশনের মাইলফলক। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার যে ভিশন নিয়ে কাজ করছেন তারই উদাহরণ হলো শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল। তিনি বলেন, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং, কার্গো হ্যান্ডলিং এবং যাত্রীসেবার মান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে। আছে লাগেজ নিয়ে বিড়ম্বনা। আমরা এর নিরসন চাই। তাই শুধু গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংই নয়, থার্ড টার্মিনালে যাবতীয় অপারেশনাল কাজ বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, থার্ড টার্মিনাল হচ্ছে একটি অত্যাধুনিক বিমানবন্দর। এখানে যাত্রী হয়রানি বা লাগেজ পেতে বিড়ম্বনার কোনো সুযোগ নেই। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে লাগেজ হ্যান্ডলিং, মালামাল লোড-আনলোডসহ অপারেশনাল কাজ দেয়া হচ্ছে আন্তর্জাতিক কোম্পানিকে।

সিভিল অ্যাভিয়েশন জানায়, থার্ড টার্মিনালের যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে ২ কোটিরও বেশি। বর্তমান ধারণ ক্ষমতা আছে মাত্র ৮০ লাখ। কার্গো সক্ষমতা ২ লাখ টন থেকে বেড়ে হবে ৫ লাখ টন। থাকবে ২৪ বোর্ডিং ব্রিজ, বহির্গমনের জন্য ১৫টি চেক-ইন কাউন্টারসহ ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার থাকবে। ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ ৬৫টি বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে। নির্মাণ করা হচ্ছে মাল্টি লেভেল কারপার্কিং ভবন যার পার্কিং সুবিধা থাকবে ১ হাজার ৪৪টি গাড়ি রাখার ব্যবস্থা। বর্তমান ভিভিআইপি কমপ্লেক্স ভেঙে থার্ড টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ভিভিআইপি স্পেস রাখা হচ্ছে। তবে আগের মতো কোনো নির্দিষ্ট ভিভিআইপি কমপ্লেক্স থাকছে না। তিন তলা ভবনবিশিষ্ট এ টার্মিনাল ভবনের আয়তন হবে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। আগের দুইটি টার্মিনাল ভবনের চেয়ে এ ভবনটি চার গুণ বড় হবে।

এছাড়া থাকছে ৩৭টি অ্যাপ্রোণ পার্কিং। ফলে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্কিং করা যাবে। ২৯ হাজার বর্গমিটার এলাকা নিয়ে হচ্ছে আমদানি কার্গো টার্মিনাল। ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই থার্ড টার্মিনাল করার জন্য ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। জাপানের মিতসুবিশি করপোরেশন ও স্যামসাং মিলে গঠিত অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি) এ প্রকল্পের কাজ করছে। টার্মিনালের নকশা তৈরি করেছে বিখ্যাত স্থপতি বোহানি বাহারিন। তিনি এনওসিডি জেডি জয়েন্ট ভেঞ্চার পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের আওতাধীন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিপিজি করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের (সিঙ্গাপুর) স্থপতি। প্রথমে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হলে এ প্রকল্পের ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছে সিভিল অ্যাভিয়েশন। সরকারি তহবিল থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে। বাকি প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা (জাইকা) থেকে দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের তদারকের দায়িত্বে আছে সিভিল অ্যাভিয়েশনের প্রকৌশল বিভাগ এবং নিপ্পন জাপান।

বিমানযাত্রীদের যোগাযোগের যুগান্তকারী সেবার উদ্যোগ: সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে সরাসরি থার্ড টার্মিনালে যাতায়াত করা যাবে। শুধু তাই নয়, বিমানবন্দর থেকে পাতাল রেলে খিলক্ষেত হয়ে কাওলা যাওয়া যাবে। সেখান থেকে সুড়ঙ্গপথে সরাসরি যাওয়া যাবে থার্ড টার্মিনালে। শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালে যাওয়ার জন্যই কাওলাতে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি স্টেশন। সংশ্লিষ্টরা জানান, কাওলা স্টেশন থেকে ২০০ মিটারের একটি টানেল যুক্ত হচ্ছে থার্ড টার্মিনালে। এজন্য এ টানেলের কাজও শুরু হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে কাওলা, খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচার পার্ক, রামপুরা-মালিবাগ-রাজারবাগ হয়ে কমলাপুরে সংযুক্ত হচ্ছে মেট্রোরেল-১। এসব যোগাযোগের কারণে বিমানবন্দর ব্যবহারকারীদের চলাচলের যুগান্তকারী সহজ ও সুন্দর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।