স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত

নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত শেখ হাসিনা

প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ৪৩তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস গতকাল বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকাসহ সারা দেশে আলোচনা সভা, মসজিদে-মসজিদে প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া-মিলাদ, গরিব-অসহায় এবং পথচারী-এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজ ঐতিহাসিক ১৭ মে। আমাদের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। আমাদের ইতিহাসে বাক পরিবর্তনের এক ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণ। আমাদের ইতিহাসের মোড় পরিবর্তনের এক ঐতিহাসিক মাইনফলকের নাম ১৭ মে।’ এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, সহযোগী-ভ্রাতিপ্রতিম এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এদিকে মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, উপাসনালয়ে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে চার্চে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়, রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়। নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা: বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন তিনি। গণভবনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাকে শুভেচ্ছা জানান।

প্রথমে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, শাহাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজমসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নেতৃত্বে সংগঠনের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান। একইভাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেসবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর নেতৃত্বে সংগঠনটির পক্ষে শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান সংগঠনের পক্ষে নেত্রীকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের শুভেচ্ছা জানান। মহিলা আওয়ামী লীগের পক্ষে সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি ও সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা নস্যাৎ করে দিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত চলছে। বাংলাদেশের বর্তমান অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখাই হবে আমাদের মূল প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, সৎ উদ্দেশ্যে কাজ করলে যে কোনো জায়গাতেই সফলতা নিয়ে আসা সম্ভব হয়, সেটা মেনেই আমি কাজ করি। দেশের মানুষের উন্নত জীবন নিশ্চিত করাই আমার বড় লক্ষ্য। শেখ হাসিনা বলেন, ভোটের অধিকার আর গণতন্ত্র কবে ছিল এই দেশে? ৭৫-এর পর তো ভোট চুরির সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল। বরং বিভিন্ন সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনকে গণমুখী করে মানুষকে ভোটাধিকারের বিষয়ে সচেতন করতে কাজ করেছে কেবল আওয়ামী লীগ। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স থেকে ছবিসহ নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও ন্যাশনাল আইডি কার্ড; সবই তো আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই হয়েছে। তারপরও কেউ যদি আমাদের ভোটাধিকার আর গণতন্ত্রের ছবক দিতে আসে। তাদের বিষয়ে আসলে কিছুই বলার নেই আর। ভোট ডাকাতরা এখন গণতন্ত্র আর ভোটের অধিকারের কথা বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধভাবে জন্ম নেয়া দলের কাছে শুনতে হয় এ সমস্ত কথা। এগুলো মাঠের কথা মাঠেই থাকবে; আমরা থাকব জনতার সঙ্গে। কারণ জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেই তো আমরা ক্ষমতায় এসেছি। মানুষের ওই বিশ্বাস-আস্থাটাই আমাদের একমাত্র শক্তি, আর কোনো শক্তি নেই। দেশের জনগণই আওয়ামী লীগের একমাত্র বন্ধু, এই কথাটা সবাইকে স্মরণে রাখতে হবে। নির্বাসন জীবন থেকে ফিরে এসে, কোনো স্বজনকে নয়। পাশে পেয়েছিলাম এ দেশের অগণিত মানুষকে। সেই থেকে জনগণই আমার পরিবার। আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল জনগণের জন্য কাজ করে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা আসলে লুটেরা দল। খুনি-সন্ত্রাসী-যুদ্ধাপরাধীদের দল কখনো যেন আর দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ছয় বছরের নির্বাসন জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের এ দিনে দেশের মাটিতে ফিরে আসেন তিনি। তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি সেদিন বিকালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। সেদিনও সারা দেশ থেকে আসা লাখো মানুষ তাকে স্বাগত জানান, ভালোবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তারই ধারাবাহিকতায় আজো শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।