নেতাকর্মীদের ওবায়দুল কাদেরের কড়া হুঁশিয়ারি

ব্যক্তিস্বার্থে দলের ইমেজ নষ্ট করা যাবে না

প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যক্তিস্বার্থে দলের ইমেজ নষ্ট করা যাবে না বলে দলীয় নেতাকর্মীদের কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নির্বাচন কয়েক মাস পরে, এখনই কেউ কেউ চা দোকানে বসে একে অন্যের গিবত শুরু করেছে। দল যারা করবেন, দলের নিয়ম মেনে চলতে হবে।

গতকাল বিকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা আওয়ামী লীগ, বিএনপি না। এটা বঙ্গবন্ধুর দল, শেখ হাসিনার দল। এখানে পাল্টাপাল্টি চলবে না। আমরা পাল্টাপাল্টিতে নেই। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা শান্তির সমাবেশ করি, শেখ হাসিনার নির্দেশে। এসিআর দেখে আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেবেন শেখ হাসিনা। আমরা কাউকে আক্রমণ করব না। আক্রান্ত হলে কাউকে ছাড়ব না।

স্যাংশন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ ভয় পায় না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মিস্টার ফখরুল, মিস্টার মোশাররফ, আমাদের শক্তি জনগণ। ওই স্যাংশনকে আমরা ভয় পাই না। কাজেই হুমকি ধামকি দেবেন না। আপনাদের মনে চাইলে আসবেন। ইলেকশন হতে দেবেন না, এটা কারও বাপ-দাদার সম্পত্তি? এত বড় আস্ফালন পেলেন কোথায়?’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রান্তিক মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক-এর উদ্যোগ নেন। কিন্তু বিএনপি তা বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে জাতিসংঘ আজ তার স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃতি দিয়ে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এই কমিউনিটি ক্লিনিক তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, এ দেশের মানুষের জন্য। ওরা (বিএনপি) বলে, শেখ হাসিনা বিদেশে গিয়ে খালি হাতে ফিরে আসে। সর্বশেষ এই অর্জন দেখালাম। যে কমিউনিটি ক্লিনিক তোমরা পরিত্যক্ত করেছ, শেখ হাসিনার সেই কমিউনিটি ক্লিনিক বিশ্ব স্বীকৃতি পেয়েছে। শেখ হাসিনা খালি হাতে ফেরেনি। বিশ্বব্যাংক ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ সহায়তা বাংলাদেশকে দিয়েছে। খালি হাতে ফেরেনি। আইএমএফ বলেছে, বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা আছে, তাই আমরা ঋণ সহায়তা দিয়েছি। আইএমএফ প্রধান, বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা খালি হাতে ফেরেননি। আমরা গায়ে পড়ে কোনো দেশে যাইনি। শেখ হাসিনা নালিশ করতে কোনো দেশে যাননি। বাংলাদেশের অর্থনীতি যেন আরও সবল হতে পারে, সে কারণে শেখ হাসিনা জাপান গেছেন। বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ফখরুল লজ্জা করে না? ব্রিটেনে নাকি বৈঠক হয়? ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনামি বলেছেন, আমরা শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করছি।’ তিনি আমাদের প্রেরণা। বিএনপির নেতাদের মন ছোট। বাংলাদেশের বড় অর্জনের প্রশংসা করতে তারা জানে না। ফখরুলরা, আমীর খসরুরা বাংলাদেশ বিদেশে যে সম্মান পায়, তা বলতে ভুলে যায়। বিএনপির আর আশা নেই জানিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন তো! পথ হারিয়ে পদযাত্রা। লোকে বলে পতন যাত্রা। পাবলিক না থাকলে কিসের আন্দোলন। তিনি বলেন, জ্বালা! বড় জ্বালা! কেন এত অর্জন? শেখ হাসিনার অর্জন বিএনপির অন্তর্জ¡ালা। জ্বালায় জ্বালায় এরা মরে। আছে গলাবাজি। আন্দোলনে গিয়ে হোঁচট খেয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, ড. দীপু মনি, বাহাউদ্দীন নাছিম; সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, সুজিত রায় নন্দী; প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, উপ-প্রচার সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামিম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি; ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির; যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজি, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি; মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা উপস্থিত ছিলেন।