ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বান্দরবানে কেএনএফের হামলা

দুই সেনাসদস্য নিহত গুলিবিদ্ধ দুই কর্মকর্তা

ব্যাপক অভিযান শুরু
দুই সেনাসদস্য নিহত গুলিবিদ্ধ দুই কর্মকর্তা

পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানে সেনা টহলে হামলার ঘটনায় দুই সেনাসদস্য নিহত ও আরো দুই সেনা কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- সেনা বাহিনীর ২৮ বীরের সৈনিক আলতাব আহমেদ ও মোহাম্মদ তৌহিদ। গুলিবিদ্ধরা হলেন- মেজর মনোয়ার ও ক্যাপ্টেন ইশতিয়াক আহমেদ।

গতকাল বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইসপিআর)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- সন্ত্রাসীদের অবস্থানের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে বের হয় সেনা বাহিনীর একটি দল। গত মঙ্গলবার দুপুরে পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তে রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের লংবক্র পাহাড়ে গেলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে সেনা বাহিনীর রুমা জোনের-২৮ বীরের সৈনিক আলতাব আহমেদ ও মোহাম্মদ তৌহিদ নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন- মেজর মনোয়ার ও ক্যাপ্টেন ইশতিয়াক আহমেদ। সবাইকে হেলিকপ্টারে করে সেখান থেকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়। আহতরা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া এ হামলায় স্থানীয় আরো পাঁচজন আহত হয়েছেন। এদিকে, ঘটনার পর ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে।

আইএসপিআর জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার বান্দরবানের রুমা উপজেলার অন্তর্গত সুংসুংপাড়া সেনা ক্যাম্পের আওতাধীন জারুলছড়িপাড়া নামক স্থানে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানার খবর পাওয়া যায়।

এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সুংসুংপাড়া আর্মি ক্যাম্প থেকে মেজর মনোয়ারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টহল দল দ্রুততার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানে অভিযানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। টহল দলটি জারুলছড়িপাড়ার কাছে পানির ছড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সন্ত্রাসীদের ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলিবর্ষণের মুখে পড়ে। এতে দুইজন অফিসার ও দুইজন সৈনিক আহত হন। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে হেলিকপ্টারে চট্টগ্রামে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত দুই সৈনিক মারা যান। আহত দুই কর্মকর্তা বর্তমানে চট্টগ্রাম সিএমএইচে চিকিৎসাধীন।

আইএসপিআর আরো জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার গহীন অরণ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অরাজক পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

দেশমাতৃকার জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদ সেনা সদস্যদের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে সেনাবাহিনী প্রধান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ও তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, এক বছর ধরে বান্দরবানে নতুন গজিয়ে ওঠা বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের তৎপরতা দমন করতে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। অভিযানে কেএনএফের ১৭ জন সদস্যকে আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষে মারা গেছে স্থানীয় লোকজনসহ ১৫ জন। সন্ত্রাসী তৎপরতার কারণে গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বান্দরবানের রুমা রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত