পর্যটন মেলা ঢাকা ট্রাভেল মার্ট উদ্বোধন

দেশি-বিদেশি ৫০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে

প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পর্যটন করপোরেশন হওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। গতকাল রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে তিন দিনব্যাপী ভ্রমণ ও পর্যটন মেলা ‘এয়ার এস্ট্রা ঢাকা মার্ট ২০২৩’ শুরু হয়েছে। ঢাকা ট্রাভেল মার্টের ১৮তম আসরটি আয়োজন করছে ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর। বেসরকারি খাতের এয়ারলাইন এয়ার এস্ট্রা মেলাটির টাইটেল স্পন্সর। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এবং ইস্টার্ণ ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) যথাক্রমে প্রিমিয়াম স্পন্সর এবং ব্যাংকিং পার্টনার হিসেবে আয়োজনে সহায়তা করছে।

ভ্রমণ ও পর্যটন মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আক্ষেপ প্রকাশ করে সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, পৃথিবীর সব জায়গায় ট্যুরিজম ও কালচার এক জায়গায় থাকে, অথচ আমাদের দেশে ট্যুরিজম চলে গেছে বিমানের সঙ্গে। বিমানে করে পর্যটক আসে, সেজন্য পর্যটন করপোরেশন বিমান মন্ত্রণালয়ে সঙ্গে থাকবে।

কেএম খালিদ বলেন, পৃথিবীর সব পর্যটক যে যেখানেই ঘুরতে যাক, সেখানে তারা ঐতিহাসিক স্থানগুলো দেখতে যায়। সেই ক্ষেত্রে আমাদের দেশে কিছু ঐতিহাসিক স্থান অত্যন্ত আকর্ষণীয়। পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, খুলনা ষাট গম্বুজ মসজিদ এবং রাজশাহী পুঠিয়া জমিদার বাড়ী দৃষ্টিনন্দন স্থান। এমন অনেক দৃষ্টিনন্দন স্থান রয়েছে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ৫১৭টি স্থাপনা গেজেট করা আছে। তিনি বলেন, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) হওয়া দরকার। তা না হলে পর্যটন সেক্টরকে এগিয়ে নেয়া কঠিন হবে। ঢাকার পাশর্^বর্তী পানাম সিটিতে বছরে ২০ লাখ দর্শক এবং সোনারগাঁয়ে ১৫ লাখ দর্শক দেখতে আসে। লালবাগ কেল্লা ও আহসান মঞ্জিল দেখতে বহু পর্যটক আসছে।

তিনি বলেন, ‘আট থেকে দশ বছর আগে পর্যটন মেলায় আমি উপস্থিত ছিলাম। তখন আজকের চেয়ে আরো বেশি জমজমাট ছিল পর্যটন মেলা। সেদিন মুক্ত জায়গায় মেলা হয়েছিল।

আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. রাহাত আনোয়ার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান, বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী আবু তাহির মোহাম্মদ জাবেদ, এয়ার এস্ট্রার প্রধান নির্বাহী ইমরান আসিফ, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, ইস্টার্ণ ব্যাংক লিমিটেডের হেড অব কম্যুনিকেশন্স অ্যান্ড এক্সটার্নাল এফেয়ার্স জিয়াউল করিম এবং বাংলাদেশ মনিটর সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম।

অনুষ্ঠানে কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের পর্যটন খাতের উন্নয়নে সব স্টেকহোল্ডারদের পারস্পরিক যোগাযোগ ও মতবিনিময়ের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদানই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। একদিকে এই মেলাটি বিক্রেতাদের জন্য নিজস্ব পণ্য ও সেবা প্রদর্শন ও প্রচারের একটি সুবর্ণ সুযোগ, তেমনি অন্যদিকে গ্রাহকদের জন্য তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী নিজের পছন্দ মতো সরাসরি সেবা ক্রয় করার অনন্য সুবিধা’।

তিনি আরো বলেন, এবারের ঢাকা ট্রাভেল মার্টে দেশি-বিদেশি ৫০টির অধিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান, ৬৫টি স্টল ও সাতটি প্যাভিলিয়ন তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করছে। অংশ গ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছে জাতীয় পর্যটন সংস্থা, এয়ারলাইন, ট্যুর অপারেটর, হোটেল, রিসোর্ট, ট্রাভেল এজেন্সি, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও অন্যান্য পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। অংশ গ্রহণকারী দেশগুলো হচ্ছে- ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সৌদি আরব, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাংলাদেশ।

মেলা চলাকালীন অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ভিজিটরদের জন্য তাদের সেবা ও পণ্যের ওপর বিশেষ মূল্যছাড় প্রদান করছে। দেশি-বিদেশি গন্তব্যে এয়ার টিকিট, তারকা হোটেলগুলোতে রুম বুকিং, ভ্রমণ প্যাকেজ ইত্যাদি মূল্যছাড়ে অন্তর্ভুক্ত। মেলায় আগামীকাল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভিজিট করা যাবে। মেলায় প্রত্যেকের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিদিন প্রবেশ কুপনের ওপর র‍্যাফেল ড্র আয়োজন করা হবে। র‍্যাফেল পুরস্কারের মধ্যে থাকবে কায়রো, দুবাই, মালে, ব্যাংকক, কলকাতা, কক্সবাজার, সিলেট, চট্টগ্রাম ভ্রমণের জন্য এয়ার টিকিট, তারকা হোটেলে রাত্রীযাপন এবং ফ্রি লাঞ্চ ও ডিনারের ব্যবস্থাসহ বেশকিছু সুযোগ-সুবিধা থাকবে।