সম্মেলনের মধ্য দিয়ে স্বীকৃতি পেল ওলামা লীগ

ষড়যন্ত্র ঠেকাতে নেতাকর্মীদের সক্রিয় থাকতে বললেন ওবায়দুল কাদের

কমিটি ঘোষণা হয়নি

প্রকাশ : ২১ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ প্রতীক্ষার প্রহর শেষে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের আনুষ্ঠানিক প্রথম ত্রি-বার্ষিকী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ওলামা লীগের এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে স্বীকৃতি পেল সংগঠনটি। ওলামা লীগকে সহযোগী সংগঠন করা হবে নাকি সমমনা সংগঠন করা হবে তা ঠিক করা হয়নি। সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত ওলামা লীগকে ঐক্যবদ্ধ প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসা হলো।

ওলামা লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ওলামা লীগের যারা রাজপথের আন্দোলনে ছিলেন, পুলিশের হামলার মুখেও যারা রাজপথ ছাড়েননি, নেত্রীর নির্দেশ অমান্য করেননি, তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল, সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠিত হবেন। সময় লেগেছে তবে আজকের সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের সেই প্রত্যাশা পুরণ হয়েছে। আমি ১০১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিচ্ছি যাতে ত্যাগী ও সিনিয়র নেতারা স্থান পাবেন। কমিটিতে যেন বাস্তবতা ও রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন থাকে। নেতাদের অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলায় আসতে হবে। ওয়ান ইলেভেনের সময় রাজপথে ওলামা লীগের কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। মাঝে কিছুটা স্বেচ্ছাচারিতা দেখা গিয়েছিল। তবে সেসব কাটিয়ে উঠে যেন একটি যোগ্য কমিটি তৈরি হয়। দলাদলি করে বদনাম কামাবেন না। এসব করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক বলেন, ওলামা লীগের নামে চাঁদাবাজি করবেন না। বদনাম যেন না হয়। প্রোগ্রাম করবেন পয়সা না থাকলে আমাকে বলবেন। নেত্রীকে আমি বলবো, আপনাদের খরচ যেটা প্রয়োজনীয় সেটা দিবো। কিন্তু আপনারা চাঁদাবাজি করে দুর্নাম কামাবেন না। এটা অতীতের অনেকেই করেছে। আপনারা খুব ভালো করেই জানেন। আমরা ওলামা লীগকে একটি সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত নীতি আদর্শের প্রতি অনুগত বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের সৈনিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। শেখ হাসিনার পরীক্ষিত সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

ওলামা লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের একটা রাজনীতি আছে, সেই রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন থাকবে ওলামা লীগে। গঠনতন্ত্রও থাকতে হবে। নেতাকর্মীদের আশা ও বাস্তবাতার প্রতিফল ঘটিয়ে একটি কমিটি ওলামা লীগকে উপহার দেয়া যায়, সেই ব্যাপারে সিনিয়র কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনা করে একটি প্রস্তাব নিয়ে আমি নেত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে তা বাস্তবায়ন করব। সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও অন্যান্য পদে যারা আসবেন তারাও গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে কেউ ভবিভ্যষতের নেতৃত্ব। আবার ঢাকা মহানগরে দুটি শক্তিশালী কমিটি করতে হবে। ওলামা লীগ বিভিন্ন ধারায় চলেছে। আওয়ামী লীগ এক কথা বলছে, পেছন থেকে ওলামা লীগের কয়েকজন অন্য কথা বলেছেন। বিরোধী কথা বার্তা বলা যাবে না। শেখ হাসিনার সরকার যে কথা বলবে তার সঙ্গে মিলিয়ে আপনাদের কথা বলতে হবে। বিরোধ করা যাবে না।

সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র ঠেকাতে ওলামা লীগকে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কীভাবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা যায়, এটা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত কাজ করছে। চোখ কান খোলা রেখে আপনাদের রাজপথে থাকতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্র যাতে শেখ হাসিনার সরকারকে হটাতে না পারে, সেই জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তুলাধোনা: ওলামা লীগের সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তুলাধোনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদের। ‘বর্তমান সরকারের সময় শেষ’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, কবে নাগাদ সরকারের সময় শেষ হচ্ছে, সময়টা কতো, কয়দিন আর সময় পাবো? দিনক্ষণ টা একটু বলুন। ফখরুল সাহেব, কবে সময় শেষ, আর নাকি সময় দিবেন না, তো বলেন না কেন দিন-ক্ষণ তারিখ বলেন, সময় বলেন আমরাও একটু তৈরী হই। কিভাবে ঝড় আসে, ঠাকুরগাও থেকে আসে না লন্ডন থেকে আসে। কোথা থেকে ঝড় আসবে সেটা একটু বলে দিন, কত নম্বর বিপদ সংকেত সেটাও একটু বলে দিন। তাও বলে দিন সরকারকে বিদায় দেবেন সরকারেরও তো একটা প্রস্তুতি আছে। সেতুমন্ত্রী বলেন, দশ বছর ধরে শুনতে পাচ্ছি সরকারের সময় শেষ। এই সরকারের সময় কত এটা জানেন মহান সৃষ্টিকর্তা, এই সরকারের সময় কত এটা জানে এই দেশের জনগণ। এই সরকারের সময় পরিবর্তন হবে কি না, সেটা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগন এবং আল্লাহপাক।

ওলামা লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান। সম্মেলন হলেও কমিটি ঘোষণা হয় নাই। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করে নতুন কমিটি আসতে পারে বলে জানিয়েছেন ওলামা লীগের নেতারা।