ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গাজীপুর সিটির ভোটগ্রহণ কাল

সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে ইসি

সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে ইসি

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গাজীপুর সিটি ভোটে কাল বৃহস্পতিবার বড় পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোট সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে ভোটের দিন সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এ ভোটের মাধ্যমে ইসির ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টা করা হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, ভোট উপলক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করছে ইসি। কোনো অনিয়ম দেখলে আইনে যেভাবে অ্যাকশন নেয়ার কথা সেভাবেই নেয়া হবে। গাইবান্ধায় তো কেবল নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে। এখানে তার চেয়েও কঠিন অ্যাকশন হবে বলে ইসি জানিয়েছে। ভোটের দিন সব কেন্দ্রে লাইভ ক্যামেরা দেখে পর্যবেক্ষণ করবে কমিশন। কোথাও কোনো অনিয়ম হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিবে।

গতকাল মঙ্গলবার নর্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে সে যে দলেরই হোক না কেন তাকে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে। অনিয়মের মাত্রার ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কী নেয়া হবে, তা নির্ভর করবে। ব্যক্তির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, অনিয়মের মাত্রার ওপর শাস্তি নির্ভর করবে।

ভোটে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সবগুলোই (৪৮০টি) গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র আমাদের কাছে। তবে এর মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ৩৫১টি কেন্দ্র। আর ১২৯টিকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নত করা হয়েছে।

মো. আলমগীর বলেন, শিল্প এলাকা বিধায় গাজীপুর সিটিতে বিভিন্ন ধরনের মানুষের বসবাস। তাই মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবণতাও বেশি। তবে নির্বাচনি পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত ভালো। কোনো থ্রেড না থাকলেও যেহেতু শিল্প এলাকা তাই দুষ্কৃতকারীরা বা অসৎ উদ্দেশ্য যাদের থাকে তারা যেন অন্যায় পরিস্থিতি করতে না পারে, তাই অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

নির্বাচন পরিচালনা শাখা জানায়, গাজীপুর সিটিতে ৫৭টি ওয়ার্ডে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে ৭৬ জন। ১৯ জন জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবে। সেখানে র‌্যাবের ৩০টি টিম থাকবে। বিজিবি থাকবে ২০ প্লাটুন। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ১৯টি ও মোবাইল টিম হিসেবে পুলিশের ৫৭টি টিম থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স থাকবে। অর্থাৎ প্রচুর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। যাতে কোনো রকম বিশৃঙ্খলা না হয়।

এই সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন- মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ। এছাড়া স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিলঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ৮ হাজার ১০০ ইভিএমের মাধ্যমে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন ভোটার তাদের ভোটধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন রয়েছে হিজড়া ভোটার। ৪ হাজার ৪৩৫টি সিসি টিভির মাধ্যমে ঢাকার আগারগাঁও থেকে প্রতিটি ভোটকক্ষ পর্যবেক্ষণ করবে কমিশন। এক্ষেত্রে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে টিভি স্ক্রিনে ভোটের পরিস্থিতি দেখবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৬ জুন ভোট হয়েছে। নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের সময়গণনা শুরু হয় গত ১১ মার্চ। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর বর্তমানে যারা নির্বাচিত রয়েছেন তাদের মেয়াদ শেষ হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত