ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

ডিসিরাই থাকছেন রিটার্নিং অফিসার

ডিসিরাই থাকছেন রিটার্নিং অফিসার

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। তবে এবার প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগে সতর্ক থাকবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিংবা জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন অফিসারদের প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ দিবে না সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

সূত্র জানায়, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এবারও তাদের দায়িত্ব দেয়া হবে। প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ করা হয় বিভিন্ন শ্রেণির অফিসারদের মধ্য থেকে। সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক এবং রাষ্ট্রয়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তারা পদে নিয়োগ পান। এ অফিসারদের মধ্যে দেশবীরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে না।

এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। যাকে যোগ্য মনে করবে তাকে নিয়োগ দেবে।

ইসির কর্মকর্তাদের নিয়োগ বিষয়ে আইন সংশোধন করার কথা সেটা হয়েছে কি না এ বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, কোনো কিছু এ বিষয়ে পরিবর্তন হয়নি। আগের মতো সব আছে। ভোটের আগে কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।

এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনশ সংসদীয় আসনের জন্য ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দিয়েছে ইসি। এদের মধ্যে দুই বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪টি জেলার জেলা প্রশাসককে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সেবার। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা/ সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এবারও একইভাবে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে ইসি। চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভোটগ্রহণ করা হতে পারে। এবার ব্যালটে ৩০০ আসনে ভোট হবে। এর আগে ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, নির্বাচন কমিশন আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে সচিবালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে, যেন তাদের ঘোষিত রোডম্যাপ থেকে প্রস্তুতি পিছিয়ে না থাকে। নির্বাচনের টপ টু বটম, যেমন মালামাল ক্রয় থেকে শুরু করে ভোটকেন্দ্র স্থাপন পর্যন্ত সকল বিষয়ের ওপর তারা রোডম্যাপ অনুযায়ী নির্দেশনা দেন। আমাদেরও বলেছেন, কোন বিষয়ে আমরা পিছিয়ে আছি। তিনি বলেন, মাঠ পর্যায় থেকে আমরা জানতে চেয়েছি, ব্যালট বক্সগুলো কোথায় আছে, কিভাবে আছে, সেগুলোকে যাচাই করে তারা আমাদের প্রতিবেদন দেবে।

এদিকে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনভিত্তিক রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের জন্য ইসি কর্মকর্তারা দাবি জানিয়ে আসছেন গত সংসদ নির্বাচন থেকে। তারা চায় ইসির কর্মকর্তারা সংসদ ভোটের রিটার্নিং অফিসার দায়িত্ব নেবেন। সে দাবি এবারও পূরণ হচ্ছে না বলে সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধানে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত থাকবে এবং কমিশন সংবিধান ও আইনানুযায়ী সংসদ সদস্যদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে।

সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নির্বাচন পরিচালনাসহ কমিশনের অন্যসব দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হবে। আরপিও’র ৫(২) ধারায় সংবিধানের এ নির্দেশনার প্রতিফলন ঘটেছে।

এ ধারায় বলা হয়েছে, সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হবে নির্বাচন কমিশনকে তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা এবং সংবিধানের এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রপতি কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করবেন। সংবিধান জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করলেও কমিশনের পক্ষে এ নির্বাচন পরিচালনা করে মূলত মাঠ প্রশাসন। আর নির্বাচন পরিচালনার মূল ক্ষমতা থাকে রিটার্নিং অফিসারের হাতে।

রিটার্নিং অফিসারের সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে গিয়ে আরপিও’র ২ ধারায় বলা হয়েছে, রিটার্নিং অফিসার হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যাকে আরপিও’র ৭ ধারা মোতাবেক ওই পদে নিয়োগ দেয়া হয় এবং রিটার্নিং অফিসারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালনকারী একজন সহকারী রিটার্নিং অফিসারও এর অন্তর্ভুক্ত হবেন।

উল্লেখ্য, আরপিও অনুযায়ী একটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা প্রদানের জন্য একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। তবে একজন সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে একাধিক সংসদীয় এলাকার জন্য নিয়োগ দেয়া যাবে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত