নওগাঁয় জেসমিনের মৃত্যু

পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে মন্ত্রি পরিষদ গঠিত তদন্ত দল

প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক সুলতানা জেসমিন (৪০) নিহতের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি। গত সোমবার বিকাল ৩টা থেকে তদন্ত দলের সদস্যরা সুলতানা জেসমিনের ছেলে, ভাই ও মামা, বাড়ির মালিক এবং দুইজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তদন্ত দলের সঙ্গে কথা বলে বের হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সার্কিট হাউস চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন, সুলতানা জেসমিনের মামা নাজমুল হক মন্টু ও তার ভাই সুলতান মাহমুদ। তদন্ত দলের আমন্ত্রণে আসা অন্যদেরও তখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

হাইকোর্টের এক আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ মে উচ্ছপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তদন্ত কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, নওগাঁর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং নওগাঁর পুলিশ সুপারের মনোনীত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

নিহত সুলতানা জেসমিনের মামা নাজমুল হক বলেন, নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে ভাগ্নিকে (সুলতানা জেসমিন) র‌্যাব সদস্যরা আটকের পর নওগাঁ হাসপাতাল থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং দাফন কার্য সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত কখন কি কি ঘটেছে, তার বর্ণনা আমাদের কাছ থেকে শুনেছেন। এছাড়া বাসা থেকে জেসমিন ও মামলার বাদী এনামুলের মধ্যকার বিভিন্ন অঙ্কের টাকা লেনদেনের কাগজপত্র আমরা পেয়েছি। সেগুলো তদন্ত কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি আমরা ন্যায়বিচার পাব।

উল্লেখ্য, সুলতানা জেসমিন নওগাঁ পৌরসভা ও চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চাকরি করতেন। তিনি শহরের জনকল্যাণ মহল্লার ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। এ বাসা থেকে নিয়মিত অফিস যাতায়াত করতেন। চলতি বছরের ২২ মার্চ সকালে অফিসে যাওয়ার পথে শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্প তাকে আটক করে। স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে নিয়েই র‌্যাব এ অভিযান চালায়। এনামুল হকের অভিযোগ, জেসমিন ও আল আমিন নামের এক ব্যক্তি তার (এনামুল) ফেসবুক আইডি হ্যাক করে বিভিন্ন জনকে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখানো হচ্ছিল। এভাবে তারা প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।

আটকের পর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সুলতানা জেসমিনকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে এবং পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। রামেকে নিবিড় পরিচর্চা ইউনিট (আইসিইউ) ছিলো। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ মার্চ সকালে তিনি মারা যান। ময়নাতদন্ত শেষে নওগাঁ সরকারি কবরস্থানে মরদেহটি দাফন সম্পন্ন করা হয়। তার মৃত্যুর পর রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগ্ম সচিব এনামুল হকের করা একটি মামলার কথা জানা যায়, যেটি রেকর্ডের সময় ২৩ মার্চ বিকাল। জেসমিন ও তার কথিত সহযোগী আল-আমিনকে এতে আসামি করা হয়। আল-আমিনকে ২৬ মার্চ ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তিনি একজন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট।