বিদেশি ও কর্মীদের চাপ

সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে বিএনপি

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আরিফুল ইসলাম

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণ করার কথা না জানালেও ভেতরে ভেতরে নির্বাচনি প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ভোটে অংশগ্রহণ করতে যেমন বিদেশিদের চাপ রয়েছে তেমনি চাপ রয়েছে দলের কর্মীদের কাছ থেকে। ফলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে দলটি। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানা গিয়েছে।

সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট চায়। সেক্ষেত্রে বিএনপি ভোটে না আসলে তাদের ক্ষতি হবে। আর বিদেশিরা গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। এ কারণে শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে আসছে বলে সংশ্লিষ্ঠ সূত্র জানায়।

জানা যায়, চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি আছে ইসির। তারা চায় অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন।

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আবারো একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে সরকার। মাঠে একাই খেলবেন এবং গোল দেবেন। এখনো সময় আছে, এসব খেলাধুলা বাদ দেন।

সরকার মামলার রায় দিয়ে বিএনপি এবং বিরোধী নেতাদের রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, মৃত্যু যখন ঘনিয়ে আসে, যখন কোনো আশা থাকে না। বর্তমান সরকারের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে। মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন থামানো যাবে না, ক্ষমতা থেকে চলে যেতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির কারণে বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছে। একই সঙ্গে নির্বাচন বানচালে বিএনপির আগুন সন্ত্রাস ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নীলনকশা অনুযায়ী বিদেশি প্রভুদের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে বিএনপি এখন গভীর হতাশায় নিমজ্জিত। তাই বিএনপি আন্দোলনের পথ হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে। ‘বিএনপি না এলে নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণমূলক বিবেচিত হবে না’ গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত আদর্শপরিপন্থি’ এমন অপপ্রচার মুখ থুবড়ে পড়েছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, বিদেশি প্রভুদের তুষ্ট করার জন্য বিএনপি মিলিয়ন ডলার খরচ করে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে। তাদের সেই ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রয়েছে। বিদেশি প্রভুদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে তারা এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির আলোকে সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে নতুন নতুন নাটক সাজিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।

কোথাও নিজেরাই মারামারি করে আহত হয়ে তার দোষ চাপাচ্ছে সরকারের ওপর। কোথাও সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অশ্লীল এবং কুরুচিপূর্ণ স্লোগান ও বক্তব্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উসকানি দিচ্ছে। আবার কোথাও পুলিশের ওপর নিজেরাই বিনা উসকানিতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তার দায় সরকারের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবাহান গোলাপ বলেন, কর্মী ধরে রাখতে আগামীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসবে বিএনপি। আর যদি নাও আসে তাহলে সংবিধানের সম্মান রক্ষার্থে সঠিক সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আসলেই বিএনপি যাবে না বলে আন্দোলন করে। কিন্তু পরে দেখা যায়, তারাই নির্বাচনে আসছে। এবারো তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। তবে আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করলে আওয়ামী লীগ তাদের ছাড় দিবে না।

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। তারা কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) চাচ্ছে বাংলাদেশ একটা আদর্শ নির্বাচন করে পৃথিবীকে দেখাবে আমরা খুব ভালো নির্বাচন করেছি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উন্নয়নে খুবই খুশি। তারা আমাদের উন্নয়নের সহযোগী হতে চায়। এজন্য আমাদের প্রতি তাদের বিশেষ নজর। আমরা একটা আদর্শ মডেল দেশ হতে পেরেছি।