চট্টগ্রামে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা

মা ও দুই ছেলেসহ তিনজন নিহত আহত হয়ে বেঁচে রইল মেয়ে

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামে বাস-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে মা ও দুই ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে কর্ণফুলী উপজেলার ডাকপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর জনতা ধাওয়া করে বাসটি আটক করলেও চালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। নিহতরা হলেন- মা কহিনুর আক্তার (৪৩), দুই ছেলে মিরাজ (২৩) মানিক (১৭)। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে শুধু বেঁচে আছে কহিনুরের মেয়ে সুমাইয়া (১০)। মা ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যুর এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পুলিশ জানায়, নিহত কহিনুর অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে দেখতে দুই ছেলে ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে পটিয়া উপজেলার জিরি গ্রামের শ্বশুর বাড়ি থেকে যাচ্ছিলেন বাপের বাড়ি আনোয়ারায়। সিএনজি টাক্সি নিয়ে আনোয়ারার বারশত ইউনিয়নের গুনদ্বীপ গ্রামে বাপের বাড়ি যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু কহিনুরের মা জুলেহা বেগমের দেখা আর পেলেন না। পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী (পিএবি) সড়কের ডাকপাড়া ও কর্ণফুলী উপজেলার দক্ষিণের শেষ সীমানায় বাস-সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে কহিনুর আকতার ঘটনাস্থলে মারা যান। তার দুই ছেলে মিরাজ (২৩) ও মানিক (১৭) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে কোনোমতে বেঁচে রয়েছে শুধু কহিনুরের শিশুকন্যা সুমাইয়া (১০)। বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় পটিয়া-আনোয়ারা বাঁশখালী (পিএবি) সড়কের ডাকপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কহিনুর আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউনিয়নের গুনদ্বীপ গ্রামের মৃত আবদুস শুক্কুরের কন্যা। তার স্বামী পটিয়া উপজেলার জিরি গ্রামের বাসিন্দা মো. শফিউল আলম। পেশায় তিনি মাহিন্দ্রা চালক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিকলবাহা ওয়াই জংশন (ক্রসিং) থেকে কহিনুর ও তার ছেলেমেয়েদের নিয়ে সিএনজি ট্যাক্সিটি চাতরী চৌমুহনীর দিকে যাচ্ছিল। ট্যাক্সটি আনোয়ারার প্রবেশদ্বার ডাকপাড়ায় এসে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া গতির যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ট্যাক্সিটি দুমড়ে-মুচড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই কহিনুর আকতার মারা যান। এ সময় কহিনুরের দুই ছেলে মানিক, মিরাজ ও শিশু সুমাইয়া গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মানিক ও মিরাজ মারা যান। পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিহত কহিনুরের বড় ছেলে মানিক এবার অনার্সে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল, মিরাজ এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে মাত্র। কন্যা সুমাইয়া চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। মুহূর্তেই সাজানো-গোছানো পুরো পরিবারটি শেষ হয়ে গেল। আনোয়ারা থানার ওসি মির্জা মো. হাসান জানান, দুর্ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান কহিনুর আকতার। পরে আমরা খবর পেয়েছি হাসপাতালে তার আহত দুই ছেলেও মারা যান। এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। ঘটনার পর বড়উঠান রাস্তার মাথা এলাকায় (চট্টমেট্রো-জ-০৭৫৮) বাসটি স্থানীয়রা জব্দ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।