একনেকে ১৮ প্রকল্প অনুমোদন

মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

মূল্যস্ফীতি ও লোডশেডিংয়ে মানুষ কষ্টে আছে। জনগণের কষ্ট লাঘবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

সভার বরাত দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করতেই হবে। প্রথম উদ্দেশ্য আর যেন এটা না বাড়ে। এনাফ, নো মোর। বাজারে স্টক বাড়াতে হবে। ইমপোর্ট অথবা ইন্টারনাল প্রোডাকশন বাড়াতে হবে। দেশব্যাপী বিভিন্ন পয়েন্টে নিত্যপণ্যের স্টক বাড়াতে হবে। সংবেদনশীল আইটেম যেগুলো রাতারাতি দাম বেড়ে যায়, সেগুলোর স্টক বাড়াতে হবে। টিসিবিকে আরো জোরালোভাবে স্টক করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু ঢাকায় স্টক করলে হবে না, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় সংবেদনশীল পণ্যের স্টক বাড়াতে হবে। বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে চাল, ডাল, আলু, তেল, পেঁয়াজ যা আছে সবকিছুর স্টক বাড়াতে হবে। এসব কৌশল দ্রুত নিতে হবে। মূল্যস্ফীতি কেন বাড়ছে গবেষণা করে এর কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া গতকাল একনেক সভায় ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৭ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ৩ হাজার ৮৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৮০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ফরিদপুর জেলাধীন মধুমতি নদীর বাম তীরের ভাঙন হতে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি জাদুঘর সংযোগ রাস্তাসহ অন্যান্য এলাকা সংরক্ষণ ও ড্রেজিং প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের চারটি প্রকল্প- বাগেরহাট জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, নেত্রকোণা জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধন) প্রকল্প এবং নড়াইল জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প; কৃষি মন্ত্রণালয়ের নতুন ৫৬টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগার উন্নয়ন প্রকল্প। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ (৫ম সংশোধন) প্রকল্প, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে ১০টি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ প্রকল্প এবং পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন পটুয়াখালী (১ম সংশোধন) প্রকল্প, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি বিল্ডিং স্থাপন এবং হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন প্রকল্প; জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা (৩য় সংশোধন) প্রকল্প।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট-১ : শেওলা, রামগড়া ও ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন’ (২য় সংশোধন) প্রকল্প; গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাস সড়ককে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি রিংক রোড নির্মাণ প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড (৪২ সংশোধন) প্রকল্প : প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে সাভার সেনানিবাস এলাকায় মিট প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপন এবং ডিজিএফজাই এর টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ এবং কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন (টিআইএইচডিটিসিবি) (২য় সংশোধন) প্রকল্প : রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (২য় সংশোধন) প্রকল্প। এছাড়া ব্যয় ব্যতিরেকে একটি প্রকল্প টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।