নতুন কোরিয়ান কোচে চলছে বিরতিহীন ‘সুবর্ণ এক্সপ্রেস’

স্বস্তিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম যাত্রীরা

প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সাইফুদ্দিন তুহিন, চট্টগ্রাম

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ট্রেনগুলোর কোচ একে একে বদলে ফেলা হচ্ছে। সর্বশেষ কোরিয়া থেকে আমদানি করা আধুনিক উচ্চ গতির নতুন কোচ গতকাল থেকে যুক্ত করা হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের বিরতিহীন ‘সুবর্ণ এক্সপ্রেস’ ট্রেনে। অত্যাধুনিক সুবিধা সম্পন্ন এই কোচগুলোতে যাত্রীরা আরো সুবিধা পাবেন বলে জানান রেলওয়ের কর্মকর্তারা। পর্যায়ক্রমে এই পথের বাকি ট্রেনগুলোতেও আরো নতুন আধুনিক কোচ সংযোজন করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।

রেলওয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র জানায়, নতুন কোচ নিয়ে গতকাল সকাল ৭টায় নির্ধারিত সময়ে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন ত্যাগ করে সুবর্ণ এক্সপ্রেস। নির্ধারিত সময়েই ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছায়। বিকালে ফের ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছে সুবর্ণ এক্সপ্রেস। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচলকারী অনেক ট্রেনে এখন আধুনিক সুপরিসর কোচ। পর্যায়ক্রমে বাকি ট্রেনগুলোতেও আধুনিক কোচ সংযোজন করা হবে। নতুন কোচ ট্রেনের গতির ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনবে কি না- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, গতির ক্ষেত্রে কোচের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। বর্তমান চলাচলকারী যে কোনো ট্রেনের গতি বাড়ানো যায়। তবে এই কোচগুলোতে যাত্রীরা বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবেন। বিশেষ করে বায়ো টয়লেটের মতো নতুন সুবিধা পাবেন সুবর্র্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে, যা বাংলাদেশের ট্রেনগুলোর জন্য একেবারেই নতুন। রেলওয়ের সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিনের পুরোনো চায়না কোচ (সাদা-লাল) পরিবর্তন করে কোরিয়া থেকে আমদানিকৃত আধুনিক দ্রুতগতির ১৮টি কোচ সংযোজন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি। গতকাল সকাল ৭টায় যাত্রী নিয়ে নতুন এসব আধুনিক কোচে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা রওয়ানা দেয়। আগের দিন সোমবার রাতে সুবর্ণতে নতুন কোচগুলো লাগানো হয়েছে। গত ৪ এপ্রিল সকালে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার টঙ্গীর উদ্দেশে কোরিয়ার নতুন কোচ নিয়ে সুবর্ণ এক্সপ্রেসের ট্রায়াল রান চলে। ট্রায়াল রানে পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে ১৮টি নতুন আধুনিক পরিছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত কোচ নিয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। যাত্রীরা নতুন কোচের সেবায় বেশ স্বস্তি প্রকাশ করেন।

জানা গেছে, কোরিয়া থেকে বেশ কয়েক বছর ধরে নতুন কোচ আমদানি করা হচ্ছে। আমদানি করা বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে যুক্ত হতে যাওয়া ১৫০টি মিটারগেজ কোচের মধ্যে ইতিমধ্যে অনেক কোচের সরবারহ পৌঁছে গেছে। আরামদায়ক সিট, অটোমেটিক স্লাইড ডোর, বায়ো টয়লেট, সিসি ক্যামেরাসহ আরো কিছু নতুন প্রযুক্তি যুক্ত আছে এসব কোচে। আগের যে কোনো ট্রেনের সুবিধার চেয়ে কোরিয়ান কোচের সুবিধা বেশি পাবেন যাত্রীরা।

রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ১৮ কোচের সবই কোরিয়ান। এর মধ্যে সাতটি শোভন চেয়ার, চারটি এসি চেয়ার বা স্নিগ্ধা শ্রেণির। একটি পাওয়ার কার, দুটি গার্ডব্রেক ও একটি খাবার গাড়ি রয়েছে। এই ট্রেনে মোট আসনসংখ্যা ৮৯০টি। নতুন কোচ সংযোজিত হলেও ভাড়ার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে দ্রুত গতির ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস দ্রুত গতির ট্রেন হিসাবে পরিচিত। এই ট্রেনের গতি অন্য ট্রেনগুলোর চেয়ে বেশি। তাই যাত্রীদের বেশ চাহিদা থাকে এই ট্রেনের প্রতি। রেলের পাহাড়তলী মেরামত কারখানার এক প্রকৌশলী বলেন, বিমানে সাধারণত যাত্রীদের জন্য বিশেষ সুবিধার বায়ো টয়লেট ব্যবহার করা হয়। দেশের কেনো ট্রেনে এ ধরনের টয়লেট নেই। বর্তমানে চলাচলকারী ট্রেনগুলোতে দুই মুখ খোলা টয়লেট রয়েছে, যা যাত্রীদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। যাত্রীদের স্বাস্থ্যের দিক চিন্তা করেই

সরকার পুরোনো ট্রেন ও নতুন কোচে বায়ো টয়লেট স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে কোচ পরিবর্তন হলে সব ট্রেনের যাত্রীরা এ ধরনের সুবিধা পাবেন।