ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তাপপ্রবাহের পর অঝোরে বৃষ্টি প্রশান্তি নামল জনজীবনে

মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া
তাপপ্রবাহের পর অঝোরে বৃষ্টি প্রশান্তি নামল জনজীবনে

টানা কয়েকদিন তাপপ্রবাহের পর গত বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টির দেখা মেলে। সেদিন কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি, আবার কোথাও হালকা বৃষ্টি হয়। এ বৃষ্টিতে গরম থেকে পুরোপুরি স্বস্তি মিলছিল না জনজীবনে। তাপমাত্রা অনেকটা কমলেও বাতাসে অতিরিক্ত জলীয় বাষ্পের কারণে স্বস্তি ফেরেনি। মেঘলা আকাশ ও গুমোট আবহাওয়ায় ছিল ভ্যাপসা গরম। তবে গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশ মেঘলা। সকাল পৌনে ১০টার দিকে একপশলা বৃষ্টি নামে। কিছুক্ষণ পর তা থেমেও যায়। তবে সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটের দিকে নামে ঝুম বৃষ্টি। কিছুক্ষণ পরেই নামে মুষলধারে বৃষ্টি। রাজধানীর বারিধারা, গুলশান, বাড্ডা, হাতিরঝিল, উত্তরা, রামপুরা, মালিবাগ, মৌচাক, মহাখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামে। বেলা ১১টা ২৫ মিনিটের দিকে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কমায় প্রশান্তি নেমে আসে নগরজীবনে। গতকালের বৃষ্টিকে রহমতের বৃষ্টি বলে অভিহিত করে মানুষ মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করেছে।

বৃষ্টিতে শীতল আবহাওয়ায় গত কয়েকদিনের গরমের কষ্ট অনেকাংশে লাঘব হয়। অসহনীয় লোডশেডিংয়ে কবলে পড়তে হয়নি মানুষকে। বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বেশি ৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় ফেনীতে। ঢাকায় ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল রাজশাহীতে। বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় নীলফামারীর সৈয়দপুরে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে কমে হয়েছে ৩৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ বুধবার পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, যশোর, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছিল, অর্থাৎ এসব অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়েছিল। গতকাল এসব অঞ্চলে তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি কমে দূর হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ।

গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায়; ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেইসঙ্গে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। রাজশাহী, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, নেত্রকোনা ও সিলেট জেলাসহ রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানায় আবহাওয়া অফিস। গতকাল দেশের ৮ বিভাগে কম-বেশি বৃষ্টি নামে। ঝড়-বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় গত কিছুদিন ধরে চলা গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। তাপমাত্রা বেশ অনেকটা কমে গেছে। তবে দুই দিন পর তাপমাত্রা ফের বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত থাকার কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহের দাবদাহের পর বৃহস্পতিবারের বৃষ্টি যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে দেশের মানুষের জন্য। গতকালও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অঝোরে ঝড়েছে বৃষ্টি। এরমধ্যেই সুখবর দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। মৌসুমি বায়ু এখন চট্টগ্রামে। ৪/৫ দিনের মধ্যেই সারা দেশে বর্ষার বৃষ্টি শুরু হবে। এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত থাকার কারণে আজও সারা দেশে বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়া অফিস জানায়, দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমি বায়ু চট্টগ্রাম উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত