খুলনা-বরিশাল সিটি ও দুই পৌরসভায় ভোট কাল

সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কঠোর বার্তা ইসির

প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা সিটি করপোরেশন ও বরিশাল সিটি করপোরেশন এবং কক্সবাজার সদর পৌরসভা ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভা এবং ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা নির্বাচন আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। ভোট উপলক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দুই সিটিতে ইলেক্ট্রোনিক ভোটিং মেশিংয়ে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হবে। অন্য নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে ব্যালটে।

সূত্র জানায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সব ভোট সুষ্ঠু করতে চায় ইসি। এ কারণে গাজীপুরের মতো এসব সিটিতেও সুষ্ঠু ভোট করতে কঠোর বার্তা দিয়েছে ইসি। এর আগে আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য প্রার্থীদের সতর্ক করেছে ইসি। জানা যায়, বরিশাল সিটি নির্বাচন ১২৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০৬টি ঝুঁকিপূর্ণ। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষ্যে গত শনিবার মধ্যরাতের পর বহিরাগত কাউকে নগরীতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। কোনো বৈধ কারণ ছাড়া কোনো বহিরাগতকে শহরে থাকতে দেয়া হবে না। নির্বাচনি প্রচারণার জন্য নগরীতে যারা রয়েছেন তাদের বিষয়ে তিনি বলেন, আইন সবার জন্য সমান। চিকিৎসার মতো বৈধ কারণ না থাকলে আমরা কাউকে থাকতে দেব না। নিয়মিত ভোটকেন্দ্রে ১৮ সদস্যের পুলিশ টিম এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৯ সদস্যের পুলিশ টিম মোতায়েন থাকবে বলে জানান বিএমপি প্রধান। তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মোট ১০টি প্লাটুন মোতায়েন থাকবে। এবার ৩০টি ওয়ার্ডে মোট ১৬৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১১৮ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৪২ জন। ৩০টি ওয়ার্ডে ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪ কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন। খুলনা সিটি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, এবার খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ সিটি করপোরেশনের ভোটার রয়েছেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন। মোট ২৮৯ ভোটকেন্দ্রের এক হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আছেন তালুকদার আবদুল খালেক। তিনি খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদ্য বিদায়ী মেয়র। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে আছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি খুলনা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের প্রার্থী আব্দুল আউয়াল সকাল ও জাকের পার্টির প্রার্থী এসএম সাব্বির হোসেন। আর একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন এসএম শফিকুর রহমান। তিনি গতবার জাতীয় পার্টির হয়ে লড়েন। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন জানান, নির্বাচনে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্র আছে। এর মধ্যে ১৬১টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুষ্ঠু ভোট সম্পন্নের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে কেসিসি। সব কেন্দ্রই সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ চলছে। মো. আলাউদ্দিনের জানান, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে খুলনা মহানগরীতে তিন হাজার ৫৬৭ জন নিরস্ত্র পুলিশ, ৩০০ সশস্ত্র পুলিশ ও চার হাজার ৬৫৭ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এদিকে ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা, কক্সবাজার সদর পৌরসভা ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল। এসবের মধ্যে কক্সবাজার পৌরসভা বেশি অলোচনায়। কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামশেদের বিরুদ্ধে কালো টাকা বিতরণ ও সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ তদন্ত করে পুলিশ সুপারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। গত বৃহস্পতিবার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী জামশেদের ব্যাখ্যা নেয়ার পর নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত দিয়েছে। ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক আশাদুল হক বলেন, নির্বাচন কমিশন এ কাউন্সিলর প্রার্থীর বক্তব্য শুনে অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত হতে পারেনি। সত্যতা নিশ্চিত হতে আরো সাক্ষ্যপ্রমাণ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে। অভিযোগ ফৌজদারি অপরাধ বিবেচনায় ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে ৭ দিনের মধ্যে জানাতে কক্সবাজার পুলিশ সুপারকে চিঠি দেয়া হয়েছে।