ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী

গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় চিনির দাম বেড়েছে

গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় চিনির দাম বেড়েছে

দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ থেকে ২৭ লাখ মেট্রিক টন। তারপরও বর্তমানে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তবে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ার কারণেও স্থানীয় বাজারে চিনির দাম বেড়েছে বলে জানান তিনি। গতকাল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। গতকাল প্রশ্ন উত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। টিপু মুনশি বলেন, দেশে চিনি ও পেঁয়াজের বর্তমান বার্ষিক চাহিদা যথাক্রমে ২০ থেকে ২২ লাখ মেট্রিক টন ও ২৫ থেকে ২৭ লাখ মেট্রিক টন। চিনি ও পেঁয়াজের উৎপাদন প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন ও ২৮ দশমিক ১১ লাখ মেট্রিক টন (প্রকৃত উৎপাদন প্রায় ৩৭.৪৯ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে প্রক্রিয়াজাত ক্ষতি বাদ দিয়ে অবশিষ্ট থাকে ২৮ দশমিক ১১ লাখ মেট্রিক টন)। চিনির দেশীয় উৎপাদন অতি নগন্য হওয়ায় প্রায় ৯৯ শতাংশ চিনির চাহিদা আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, দেশ বর্তমানে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। তবে, আমদানি উন্মুক্ত না থাকলে স্থানীয় সরবরাহে চাপ সৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয় মূল্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়। আমদানি উন্মুক্ত থাকলে ২০ শতাংশ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়ে থাকে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে (জুলাই ২০২২ থেকে ২৭ মে ২০২৩) পর্যন্ত চিনি আমদানির এলসি ওপেনের পরিমাণ ১৬.৬৭ লাখ মে. টন এবং পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ ৫.৬৩ লাখ মে. টন। আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির মূল্য গত ৩ মাসে প্রতি মে. টন প্রায় ১৬০ ডলার বেড়েছে। এছাড়া আমদানির ব্যয় নির্ধারণে ব্যবহৃত বৈদেশিক মুদ্রা ডলারের মূল্য গত ১ বছরে প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। অপরিশোধিত চিনি পরিশোধনে ব্যবহৃত কেমিক্যালের মূল্যও বেড়ে গেছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ার কারণেও স্থানীয় বাজারে চিনির মূল্য বেড়েছে বলে জানান টিপু মুনশি। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, স্থানীয়ভাবে পেঁয়াজ উৎপাদন হলেও আংশিক আমদানি নির্ভরতা রহিয়াছে। আমদানি-নির্ভরতা থাকায় পেঁয়াজের আমদানি মূল্য স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য নির্ধারণে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে থাকে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পেঁয়াজের মূল্যকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য সরকার পেঁয়াজ আমদানির জন্য ইমপোর্ট পারমিট ইস্যু করা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। ভারতে এ বছর পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হওয়ায় পেঁয়াজের মূল্য অনেকাংশে কম। এই মূল্যে পেঁয়াজ আমদানি হলে দেশীয় চাষিদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় ইমপোর্ট পারমিট ইস্যু সাময়িক স্থগিত আছে। যেহেতু, স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে তাই মূল্য স্থিতিশীল রাখার কারণে ইমপোর্ট পারমিট ইস্যুর বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। জাতীয় সংসদে এমপি নুরুন্নবী চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে জুলাই-এপ্রিল সময়ে অর্থাৎ গত ১০ মাসে নিটওয়্যার ওভেন, তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, ফুটওয়্যার খাত, হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য (সাতটি খাতে) রপ্তানি করে মোট ৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৯০ কোটি ৫ লাখ টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে। মন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী নিটওয়্যার তৈরি পোশাক রপ্তানি করে আয় হয়েছে ২ লাখ ৬ হাজার ৯১ কোটি ৮২ লাখ টাকা, ওভেন তৈরি পোষাক থেকে ১৭ লাখ ৩০ হাজার ৮৬৩ কোটি ৫৩ লঅখ টাকা, হোম টেক্সটাইল থেকে ৯ হাজার ২৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা, ফুটওয়ার খাত থেকে ৩ হাজার ৮৪৪ কোটি ১২ লাখ, হিমায়িত খাদ্য থেকে ৩ হাজার ৬৫১ কোটি ২৮ লাখ টাকা, পাটজাতপণ্য থেকে ৭ হাজার ৫৭৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৯ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এ সময়ে এসব পণ্য রপ্তানি করে মোট বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে ৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৯০ কোটি ৫ লাখ টাকা বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত