ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাজশাহী ও সিলেট সিটি ভোট কাল

বরিশালের পুনরাবৃত্তি চায় না ইসি সুষ্ঠু ভোটের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ

বরিশালের পুনরাবৃত্তি চায় না ইসি  সুষ্ঠু ভোটের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যে সহিংসতা হয়েছে, সেটির পুনরাবৃত্তি রাজশাহী ও সিলেট সিটিতে চায় না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ দুই সিটিতে সুষ্ঠু ভোট করার জন্য সব প্রস্তুতি নিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্তু ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে দুই সিটিতে।

জানা যায়, রাজশাহী ও সিলেটে সিটি নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এখন ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। ভোট উপলক্ষ্যে দুই সিটির প্রতি তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ইসি। কোনোভাবে নির্বাচন যেন বিতর্কিত না হয়। ভোট সূষ্ঠু করতে যা করার প্রয়োজন তাই করছে ইসি।

জানা যায়, রাজশাহী সিটিতে মেয়র পদে লড়ছেন চারজন। এছাড়া নগরীর ৩০ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ১১১ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ৪৬ জন। এই সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন।

এর আগে বরিশাল সিটির নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে ইসলামী আন্দোলন সিলেট ও রাজশাহীর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়।

পাঁচ সিটির নির্বাচনে একমাত্র বরিশালেই কিছুটা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। সেখানে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলনের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম মেয়র প্রার্থী ছিলেন। বরিশাল সিটি করপোরেশনের ভোট চলার সময় ফয়জুল করিমের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায় দলটি। তারা ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকায় বিক্ষোভ করে। ইসলামী আন্দোলন বাকি দুটি সিটি সিলেট ও রাজশাহীর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়।

নির্বাচন পরিচালনা শাখা জানায়, রাজশাহী সিটি নির্বাচনে ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৪৮টিই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গত ২ জুন প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রচারে নামেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ভোটের সময় যত এগিয়ে আসছে ততই বাড়ছে উত্তেজনা। এরই মধ্যে ৩০টি ওয়ার্ডের আটটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, এমনকি এসেছে প্রাণনাশের হুমকি। তবে কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমনের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, নগরীর ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৪৮টি গুরুত্বপূর্ণ ও সাতটিকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে নির্বাচনে নাশকতাকারীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।

এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থী লিখিত অভিযোগ করেননি দাবি করে রাজশাহী সিটি নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে।

তিনি জানান, এবারই প্রথম রাজশাহী সিটি নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থী তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেনি।

এদিকে সিলেট সিটি নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে বড় ফ্যাক্টর নতুন ভোটাররা। জীবনের প্রথম ভোটে উন্নয়নবান্ধব জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চান তরুণ ভোটাররা। তরুণদের নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা জানাচ্ছেন প্রার্থীরাও।

সিলেট সিটি নির্বাচনে এবার ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। গতবারের চেয়ে এবার ভোটার বেড়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৭৩ জন। মোট ভোটারের ২০ শতাংশই প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন সিটি নির্বাচনে।

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তালিকা অনুযায়ী ১৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তালিকায় নগরের ১৮টি ওয়ার্ডের সব কটি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকি ৫৮টি কেন্দ্র সাধারণ (ঝুঁকিমুক্ত) বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ১৫, ২২, ২৪, ২৫, ২৬, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩৬, ৩৮, ৩৯ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের সব ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সবকটি কেন্দ্র ঝুঁকিমুক্ত।

রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সূত্র অনুযায়ী, সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৯০টি কেন্দ্রে মোট ভোটকক্ষ রয়েছে ১ হাজার ৩৬৪টি। এসব কক্ষ ও কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকবে ১ হাজার ৬৪৭টি। প্রতি কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন সাতজন আনসার, পাঁচজন পুলিশ।

এছাড়া ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু করতে ১৪ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করবেন। এমনকি প্রতি ১০ জন বিজিবি টহলের সঙ্গে থাকবেন একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত