ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় যেতে চাই না

* নির্ভরশীলতা কমাতে ব্রিকসে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত * ১ কোটি মানুষ পাবে বিনা পয়সায় খাবার * সংবিধান মেনে যথাসময়ে নির্বাচন
দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় যেতে চাই না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, দেশের কোনো সম্পদ কারো কাছে বিক্রি করে আমি ক্ষমতায় যেতে চাই না। সেন্ট মার্টিন দ্বীপ কাউকে লিজ দিতে চাইলে ক্ষমতায় থাকতে আর কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু আমি তা করব না।’

সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গতকাল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ২০০১ সালে বিদেশিদের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। এখন যদি বলি সেন্টমার্টিন দ্বীপ কারো কাছে লিজ দেব, তাহলে ক্ষমতায় থাকার কোনো অসুবিধা নেই, সেটা আমি জানি। কিন্তু আমার দ্বারা সেটা হবে না। আমার দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে খেলতে দেব না। আর আমার দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনো জায়গায় কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে, কাউকে আঘাত করবে, এ ধরনের কাজ আমরা হতে দেব না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি, আমরা শান্তিপূর্ণ সহযোগিতায় বিশ্বাস করি। মিয়ানমার থেকে যে ১০ লাখের মতো রিফিউজি এসেছে। তাদের নিয়ে আমরা তো মিয়ানমারের সঙ্গে ঝগড়া করিনি। এরা যাতে ফেরত যায়, তার জন্য আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুরোধ করছি, কিন্তু আমরা তো ঝগড়া বা যুদ্ধ করতে যাইনি। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, এই নীতিতে বিশ্বাস করি, সেটাই মেনে চলি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বিএনপি বা কিছু দল মাঠে নেমেছে। এদের অসুবিধাটা কোথায়? সমস্যাটা কী। যেহেতু আমাদের গণতন্ত্র ওয়েস্ট মিনিস্টার ডেমোক্রেসি টাইপের। ঠিক ইংল্যান্ড ও অন্যান্য জায়গায় যেভাবে নির্বাচনটা হয় ঠিক সেভাবেই আমাদের এখানে নির্বাচন হবে। নির্বাচনকালে আমাদের বিরোধীদল থেকে নানা প্রস্তাব, এখন আবার তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কে খালেদা জিয়াই বলেছিল- যে পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নাই। এখন তারা আবার সেটা চায়, এই পদ্ধতিটা তারাই নষ্ট করেছে। উচ্চ আদালতের রায় আছে এবং সেই মোতাবেক আমাদের সংবিধানও সংশোধন করা হয়েছে। একজন নির্বাচিত সরকারপ্রধান আরেকজন নির্বাচিত সরকারপ্রধান দ্বারাই প্রতিস্থাপিত হবে। এর বাইরে অনির্বাচিত কেউ আসতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘একজন নির্বাচিতর জায়গায় আরেকজন নির্বাচিতই আসতে হবে। এটা সবাই জানে, জানার পরও কেন সাংবিধানিক জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে। উদ্দেশ্যটা কী, তার মানে এই যে গণতান্ত্রিক ধারাটাকে নষ্ট করা। দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর বাংলাদেশ যে সুষ্ঠুভাবে চলছে, আর্থ-সামাজিক উন্নতি হচ্ছে সেটাকে নষ্ট করা। দেশবাসী এটা কীভাবে নেবে সেটাই আমার প্রশ্ন। তারা কী গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা চান, অর্থনৈতিক উন্নতি চান, দেশের মানুষের কল্যাণ চান, নাকি আবার সেই ২০০৭ সালের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার, আবার সেই ইমার্জেন্সি, আবার সেই ধরপাকড়- সেইগুলো চান। এটা দেশের মানুষকেই বিবেচনা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচাল করার জন্য যেভাবে অগ্নিসংযোগ করেছে, ৩ হাজার ৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে, ৩ হাজারের ওপর মানুষকে পুড়িয়েছে। কত মানুষ এখনও পঙ্গু হয়ে আছে, কত পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। জ্বালাওপোড়াও করে মানুষের যে ক্ষতি করেছে, মানুষ তা ভুলে যাবে? আমি এক কানে শুনি, আরেক কান তো খালেদা জিয়া গ্রেনেড হামলা করে দিছে শেষ করে। খুনির দল; সে একটা খুনি, তার স্বামী একটা খুনি, তার একটা ছেলেও খুনি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজ বিএনপিসহ কিছু দল মাঠে নেমেছে, তাদের অসুবিধা কোথায়? সমস্যাটা কী? মানুষ দুইবেলা পেট ভরে ভাত খাচ্ছে। এত মুদ্রাস্ফীতির পরও মানুষের খাবারের অভাব হচ্ছে না। হ্যাঁ একটু চাপে আছে মানুষ, সেই কষ্টটা আমি বুঝি। তাই আমাদের প্রচেষ্টা আছে। মানুষের দুঃখ, কষ্টটা আমরা উপলব্ধি করতে পারি। তাই যতটা সহজ করার দরকার সেটা করে যাচ্ছি। আগে তো মানুষ খেতে পারত না। আগে যেখানে মাটি দিয়ে হেঁটে যেতে হতো স্যান্ডেল জোড়া বগলদাবা করে, এখন সেখানে হয় ভ্যানে যাচ্ছে, না হয় স্যান্ডেল পরে। মানুষের তো একজোড়া স্যান্ডেল ছিল না। এখন তো পাচ্ছে। কার জন্য পাচ্ছে? আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই সম্ভব। সাড়ে ১৪ বছর আমরা অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ খুন, অপপ্রচার মোকাবিলা করেই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সেটাই মানুষ চাইবে? নাকি আবার সেই সন্ত্রাস যুগে প্রবেশ করবে, ভোট চুরি, ভোট ডাকাতির যুগে প্রবেশ করবে। সেটা জনগণের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি। যারা আমাদের ভোট চোর বলে, তারা তো ভোট ডাকাত। কারণ, তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে, অবৈধভাবে ভোট ডাকাতি করেই এসেছে। আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। ছবিসহ ভোটার তালিকা আছে। তাদের মতো তো ভুয়া ভোটার নেই। সংবিধান অনুযায়ী ভোট হবে। জনগণ যদি ভোট দেয়, তাহলে আছি। না হলে নাই। আমি জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করি।’

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের দেশে গণতন্ত্র আছে, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা আছে। এক ারণেই দেশটার উন্নতি হয়েছে। মানুষের মধ্যে আস্থা-বিশ্বাস ফিরে এসেছে, দারিদ্র্য দূর হয়েছে। পঁচাত্তর পরবর্তী অবস্থার কথা চিন্তা করেন। মানুষের ভোটের অধিকার ছিল না, আমরা অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে তা জনগণকে ফিরিয়ে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ সব সময় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলেই গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। এই অবস্থায় প্রার্থী হওয়ার জন্য অনেকেরই আগ্রহ থাকবে এতে তো কোনো সন্দেহ নেই। কাকে প্রার্থী করা হবে কাকে হবে না এ ব্যাপারে আমাদের দলেরও একটা লক্ষ্য থাকে। একটা অবাধ নিরপেক্ষ স্বচ্ছ নির্বাচন হবে, এটা আমাদেরও দাবি। অনেকেই তো প্রার্থী হতে পারে। প্রার্থী যদি হয়, শত ফুল ফুটতে দিন। যে ফুলটি সবচেয়ে সুন্দর সেটি আমি বেছে নেব। তখন একটা বিষয় এসে যায়, কে জয়ী হয়ে আসতে পারবে।’

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিকল্প মুদ্রা চালুর করার কোনো প্রস্তাব আছে কি না? প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আদার বেপারি হয়ে জাহাজের খবর নিয়ে লাভ কী? ব্রিকস সংগঠন যখন প্রস্তুতি নেয় তখন থেকেই আমরা যোগ দেব এমন কথা ছিল। তারপর হয়নি। আমরা প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হতে পারিনি। এখন যোগ দেব। আমরা চাচ্ছি, কোনো আন্তর্জাতিক সংগঠনের ওপর যেন একক নির্ভরশীল না হতে হয়। প্রয়োজনীয় বা আপদকালীন সময়ে আমরা যেন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারি। সেসব বিষয় বিবেচনা করেই কিন্তু ব্রিকসে যোগ দেয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ ব্যবহারের ব্যবস্থা নেয়, আমরা সেখানে আছি। কয়েকটি দেশের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করছি। নিজস্ব অর্থের বিনিময়ে যেন আমরা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে। সেজন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। ডলারের ওপর নির্ভর না হয়ে যেন অর্থ বিনিময় করতে পারি, সেজন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি। কার্যক্রম হলে আপনারা দেখতে পাবেন। দেশের জন্য যেটা কল্যাণকর সেটাই করব।’

তিনি বলেন, বাজারে কালোবাজারি, সিন্ডিকেট রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। বৈশ্বিক খাদ্যমন্দা ঠেকাতে আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। এজন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য উৎপাদন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যেসব পণ্য সিজনাল, তা সংরক্ষণ করে যেন আপৎকালীন সময়ে সরবরাহ করা যায়, সেজন্য বিভাগীয় পর্যায়ে ফ্রিজিং গুদাম করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

করোনার সময় প্রণোদনা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সে সময় ব্যবসায়ীদের জন্য সব ধরনের প্রণোদনা দিয়েছি। গ্রামের মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, সেটা দেখেছি। এখন ঈদ উপলক্ষ্যে ১ কোটি মানুষকে বিনা পয়সায় খাবার দেব, এটা আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বর্ষাকালে আমাদের মানুষের একটু কষ্ট হয়। সেই সময় যাতে কষ্ট না হয়, সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। টিসিবি থেকে আমরা কার্ড দিচ্ছি। এখন আমরা সবাইকে ডিজিটাল কার্ড দিয়ে দেব। সেই কার্ড দিয়ে যেন তারা টাকা তুলতে পারে।’

ঈদের কোরবানির গরু বিক্রি করার ক্ষেত্রে প্রতিটি হাটের কাছে ব্যাংকিং সিস্টেম রেখে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন আর ক্যাশ টাকা নিয়ে ঘুরতে হবে না। টাকা ওখানে তারা জমা দেবে ব্যাংকে, বাড়ি গিয়ে তুলতে পারবে। টাকা চুরি হওয়ার আর কোনো আশঙ্কা থাকবে না। আমরা সেভাবে ডিজিটাল ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’

যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করে বলা হচ্ছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সেক্যুলারিজমে বিশ্বাস করে; যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে, সেই নীতিতে বিশ্বাস করে। ২০০১-এর পর সংখ্যালঘুদের ওপর যে নির্যাতন, যে বীভৎস্য ঘটনা ঘটেছে, সেদিন তো হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলমান কেউ রেহাই পায়নি। মানুষ হত্যা করেছে, মসজিদ ভেঙেছে, মন্দির ভেঙেছে, কোনটা না করেছে তারা?’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ওই সময় এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ, অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুঁড়া গুঁড়া করেও মানুষ হত্যা করেছে। শুধু তা-ই নয়, সেনাবাহিনীর অফিসারদের চাকরি থেকে বিদায় দিয়ে দেওয়া, কারো সাত-আট বছর হয়েছে, তাদের বিদায় দিয়ে দেওয়া, প্রশাসন থেকে ভালো ভালো অফিসারদের বিদায় দেওয়া, একই দিনে একযোগে ১৩ জনকে ওএসডি করে দেয়। ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রথম দিনেই এটা করেছে তারা। এভাবে অত্যাচার করেছে। তারপর রাজনীতি, প্রশাসন সব হাতে নিয়ে, হাওয়া ভবন খুলে একাকার। কারো স্বাধীন ব্যবসা করার সুযোগ ছিল না। কারণ, হাওয়া ভবনে এক ভাগ, খালেদা জিয়াকে এক ভাগ, এভাবে সবাইকে দিতে হতো। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তো এসব নাই। বাংলাদেশকে আমরাই ডিজিটাল করে দিয়েছি। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নানা ধরনের অপপ্রচার করছে। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানরা যেভাবে প্রতিবাদ করছেন, বলছেন যে, এটা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য। সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। নির্বাচন যত কাছে আসবে, এ ধরনের অপপ্রচার তারা চালাবে। আমি দেশবাসীকে বলব- এ রকম অপপ্রচারে কান দেবেন না, বিব্রতও হবেন না।’

বিদ্যুৎ সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘খুব সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে, ঠান্ডা বাতাস পাওয়া যাচ্ছে। হ্যাঁ, একটু বিদ্যুতের সমস্যা ছিল। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছিলাম। সেই সমস্যাটাও আস্তে আস্তে কেটে যাবে। একটু তো সহনশীল হতে হবে। আজকে ১৭ কোটি মানুষের সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। যেখানে মাত্র ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ছিল, সেখানে ২৫ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করেছি।’

রোহিঙ্গাদের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য সহায়তাসহ আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তার পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ধরে রাখার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছি।’

সুইজারল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এমনটাই জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তার সফরের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ‘১৫ জুন, দুপুরে আমি জেনেভায় জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় নিযুক্ত বাংলাদেশ স্থায়ী প্রতিনিধিদের আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজে অংশগ্রহণ করি। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাসহ অন্যান্য কয়েকটি সংস্থার প্রধানরা এতে যোগ দেন। মতবিনিময়কালে উপস্থিত অতিথিরা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এবং আমার সহকর্মীরা তাদের বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করি। বিশেষ করে দারিদ্র্য বিমোচন, আশ্রয়হীনদের জন্য ঘর নির্মাণ, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় আমরা যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, সেগুলো তুলে ধরি। প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রায় তাদের নিজ নিজ সংস্থার কার্যক্রম বজায় রাখার ক্ষেত্রে আরো সৃজনশীল ও ভবিষ্যৎমুখী হওয়ার বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেন।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. এনগোজি ওকোনজো-আইওয়েলার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের রপ্তানি বহুমুখীকরণ, গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের সক্ষমতা বৃদ্ধি, মৎস্য খাতে ভর্তুকিবিষয়ক চুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। তিনি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পরবর্তী মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের মতো উত্তরণশীল স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষে একটি অনুকূল সিদ্ধান্তের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত