দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা

বিনিয়োগের জন্য আরো জনপ্রিয় হবে

প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

পদ্মা সেতু চালু এবং মোংলা ও পায়রা বন্দরের উন্নয়নের সুবাদে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ভবিষ্যতে বিনিয়োগের জন্য আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) একটি জরিপ অনুসারে, উত্তরদাতাদের ৯২ শতাংশ বিনিয়োগের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলের জমি অধিগ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এবং তাদের সবচেয়ে পছন্দের এলাকা চট্টগ্রাম।

জরিপে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে খুলনা এবং বরিশাল অঞ্চলও বিনিয়োগের জন্য আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন জানান, সারা দেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন এবং শিল্পায়নকে উদ্দেশ্যমূলক ও কার্যকর করার জন্য একটি জোন পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, পাশাপাশি, অর্থনৈতিক করিডোর বিবেচনায় রেখে একটি ব্যাপক জাতীয় মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা প্রয়োজন। তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা কামনা করেন।

হারুন বলেন, বেজা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পরিকল্পিত শিল্প পার্কগুলোর উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে। কারণ বিনিয়োগকারীরা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নের জন্য এই অঞ্চলে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

স্টেকহোল্ডাররা মনে করেন, পরিকল্পনাধীন অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো বর্তমান পরিকল্পনা থেকে নির্মাণ পর্যন্ত উন্নয়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। যা শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতি দেবে।

জরিপে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সমগ্র অঞ্চলজুড়ে ১৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হবে এবং মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নে এরইমধ্যে নির্মাণকাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

মোংলা বন্দরের কাছে বাগেরহাটে ২০৫ একর জমির ওপর গড়ে উঠছে মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল। বেজা পাওয়ারপ্যাক ইকনোমিক জোনের সহযোগিতায় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলের অধীনে মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রশাসনিক ভবন, সীমানা প্রাচীর, সংযোগ সড়ক, ৩৩ কেভিএ সাবস্টেশন এবং পানির পাইপলাইন নির্মাণ সম্পন্ন করেছে।

মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাছাকাছি, জি-টু-জি ভিত্তিতে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০৫ একর জমিতে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হবে। ইউসুফ হারুন বলেন, মোংলায় দুটি নির্মাণাধীন অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিগগিরই শিল্প কারখানা স্থাপন করা হবে। এটি আশা করা হচ্ছে যে, দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে কারখানার নির্মাণ শিগগিরই শুরু হবে, কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে এবং আশপাশের এলাকায় একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, বেজা ধীরে ধীরে অন্যান্য পরিকল্পিত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর বিকাশ করবে।

গোপালগঞ্জ, খুলনা, মাদারীপুর, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়ায় পর্যায়ক্রমে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হবে, যা এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

বেজার গভর্নিং বডি শরীয়তপুরের জাজিরা ও গোসাইরহাট উপজেলায় যথাক্রমে ৫২৫ ও ৬৮৬ একর জমিতে দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নের অনুমোদন দিয়েছে।

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় ১, ১২৫ একর জমিতে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে এবং ফরিদপুরে আনুমানিক ৮৮৮ একর জমিতে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হবে।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ২০০ একর অর্থনৈতিক অঞ্চলের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে এখন এর উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত করা হচ্ছে।

খুলনার বটিয়াঘাটায় ২০৮ একর জমিতে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চালানোর জন্য একটি পদক্ষেপও চলছে, যেখানে গভর্নিং বডি একই জেলার তেরখাদা উপজেলায় ৫০৯ একর জমিতে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ জুন, ২০২২-এ যানবাহন চলাচলের জন্য বহুল প্রত্যাশিত ৬.১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন, যা রাজধানী ঢাকা এবং অন্যান্য বড় শহরগুলোর সঙ্গে ২১টি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক অগ্রগতি এনেছে।