ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভরসা বিদেশি হস্তক্ষেপ

সরকার পতনের স্বপ্নে বিভোর বিএনপি

সরকার পতনের স্বপ্নে বিভোর বিএনপি

আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার পতনের স্বপ্নে বিভোর বিএনপি। তারা রাজনীতির মাঠে খুব বেশি সক্রিয় না থাকলেও বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগে সক্রিয়তা দেখাচ্ছে। বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে দলটি বিদেশি শক্তির উপরে ভরসা রাখছে। তারা বলছেন, চলতি মাসে ইউরোপ-আমেরিকার প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসছে, আর এরপরই তাদের জন্য ভালো কিছু হবে বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএনপি দেশের একটি রাজনৈতিক বড় দল, তারা রাজপথে আন্দোলন করে নির্বাচনে মাধ্যেমে দেশের ক্ষমতা আসার চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু তারা সেটি না করে বিদেশিদের পেছনে ছুটছে। বিএনপি মনে করছে বিদেশিরা তাদের ক্ষমতায় আনবে। এমন ধারণা কখনো দেশের জন্য ভালো নয় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের একাধিক আন্ডার সেক্রেটারি চলতি মাসে ঢাকায় আসছেন। উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলে বাংলাদেশ নিয়ে ঘোষিত ভিসানীতি প্রণয়নের পেছনের কারিগর দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুর নামও রয়েছে। অন্যদিকে প্রাক-নির্বাচনি পরিবেশ পর্যবেক্ষণে ৮ জুলাই ঢাকা আসছেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। বাংলাদেশ সফরকালে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা ছাড়াও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

চলতি বছরের শেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের মাত্র ৫ মাস আগে এমন উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফর ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই সচেতন মহলের নজর থাকবে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঈদের পর বিএনপির আন্দোলন আরও জোরদার হবে, বেগবান হবে। আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলন করেছে, তাদের সঙ্গে কথা বলছি। আলোচনা করেই আন্দোলনকে বেগবান করা হবে। এক দফার আন্দোলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূলত এক দফার আন্দোলনই হচ্ছে। খুব শিগগিরই এটা আনুষ্ঠানিকভাবে (ঘোষণা) আসবে। আমাদের রণকৌশল আছে। আমরা আমাদের মতো করে এগিয়ে যেতে চাই।

ভিসা নীতি প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সে কারণেই দায়িত্ব থেকে তারা এ কথাগুলো বলছে। তারা তাদের মতো করে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে আমরা এতে খুব পুলকিত নই। এগুলো বাংলাদেশের জন্য লজ্জার ব্যাপার।

মির্জা ফখরুল বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্ব একটা বার্তাই দিচ্ছে যে তোমার যা কিছু করার হয়ে গেছে। এখন জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে নির্বাচন দাও। আর তা না হলে তোমাকে যেতে হবে। তারা পরিষ্কার করে বলছে যে বাংলাদেশে মানবাধিকার নেই, গণতন্ত্র নেই, ভোটের অধিকার নেই। আমরা যেটা পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশে-বিদেশে সবখানে এ সরকার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। মানুষের কাছে তারা (সরকার) এখন গ্রহণযোগ্য নয়। এ অবস্থায় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা করেই তাদের যেতেই হবে।

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিএনপি প্রতিবার বলে তারা ঈদের পর আন্দোলন করবে। কোন ঈদের পর সেটি কেউ জানে না। ঈদ তো শেষ হয়ে গেল দেখি এবার তারা কি করে, কি বলে।

বিএনপি বিদেশিদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বাংলায় আবার রক্ত ঝরাতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, অনেকেই চায় না শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকুক। অনেকের আবার ক্ষমতার দরকার নেই। শুধু শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হোক, এটাই তাদের রাজনীতি। বর্তমানে বাংলাদেশের একটি দল এই রাজনীতি করছে। বিদেশিদের সঙ্গে বসে ষড়যন্ত্র করে বাংলায় আবার বিশ্বাসঘাতকতা ও রক্ত ঝরাতে চায়। এ অপশক্তিকে রুখতে হবে। এই জঙ্গিবাদী, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে হবে। বাংলাদেশবিরোধী এই অপশক্তিকে রুখতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্ব নেতাদের মুখে শেখ হাসিনার প্রশংসা, অথচ বাংলাদেশে আমরা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করি, তাকে অসম্মান করি। শেখ হাসিনা যে মর্যাদা দেশের জন্য এনেছেন, সেটা গোটা জাতির সম্পদ।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে না এলে নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করার দুঃসাহস কি এ দেশের কারও ছিল? তার জন্য সারা বাংলার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে। তিনি ফিরে এসেছেন বলেই বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীরা বিনা পয়সায় বই পেল। রাজধানীতে স্বপ্নের মতো মেট্রোরেল হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও বঙ্গবন্ধু টানেল হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত