রাষ্ট্রপতিকে সৌদি যুবরাজ

উন্নয়নে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

সৌদি আরবের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদ বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে আগ্রহী সৌদি আরব। পবিত্র হজ পালন উপলক্ষ্যে সৌদি আরব সফররত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার মক্কায় এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সৌদি যুবরাজ এ আগ্রহের কথা জানান।

সৌদি সরকারের রাজকীয় মেহমান হিসেবে হজ পালনের জন্য ১০ দিনের সফরে সৌদি আরব অবস্থান করছেন রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যরা।

ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে রাষ্ট্রপতি বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয় বাংলাদেশ।

সৌদি প্রিন্সকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে রাষ্ট্র প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ তাকে বরণ করে নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আশা করেন, বাংলাদেশের জনগণ চায় সৌদি আরবের নেতৃত্বে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিক দিয়ে বিশ্ব মুসলিম উম্মা আগামীতে আরো এগিয়ে যাবে।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি আশা করেন, বাংলাদেশ উন্নয়ন অগ্রগতির পথে আগামীতে আরো এগিয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে সৌদি যুবরাজ বলেন, তিনি একটি সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে বাংলাদেশ সফর করতে চান, যাতে করে ভবিষ্যতে দুই দেশের উন্নয়ন ও অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে একটি অনন্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন তাকে এবং তার সফরসঙ্গীদের উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য সৌদি সরকার ও জনগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মদিনায় রাষ্ট্রপতি : রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে এখন মদিনায় অবস্থান করছেন। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা মদিনায় পৌঁছান। পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতার শেষ দিনে তিনি কাবা শরীফে বিদায়ী তাওয়াফ সম্পন্ন করেন। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন হজ পালনের উদ্দেশে দশ দিনের সফরে রাজকীয় অতিথি হিসেবে সৌদি আরবে যান গত ২৩ জুন।

হজের আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে এর আগে রাষ্ট্র প্রধান তার সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ২৪ জুন রাজকীয় অতিথি হিসেবে ওমরাহ পালন করেন।

রাষ্ট্রপতি এবং তার পরিবারের সদস্যরাসহ ২৬ জুন সোমবার রাষ্ট্রীয় প্রটোকলে মিনায় যান। তিনি ২৭ জুন আরাফাতের ময়দানে যান। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন অন্যান্য হাজীদের ন্যায় পবিত্র হজ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সেখানে পুরো দিন কাটান।

তিনি সূর্যাস্তের পর মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফাত ত্যাগ করেন এবং সেখানে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করেন। রীতি অনুযায়ী সব হজযাত্রীরা সেখানে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটান। ফজরের নামাজ আদায় করে গত বুধবার ১০ জিলহজ আবার মিনায় ফিরে যান। রাষ্ট্রপতি সেখানে জামারাত আল-আকাবায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, পশু কোরবানি, মাথা মু-ন এবং মক্কায় তাওয়াফ আল-ইফাদাহ ও সাঈ সম্পন্ন করেন।

হজের আনুষ্ঠানিক রীতিতে শয়তানকে পাথর মারার মধ্যে রয়েছে তিনটি স্তম্ভ যা শয়তান এবং পাপের প্রতীকস্বরূপ।

ঈদুল আজহার প্রথম দিনে রাষ্ট্রপতি বড় শয়তানকে ছোট নুড়ি বা পাথর নিক্ষেপ করেন, যা তিনি মুজদালিফা থেকে রাতে সংগ্রহ করেছিলেন।

এই কার্যক্রমটি হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর তিনটি স্থানে শয়তানকে পাথর ছুড়ে মারার একটি অনুকরণ। কথিত আছে যে, সেখানে তিনি তার পুত্র হজরত ইসমাঈল (আ.)-কে কোরবানি দেয়ার জন্য আল্লাহর আদেশ পালন থেকে বিরত করার চেষ্টা করেছিলেন। পরে, রাষ্ট্রপতি আবার মিনা থেকে মক্কার রয়েল প্যালেস যান। শুক্রবার মক্কায় তিনি বিদায়ী তাওয়াফ করেন। সেখান থেকে মদিনায় যান। রাষ্ট্রপতি মদিনায় হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করবেন। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে আজ মদিনার প্রিন্স মোহাম্মদ বিন আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন। রাষ্ট্রপতি ও সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি আগামীকাল ঢাকায় অবতরণ করবে। সূত্র: বাসস।