শুভেচ্ছা ও মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী

মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমার লক্ষ্য

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার লক্ষ্য বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনে ৬ বছরের নির্বাসন থেকে দেশে ফেরার পর আমি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছি। বাংলাদেশের এমন কোনো অঞ্চল নেই যেখানে আমি যাইনি। আমি নৌকা, সাম্পান, লঞ্চ ও রিকশা-ভ্যানে চড়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়েছি। আমি এমনভাবে দেশ ভ্রমণ করেছি এবং সারা দেশে ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে এসেছি।

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গতকাল রোববার সর্বস্তরের মানুষের সাথে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময়কালে সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে এই পর্যন্ত আসা। এই সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। ‘মাই হাউস, মাই ফার্ম’, কমিউনিটি ক্লিনিক, ডিজিটাল বাংলাদেশ, ‘মাই ভিলেজ, মাই টাউন’ বাস্তবায়ন ও নানা সামাজিক নিরাপত্তামূলক কাজের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটি গ্রাম এখন আর গ্রাম নাই। আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। রাস্তাঘাটের উন্নতি করেছি। এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ উন্নয়নে রোল মডেল।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আমার পিতা জাতির পিতা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন, যার জন্য তিনি দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করা হয়, একই বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অগ্রগতি থামিয়ে দেয়ার জন্যই এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে এমন সময়ে হত্যা করা হয়েছিল যখন দেশ অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া আসনের সংসদ সদস্য শেখ হাসিনা তার নির্বাচনি এলাকার জনগণকে কৃতিত্ব দিয়ে বলেন, তারা তার দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তাকে আরো সময় দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, সাধারণত, অন্যান্য নির্বাচনি এলাকার সংসদ সদস্যরা শুধুমাত্র তাদের নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকার দেখাশোনা করেন। আমাকে ৩০০টি নির্বাচনি এলাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হয়। কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দারা তার নির্বাচনি এলাকার দায়িত্ব নেয়ায় আমি তা করতে পেরেছি।’ মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ার উন্নয়ন নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের অভিজ্ঞতা শুনতে চান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার্ধক্যজনিত কারণে অবসরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে স্থানীয় জনগণ তাকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকার অনুরোধ জানান। তারা শেখ হাসিনাকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন। শেখ হাসিনাই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন এ লক্ষ্যে কাজ করার এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সাহায্য করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। মতবিনিময় সভায় সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল উপস্থিত ছিলেন। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পশে বসে ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী দুই দিনের কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া সফরের অংশ হিসেবে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সড়ক পথে পদ্মা সেতু পার হয়ে গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কোটালীপাড়ায় পৌঁছান। এই সফরে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা ও একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তার সাথে রয়েছেন। টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্থানীয় জনগণের মধ্যে বাড়তি বিপুল উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ যোগ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে পুরো গোপালগঞ্জকে রঙিন পোস্টার, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে সাজানো হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে অসংখ্য তোরণ। এখানে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ঈদের আনন্দতে যুক্ত হয়েছে বাড়তি মাত্রা। উল্লেখ্য গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া উপজেলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রিজ নির্বাচনি এলাকায়। এই আসন থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাই আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা সব সময় নির্বাচনি এলাকার মানুষের খোঁজখবর রাখেন। এলাকার মানুষেরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা অবিচল।