জাতীয় সংসদ নির্বাচন

নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামছে আ.লীগ

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাহাত হুসাইন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা সাজিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের ৬ মাস বাকি থাকতেই দলের মধ্যে ছোটোখাটো বিরোধ মিটিয়ে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে দলটি। টানা চতুর্থ দফা বিজয় ছিনিয়ে আনতে দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অবস্থানে যাওয়ারও চিন্তা-ভাবনা করছে আওয়ামী লীগ। তৃণমূল পর্যন্ত দল গোছানোর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিরসনের আট বিভাগের সাংগঠনিক টিমের সদস্যরাও মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নির্বাচনি পরিকল্পনা সাজাতে জেলা, উপজেলা ও মহানগরের নেতাদের নিয়ে বৈঠকও শুরু করেছেন দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। দেওয়া হচ্ছে নানা দিকনির্দেশনা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাতই ভাবিয়ে তুলছে আওয়ামী লীগকে। বিভিন্ন সময়ে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। উল্টো অনেক জায়গায় তা আরও বিস্তৃত হয়েছে। মূল দলের পাশাপাশি সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কোন্দল দলটির হাইকমান্ডকে আরো ভাবিয়ে তুলছে। কোন্দলের পাশাপাশি নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে নানা মহলে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও মনে করছেন ক্ষমতাসীনরা। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারেরও পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশের ধারণাও জনগণের সামনে তুলে ধরবেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তৃণমূলে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা-উপজেলার নেতাদের গণভবনে ডেকে কথা বলছেন। তাদের মতামত নিচ্ছেন। নির্বাচনি প্রচারে সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের ভোটের মাঠে কাজে লাগাতে নানা দিকনির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে, সে কারণে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের পক্ষেই রায় দেবে।

নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের কর্মপরিকল্পায় রয়েছে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে দলের সম্পৃক্তা বাড়ানো। আগামী অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলমান রাখার পাশাপাশি দলে সদস্য নবায়ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে দলের ভেতরের ছোটোখাটো দ্বন্দ্ব-কোন্দল মেটানোই আমাদের চ্যালেঞ্জ। দূরত্ব দূর করে নেতাকর্মীদের সংঘবদ্ধ করে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আমরা অংশ নেব। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে কেউ হারাতে পারবে না বলেই আমরা বিশ্বাস করি। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, আমরা জনগণের কাছে যাব। শেখ হাসিনার সরকার তাদের জন্য কী কী করেছে, সেই বিষয়গুলো তাদের সামনে তুলে ধরব। আর জনগণকে স্মরণ করিয়ে দেব-২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত কী করেছে। তখনকার বাংলাদেশ কেমন ছিল, সেই বিভীষিকাময় দিনগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরব। তিনি আরো বলেন, আমরা জেলায় জেলায় যাব, জেলার নেতারা উপজেলায় যাবেন, প্রতিটি জায়গায় নানা অনুষ্ঠান হবে। এভাবে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে এগুলো সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরব। রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, রংপুর বিভাগের অনেক জেলা-উপজেলায় সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের কাজ চলছে। যারা এখনো সদস্য ফরম সংগ্রহ করেনি, সেসব জেলা-উপজেলাকে সদস্য সংগ্রহ বই নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা প্রথমবার ভোটার, যুব-তরুণ এবং নারীদের আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি।