দিনাজপুরে কদর নেই ছাগলের চামড়ার

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কামরুল হুদা হেলাল, দিনাজপুর

কোরবানির ঈদ কেন্দ্র করে উত্তরে জেলা দিনাজপুরে এ বছর বেড়েছে চামড়া আমদানি। তবে কদর নেই ছাগলের চামড়ার। অধিকাংশ চামড়াই ফেলে দিয়ে গেছেন ছোট ছোট খুচরা চামড়া ব্যবসায়ীরা। আর আড়তদার সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, চামড়া ব্যবসা নিয়ে এবারও রয়েছে শঙ্কা।

জেলা শহরে একমাত্র চামড়া বাজার বসে রামনগর এলাকায়। এই বাজারে জেলার বাইরে থেকেও আসে চামড়া। বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চামড়া লবণজাত করতে শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। অন্যদিকে রাস্তায় পড়ে আছে ছাগলের চামড়া। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ বছর ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে প্রতি পিচ ষাঁড় এবং ছোট গরুর চামড়া। পাশাপাশি গাভীর চামড়া বাজার দর ছিল ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা।

এ বছর লবণের দাম এবং শ্রমিক খরচ মিলিয়ে চামড়া প্রস্তুতকরণ খরচ বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। গরুর চামড়ার প্রস্তুত করতে এ বছর আড়তদার গুনছেন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। তারা বলেছেন, ছাগলের চামড়ার ক্ষেত্রে শুধু বড় মাপের চামড়াই বিক্রি হয়েছে, যার বাজার দর প্রতি পিচ ২০ থেকে ৩০ টাকা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগের তীর ট্যানারি মালিকদের দিকে। কারণ, হিসেবে দুষছেন ট্যানারি মালিকদের বকেয়া টাকা পরিশোধ না করাকে। এটাই যেন তাদের শঙ্কার কারণ। দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপ সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুরের চামড়া ব্যবসা লোকসানের মুখে পড়েছে ২০১৭ সাল থেকে। গত কয়েক বছর আগে এই গ্রুপে সদস্য সংখ্যা ছিল ১৭০ জন। বর্তমানে এই গ্রুপে সদস্য রয়েছে ১৫ থেকে ২০ জন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আতাউর বলেন, ছাগলের চামড়ার দাম ৫ টাকাও বলে না। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ছাগলের চামড়া কিনছি ২০ টাকা করে। গরুর চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে ২৫০ টাকা ৩০০ টাকা। সরকার রেট বাড়ালেও আমাদের কোনো কাজে আসেনি।

এভাবে এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা যাবে না। কিশোরগঞ্জ থেকে আসা মতিয়ার বলেন, দিনাজপুরে বড় বাজার বসে বলে, অনেক দূর থেকে ছাগলের চামড়া নিয়ে আসছি। কিন্তু ছোট ছাগলের চামড়ার দাম বলে না। দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের বলেন, ২০১৭ সাল থেকে চামড়ার ব্যবসায় ধস। আগে মালিক গ্রুপে সদস্য ছিল ১৭০ জন। আর এখন ১৫ থেকে ২০ জন। কেউ অটো চালান। কেউ অন্য ব্যবসা করেন। আমিও ছেড়ে দেব, কিন্তু অনেক টাকা ট্যানারি মালিকদের কাছে পড়ে আছে। ওই টাকার মায়ায় ছাড়তে পারি না। এবার গরুর চামড়া প্রস্তুত করতে লবণ ও শ্রমিক খরচ মিলিয়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ। গত বছরের টাকা পড়ে আছে। এবার দেবে কি না, শঙ্কায় আছি। ছোট ছাগলের চামড়া কিনতে চায় না, তাই আমরাও কিনিনি।