আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাজারের ওপর কারো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ সবসময় থাকে না, এটা ওঠানামা করে। সবই নিয়ন্ত্রণে আসবে। বাংলাদেশের বাজারে আপনাকে ফিক্সড করে দেওয়া নাই যে ছয়টার বেশি ডিম কিনতে পারবেন না, তিনটার বেশি টমেটো কিনতে পারবেন না; যেটা উন্নত দেশগুলোতে হচ্ছে। গতকাল সকালে সচিবালয়ে ঈদ-পরবর্তী সময়ে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্ব সংকটের কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, জীবন নির্বাহে ব্যয়বৃদ্ধি পাচ্ছে, জ্বালানি সংকটে নিত্যপণ্যের সংকট- এসব বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে। সাধারণ মানুষের জীবন যেন স্বস্তিদায়ক হয়, সেজন্য আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। সরকারের এখানে অগ্রাধিকার হচ্ছে মানুষের জীবনকে স্বস্তিদায়ক করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এসব বিষয়ে মনিটরিং করছেন, খোঁজখবর নিচ্ছেন।
সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, মানুষের কষ্ট হবে সেটা সিন্ডিকেট হোক সেই বাধা দূর করতে হবে, বাজারে সিন্ডিকেট করে মূল্যবৃদ্ধি হবে, সেখানে সরকারের দায়িত্ব আছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ নিয়ে তাদের মতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করি, একসময় এটা লাগামছাড়া থাকবে না।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন রংপুরে ২০০ নারী অভাবের তাড়নায় পতিতাবৃত্তিতে নাম লিখিয়েছিল। পত্রপত্রিকায় সে খবর এসেছে। আজকে সে দৃশ্য দেখা দেয়নি। আমরা সচেতন আছি। মানুষকে বাঁচাতে হবে। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের তেলের দাম ১০ টাকা কমেছে, পেঁয়াজের দাম কমেছে। আমাদের নিত্যপণ্যের দাম কমেনি কে বলল? কোনোটা উঠেছে, কোনোটা বাড়ছে, ঠিক হয়ে যাবে। নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কারো প্রেসক্রিপশনে নয়, আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। বিদেশি বন্ধুরা কেউ হস্তক্ষেপ করছেন না, কেউ কেউ পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরা তাদের কথাবার্তা, ভালো পরামর্শ শুনব। সংবিধানই আমাদের বিধান। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, এদেশেও সেভাবে হবে। তিনি বলেন, আমাদের গণতন্ত্র পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত নয়। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে আরো পথ পাড়ি দিতে হবে। আরো ২/৩টা নির্বাচন করতে হবে। আমেরিকার নিজের গণতন্ত্রই ত্রুটিমুক্ত নয়। আমাদের কি গণতন্ত্র শেখাবে? ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব বিষয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অটুট থাকবে। বন্ধুত্ব থাকবে, লেনদেন থাকবে। কিছু কিছু বিষয়ে ভিন্নমত থাকতে পারে, সেটা বন্ধুত্বেরই অংশ। বিএনপিসহ ৩৬ দলের এক দফা আন্দোলন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আন্দোলন তো এখনো শুরু হয়নি। শুরু হতে হতে কয় দল কেটে পড়ে, কয় দল শেষ পর্যন্ত থাকে- সেটা অবশ্য দেখার বিষয়।
এই ৩৬ দলের মধ্য এখন দরকষাকষি চলছে আন্দোলন সফল হলে ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে। এই আন্দোলেনর পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটা দেখার বিষয়। রাজনীতির বিষয় রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে। তবে এতে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে উদ্ভূত পরিস্থিতি বলে দিবে করণীয় কি হবে। জনগণের জানমাল রক্ষায় আমরা মাঠে, রাজপথে সতর্ক অবস্থানে আছি। নির্বাচন পর্যন্ত শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি আছে। এ সময় চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করতে ও নতুন করে কোনো প্রকল্প না নিতে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
